বরিশাল সিটি করপোরেশন (বিসিসি) নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থীর তিন কর্মীকে কুপিয়ে জখমের অভিযোগে মহানগর ছাত্রলীগের আহ্বায়ক রইজ আহমেদ মান্নাসহ ১০ জনকে আটক করেছে পুলিশ।
রোববার (১৪ মে) দিনগত রাতে নগরীর হাসপাতাল রোড এলাকা থেকে তাদের আটক করে বরিশাল মেট্রোপলিটন কাউনিয়া থানা পুলিশ। অভিযান পরিচালনাকারী এসআই সাইদুল হক রাত সোয়া ২টায় এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তবে তাৎক্ষণিকভাবে আটক হওয়া বাকি ৯ জনের নাম জানাতে পারেননি তিনি। আটককৃতরা সবাই ছাত্রলীগের নেতাকর্মী এবং বর্তমান মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর অনুসারী বলে জানা গেছে।
কাউনিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ আবদুর রহমান মুকুল জানান, রোববার রাত ৮টার দিকে নগরীর কাউনিয়া ২ নম্বর ওয়ার্ডের কালা খান বাড়ির সামনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী খোকন সেরনিয়াবাতের তিন কর্মীকে কুপিয়ে জখম করা হয়। এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ পাওয়া গেছে মহানগর ছাত্রলীগের আহ্বায়ক রইজ আহমেদ মান্না ও তার বাহিনীর বিরুদ্ধে।
হামলায় আহত হয়েছেন নগরীর ৮ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সাবেক সম্পাদক আব্দুল হালিম, জাহিদ ভুইয়া ও মনা আহমেদ। আহতরা নগরীর বাজার রোডের বাসিন্দা।
আহতদের অভিযোগ, রোববার রাতে কাউনিয়া শ্মশানে তাদের বন্ধুর লাশ দাহ শেষে ফেরার পথে মান্নাসহ ১০০-১৫০ জন ধারালো অস্ত্র নিয়ে তাদের উপর হামলা চালায়। এসময় অভিযুক্তরা তিনজনকে এলোপাথারী কুপিয়ে জখম করে। পরে স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।
আহত মনার দাবি, খোকন সেরনিয়াবাত দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার পর থেকেই তারা নৌকার পক্ষে কাজ করছেন। এর জের ধরে তাদেরকে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে।
রাতে কাউনিয়া থানার ওসি আব্দুর রহমান মুকুল বলেন, মান্নাসহ ১০ জনকে আটক করা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত মামলা হয়নি। মামলার প্রস্তুতি চলছে।
নৌকার নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য লস্কর নুরুল বলেন, ঘটনা শুনেছি। এ ঘটনায় অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আটক মান্না সাংবাদিকের বলেন, আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে। গত পাঁচ দিন ধরে আমি সিসি ক্যামেরার আওতাভুক্ত ছিলাম। ঘটনার সময়ের সিসি ক্যামেরা চেক করলে বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যাবে।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার সাইফুল ইসলাম বলেন, ঘটনা ঘটেছে। এখনও নির্বাচনী কোনো কার্যক্রম শুরু হয়নি। যারাই জড়িত থাকুক না কেন কঠোর হাতে দমন করা হবে। আমি সেই নির্দেশনা দিয়েছি।
এর আগে গত ৬ মে রাত পৌনে একটায় বরিশাল সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীর পক্ষে মিছিল করায় দুই কর্মীকে মান্নার নেতৃত্বে প্রাণনাশের হুমকি দেয়ার অভিযোগ ওঠে। এই ঘটনায় কাউনিয়া থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।
এছাড়া গত ৭ মে কাউনিয়া থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন নগরীর ২ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের কর্মী মো. সোহাগ। জিডিতে মান্না ও তার ভাইসহ ১৭ জনের নামধারীসহ অজ্ঞাতনামা আরো ১৫ জনের বিরুদ্ধে আগ্নেয়াস্ত্র ও ধারালো অস্ত্র ঠেকিয়ে হত্যার হুমকির অভিযোগ করা হয়।