বৃহস্পতিবার, ০৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০২:৩০ পূর্বাহ্ন

সমাবেশে বক্তব্য দেওয়ায় রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা, রিমান্ডে ইমান-ওয়াজির

এনবিডি নিউজ ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : সোমবার, ২১ আগস্ট, ২০২৩
  • ৩৯ বার

পাকিস্তানে গ্রেপ্তার বিখ্যাত মানবাধিকারকর্মী ও আইনজীবী ইমান মাজারি এবং সাবেক আইনপ্রণেতা আলী ওয়াজিরের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। আজ সোমবার ইসলামাদের সন্ত্রাসবিরোধী আদালতে এই রায় দেওয়া হয় বলে জানিয়েছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য ডন।

গতকাল রোববার সকালে ইমানকে ঘর তেকে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ। অভিযোগ রয়েছে, ওই সময় কোনো গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছিল না পুলিশের কাছে। এর আগের দিন শনিবার গ্রেপ্তার করা হয় আলী ওয়াজিরকে। দুজনের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী বিভাগের পুলিশ স্টেশন ও ইসলামাবাদের তারনোল পুলিশ স্টেশনে এফআইআর করা হয়েছে।

পাশতুন তাহাফুজ মুভমেন্টের সমাবেশে অংশ নিয়েছিলেন ইমান ও ওয়াজির। দুজনই সেখানে বক্তব্য দেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, ইমান ও আলী দুজনই সেনাবাহিনীবিরোধী বক্তব্য দেন। সমাবেশের ঠিক দুই দিন পরেই তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গতকাল দুজনকে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ইহতাশাম আলম খানের আদালতে হাজির করা হয়। তদন্তকারী কর্মকর্তা রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ এনে অ্যান্টি-টেরোরিজম অ্যাক্ট, ১৯৯৭ এর আওতায় দুজনের ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। বিচারক এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আজ সোমবার আবার আদালতের হাজিরের নির্দেশ দেন।

আজ সন্ত্রাসবিরোধী (এটিসি) বিচারক আবুল হাসনাত জুলকারনাইনের আদালতে হাজির করে ইমান ও ওয়াজিরকে। শুনানিতে উপস্থিত ছিল ইমানের আইনজীবীর দল। তার নেতৃত্ব দেন জৈনব জানজুয়া। তিনি বলেন, পুলিশ ইতোমধ্যে এক দিনের রিমান্ড পেয়েছে। কিন্তু কোনো তথ্য পায়নি। তার দাবি, কর্মকর্তারা ইমানের ব্যাপারে কোনো তদন্ত না করেই পদক্ষেপ নিয়েছে।

জৈনব বলেন, ‘ইমান মাজারি পালিয়ে যাচ্ছেন না, তিনি এখানেই আছেন। কিন্তু কর্তৃপক্ষ তার মোবাইল ও ল্যাপটপ কেড়ে নিয়েছে। ইমানের পুলিশি হেফাজতে থাকার প্রয়োজন নেই, তাকে জামিন দেওয়া হোক।’

জৈনব প্রশ্ন তোলেন, ইমান মাজারির বিরুদ্ধে আসলে কী অভিযোগ আনা হয়েছে? সেমসয় সরকারি কৌঁসুলি জবাব দেন, ইসলামাবাদের এক র‌্যালিতে রাষ্ট্রবিরোধী বক্তব্য দিয়েছেন ইমান।

 

তিনি আরও জানান, ২০২২ সালেও এমন একটি অভিযোগ এসেছিল। ইমানের পুলিশি  হেফাজতে থাকা প্রয়োজন এবং তাদের মাধ্যমে আরও অপরাধীকে খুঁজে বের করতে পারবে পুলিশ।

জৈনব প্রশ্ন করেন, পুলিশ কেন এখনো কোনো প্রমাণ হাজির করতে পারেনি। তার বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আছে। তার ল্যাপটপ ও ফোন পুলিশের কাছে আছে। তাহলে তার পুলিশি হেফাজতে থাকার দরকারটা কী? আপনারা আসলে ইমানকে ‘সন্ত্রাসী‘ প্রমাণ করতে চাইছেন।

জৈনব আরও বলেন, ইমানকে রাতের কাপড় পরা অবস্থায় টেনে ঘর তেকে বের করে আনা হয় এবং এই পোশাকেই আদালতের আনা হয়। পুলিশ সম্ভবত ভুলে গেছেন তাদেরও বাড়িতে মা-বোন রয়েছেন।

সরকারি কৌঁসুলি জানান, কোনো সংস্থার প্রধানের সমালোচনা করা আসলে সেই সংস্থারই সমালোচনা করা। ইমান ও ওয়াজিরের ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন তিনি।

শুনানির একপর্যায়ে আলী ওয়াজির বলেন, ‘আমরা যখন এই সমাবেশের আয়োজন করি, তখন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পক্ষ থেকে ফোন দিয়ে জানানো হয়, এটি আয়োজন করা যাবে না। আমি জানাই যে, আমরা চাই আমাদের কণ্ঠ ইসলামাবাদ পর্যন্ত পৌঁছাক। তখন সরকার আমাদের তিনটি বিকল্প স্থানের কথা বলে। কিন্তু আমরা ইসলামাবাদে আয়োজনের সিদ্ধান্তে অটল থাকি।’

সেই সমাবেশে ভুল কিছু বলা হয়নি বলেও দাবি করেন আলী ওয়াজির। দুই পক্ষের শুনানি শেষে ওয়াজির ও ইমানের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com