রাশিয়ার ভাড়াটে যোদ্ধা বাহিনী ‘ওয়াগনার গ্রুপের’ বিরুদ্ধে বিশ্বাসঘাতকতার যে অভিযোগ করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন তা অস্বীকার করেছে বাহিনীটির প্রধান ইয়েভজেনি প্রিগোঝিন।
এ বাহিনীটি ইউক্রেন থেকে সরে গিয়ে এখন রাশিয়ান শহর রোস্তভ-অন-ডনে প্রবেশ করেছে এবং শহরটির নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। সেইসাথে বাহিনীটি হুঁশিয়ারী উচ্চারণ করেছে যে তাদেরকে যারাই প্রতিরোধের চেষ্টা করবে তাদেরই প্রতিহত করা হবে।
শনিবার সামাজিক অ্যাপ টেলিগ্রামে এক অডিও বার্তায় ওয়াগনার প্রধান জানান, তার বাহিনী শহরটির বিমানবন্দরসহ সব সামরিক ব্যবস্থাপনার নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে।
রাশিয়ান সরকারি বার্তা সংস্থা তাসসহ বিভিন্ন অনলাইনে প্রচারিত ভিডিও ও ছবিতে দেখা যায়, সশস্ত্র লোকজন রোস্তভ শহরের প্রশাসনিক ভবনগুলোকে পাহারা দিচ্ছে এবং শহরের কেন্দ্রস্থলে ট্যাংক মোতায়েন রয়েছে।
এই অডিও বার্তায় তিনি আরো বলেন, রাশিয়ান জনগণের জন্য আমার ২৫ হাজার সদস্য সবাই মরতে প্রস্তুত।
এদিকে, শনিবার টেলিভিশনে প্রচারিত এক জরুরি বিবৃতিতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, ওয়াগনার গ্রুপের সশস্ত্র বিদ্রোহ একটা বিশ্বাসঘাতকতা। যারাই রাশিয়ান বাহিনীর বিরুদ্ধে অস্ত্র তুলবে তাদের বিচার করা হবে।
তিনি আরো বলেন, রাশিয়াকে রক্ষা সবকিছু করা হবে এবং রোস্তভের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কঠিন পদক্ষেপ নেয়া হবে।
ইউক্রেনে রাশিয়ার সেনাবাহিনীর পাশাপাশি যুদ্ধে লিপ্ত ছিল ভাড়াটে ওয়াগনার গ্রুপ। এর নেতা ৬২ বছর বয়সী ইয়েভজেনি প্রিগোঝিন বিভিন্ন সময় যুদ্ধের কৌশল নিয়ে রাশিয়ার সেনাবাহিনীর নেতৃত্বের সমালোচনা করে আসছেন।
শুক্রবার তিনি তার দলের সৈন্যদের উপর এক মারাত্মক মিসাইল হামলার অভিযোগ করেন রাশিয়ার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে। তবে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এই মিসাইল হামলার কথা অস্বীকার করে এবং প্রিগোঝিনকে সবরকম ‘অবৈধ কার্যক্রম’ বন্ধের আহ্বান জানায়।
তার বিরুদ্ধে সশস্ত্র বিদ্রোহের অভিযোগ এনেছে ক্রেমলিন। তবে কোনো সামরিক অভ্যুত্থানের কথা অস্বীকার করেছেন ওয়াগনার দলনেতা।
শনিবার সকালে অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, ওয়াগনারের সৈন্যরা রাশিয়ার শহর রোস্তভ-অন-ডনে প্রবেশ করছে। তবে এই ভিডিও সত্যতা যাচাই সম্ভব হয়নি।
আরেক ভিডিওতে দেখা যায়, সশস্ত্র সৈন্যরা এক সরকারি ভবন ঘিরে রেখেছে এবং দুটি ট্যাংক থেকে অস্ত্র তাক করে রাখা হয়েছে। রয়টার্স বলছে, এটি পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স ভবন।
উল্লেখ্য, ইউক্রেনের গুরুত্বপূর্ণ শহর বাখমুত দখলে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল এই ওয়াগনার গ্রুপ।
সূত্র : আলজাজিরা, রয়টার্স ও বিবিসি