মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৫১ পূর্বাহ্ন

জিয়া স্বাধীনতার ঘোষক প্রমাণে আদালতের রায়ের প্রয়োজন নাই : রিজভী

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : বুধবার, ১১ মার্চ, ২০২০
  • ২৪৯ বার

যে যতো কথাই বলুক না কেন বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। এটা প্রমাণ করতে আদালতের রায়ের প্রয়োজন হয় না। বুধবার সকালে বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেছেন।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অবিরাম স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান সম্পর্কে কুৎসা ও মিথ্যাচার করে চলছেন। জিয়াউর রহমান সম্পর্কে অবমাননাকর উক্তি করে তিনি উল্লসিত বোধ করেন। তিনি গত ৭ মার্চ আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আওয়ামী লীগের আলোচনা সভায় বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষককে হেয় প্রতিপন্ন করতে গিয়ে বলেছেন, ‘স্বাধীনতার ঘোষক যাকে সাজানো হয়েছে, সে সরকারের ৪০০ টাকা বেতনের কর্মচারী ছিল। কোথাকার কোন মেজর এসে বাঁশিতে ফুঁ দিল আর বাংলাদেশ স্বাধীন হয়ে গেলো, এটা কি কখনো সম্ভব? কোনো মেজরের বাঁশির ফুঁতে দেশে যুদ্ধ শুরু হয়নি বা দেশ স্বাধীন হয়নি।’

রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব যখন স্বাধীনতা ঘোষণা দিতে ব্যর্থ হয়েছে সেখানে একটি স্বাধীন দেশ প্রতিষ্ঠা করার দুঃসাধ্য কাজটি করতে এগিয়ে এসেছিলেন ৩৬ বছরের তরুণ যুবক মেজর জিয়াউর রহমানই। যার টানে তিনি এ কঠিন কর্তব্যটি করলেন, তার নাম ‘দেশপ্রেম’ এবং ‘জনগণের প্রতি ভালোবাসা’। তিনি ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ জীবন বাজি রেখে দেশের স্বাধীনতা ঘোষণা না করলে আজকে দেশের ইতিহাস ভিন্ন হতে পারতো। মেজর জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণার ইতিহাস প্রমাণ করতে আদালতের রায়ের প্রয়োজন হয় না। এই ইতিহাস মুক্তিযুদ্ধে যারা সক্রিয় অংশগ্রহণ করেছিলেন ও নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তাদের অসংখ্য বইয়ে লিপিবদ্ধ রয়েছে, এই ইতিহাস মানুষের হৃদয়ে গ্রোথিত হয়ে আছে। এমনকি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বামী ড. ওয়াজদ মিয়া’র লেখা বইয়েও সেটির উল্লেখ আছে। প্রবাসী সরকারের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমদের কন্যা শারমিন আহমদ রচিত ‘নেতা ও পিতা’ বইয়েও স্বাধীনতার ঘোষকের কথা উল্লেখ আছে সেটি আপনি কীভাবে মুছে দেবেন?

তিনি বলেন, আমাদের ভুলে গেলে চলবে না, ‘৭১ এর বীরশ্রেষ্ঠ, বীর উত্তম, বীর মুক্তিযোদ্ধা কিংবা ৫২’র ভাষা আন্দোলনের অমর শহীদ আবদুস সালাম, রফিক, জব্বার, বরকতরা কেউ বিশাল বড় রাজনৈতিক নেতা ছিলেন না কিংবা তাদের কেউ লাখ লাখ টাকা বেতনের কর্মকর্তা ছিলেন না, তারপরও তাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধায় নুইয়ে পড়ে বাংলাদেশ। ইতিহাসে তাদের ভূমিকা নির্ধারণে কিংবা তাদের প্রতি শ্রদ্ধা আদায়ে র‌্যাবের ভয় কিংবা আদালতের রায়ের প্রয়োজন হয়নি। ইতিহাস তাদের অম্লান অবদানের কথা নির্ধারণ করে রেখেছে। জনগণ তাদের গ্রহণ করেছে। এটাই ইতিহাসের শক্তি। আমরা মনে করি, যতদিন বাংলাদেশ থাকবে, ইতিহাসে স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াও গভীর শ্রদ্ধায় বেঁচে থাকবেন জনগণের হৃদয়ে।

রিজভী বলেন, ১৯৭১ সালে মেজর জিয়াউর রহমান ৪০০ টাকার কর্মচারীই ছিলেন। সব ‘সেক্টর কমান্ডার’ আর ‘বীর উত্তম’রা তাই ছিলেন। বীরশ্রেষ্ঠরা অনেকে ছিলেন ২৫০ টাকার কর্মচারী। কিন্তু আমরা তাদের চিনি বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে। স্বাধীনতা যুদ্ধে এ দেশের জন্য সবচেয়ে বীরত্বপূর্ণ অবদান ছিল তাদের। শেখ হাসিনার পিতা শেখ মুজিবুর রহমান নিজে এ স্বীকৃতি দিয়ে গেছেন। বীরশ্রেষ্ঠ আর বীরোত্তম খেতাব তিনিই দিয়ে গেছেন তাদের। ৪০০ টাকা বেতনের মেজর জিয়া জীবন বাজি রেখে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে অস্ত্র হাতে যুদ্ধ শুরু করেছিলেন বলেই আপনারা আজ স্বাধীন দেশ পেয়েছেন। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান মিশে আছেন মানুষের হৃদয়ে-অন্তর জুড়ে। তাই যারা কটাক্ষ করে অপবাদ দিয়ে জাতিকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন তারা আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হবেন। ইতিহাসের চলমান গতিধারাকে কেউ যদি ক্ষমতা দেখিয়ে রুদ্ধ করতে চায় সেটি সাময়িকভাবে রুদ্ধ করা গেলেও ইতিহাসের গতিধারা অতীতেও কেউ পাল্টাতে পারেনি, ভবিষ্যতেও পারবে না।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা আবুল খায়ের ভূঁইয়া, খায়রুল খবির খোকন, অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com