বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমরা অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে আজকে এই মহান দিবসে, যেদিন আমাদের সমগ্র জাতি এই দিবসকে স্মরণ করছে তখন আমরা এটা বলতে বাধ্য হচ্ছি, আজকে দেশে গণতন্ত্র নেই, আজকে দেশের মানুষের অধিকার হরণ করা হয়েছে এবং আইনের শাসন নেই। এখানে কোনো ন্যায়বিচার নেই। আমরা এই গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনবার জন্যে, দেশনেত্রীকে মুক্ত করবার জন্য আজকের এই দিনে আমরা শপথ নিচ্ছি যে, এদেশে ইনশাআল্লাহ গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠা করব এবং দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করব ইনশাআল্লাহ। শুক্রবার সকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ভাষা শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ নিবেদনের পর সাংবাদিকদের কাছে দেশের বর্তমান অবস্থা তুলে ধরতে গিয়ে বিএনপি মহাসচিব একথা বলেন।
দলের কারাবন্দি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল বলেন, দুর্ভাগ্য আমাদের যে গণতান্ত্রিক চেতনার ওপর ভিত্তি করে এই রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলো, সেই গণতান্ত্রিক চেতনার ওপর ভিত্তি করে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের যিনি মাতা যিনি সারাজীবনই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য সংগ্রাম করেছেন সেই দেশনেত্রীকে বেগম খালেদা জিয়াকে আজকে অন্যায়ভাবে, বেআইনিভাবে সাজা দিয়ে তাকে কারাগারে আটক করে রাখা হয়েছে। এদেশের সংবিধান অনুযায়ী যা তার ন্যূনতম প্রাপ্য জামিন, সেই জামিনও তাকে দেয়া হচ্ছে না।
ভাষা আন্দোলনের পটভূমি তুলে ধরে তিনি বলেন, এই ভাষা আন্দোলনের উপর ভিত্তি করে আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছি, স্বাধীন একটি ভূখন্ড তৈরি হয়েছে, আমরা একটি পতাকা পেয়েছি। দুর্ভাগ্যের বিষয় যে চেতনাকে ভিত্তি করে সেদিন বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন হয়েছিলো, স্বাধীনতা যুদ্ধ হয়েছিলো, মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিলো, সেই গণতান্ত্রিক চেতনা আজকে ৬৮ বছর পরেও বর্তমান দখলদার সরকার যারা জনগণের সমস্ত অধিকার হরণ করে, ভোটের যে অধিকার তাকে হরণ করে, তাদের বেঁচে থাকবার যে অধিকার তাকে হরণ করে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করে দিয়ে একদলীয় একটি রাষ্ট্র ব্যবস্থা তারা তৈরি করবার জন্য সবরকমের অপকৌশল করছে।
এর আগে শুক্রবার সকাল সাড়ে ৬টায় বলাকা সিনেমা হলের কাছে সমবেত হয়ে বিএনপি মহাসচিবের নেতৃত্বে নেতা-কর্মীরা প্রথমে আজিমপুর কবরাস্থানে ভাষা শহীদদের কবর জিয়ারত করেন। এরপর প্রভাত ফেরী করে সকাল সাড়ে ৮টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এসে পুস্পমাল্য অর্পণ করে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এ সময় দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভুঁইয়া, আবদুস সালাম, হাবিবুর রহমান হাবিব, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, কেন্দ্রীয় নেতা শ্যামা ওবায়েদ, মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজ, শামীমুর রহমান শামীম, সেলিম রেজা হাবিব, যুবদলের সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন- ড্যাবের অধ্যাপক হারুন আল রশিদ, অধ্যাপক আব্দুস সালাম, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, গোলাম সরোয়ার, জাসাসের সালাউদ্দিন ভুঁইয়া শিশির, শায়রুল কবির খান, জাকির হোসেন রোকন এবং সদ্য সমাপ্ত ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ধানের শীষের প্রার্থী তাবিথ আউয়াল ও ইশরাক হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নেতা অধ্যাপক এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, অধ্যাপক মোর্শেদ হাসান খান, অধ্যাপক লুৎফর রহমান, অধ্যাপক ছিদ্দিকুর রহমান খানসহ বিএনপির ও অঙ্গসংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।