‘রাষ্ট্রীয় অর্থ লোপাট করে `দলছুটদের’ দিয়ে সরকার নতুন দল বানাচ্ছে’ বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
শুক্রবার বিকেলে এক ভার্চুয়াল সংবাদ ব্রিফিংয়ে তিনি এই অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, ‘জনপ্রিয় রাজনৈতিক দল কখনো অন্য কোনো রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের ভাগিয়ে নেয় না। গ্রাম্য মোড়ল, গ্রাম টাউট, বাজে লোক তারা এসব কাজ করে… অন্য মানুষের বাড়ি থেকে লোক ভাগিয়ে নেয়… সেই কাজ এ সরকার করছে।’
রিজভী বলেন, ‘সব সময় সর্বকালের এই স্বৈরাচারি জাতির কাঁধের ওপর চেপে বসে তখন এই ধরনের প্রবণতাগুলোই দেখা দেয়, এ সরকারও সেটাই করছে। এটা তো ঘৃণ্য কাজ, কোনো ভদ্রলোকে এই কাজ করতে পারে না।’
তিনি বলেন, আজকে দেশের প্রধানমন্ত্রী অনেক কথা বলেন মার্কিনকে নিয়ে, নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র কথা বলবে কেন। কিন্তু মার্কিনে তো গণতন্ত্র, গণমাধ্যম, কথা বলার স্বাধীনতা আছে, তারা তো এগুলো নিয়ে কাজ করে। এদেশে তো কিছুই নেই। গণতন্ত্রকে একবারের হত্যা করা হয়েছে একদলীয় নির্বাচনের মাধ্যমে।
ক্রিকেট নিয়ে পার্শ্ববর্তী দেশ একটি পত্রিকা নিউজ করেছে, ‘তাদের পরাজয়ে আমরা উল্লাস করেছি অথচ আমরা স্বাধীনতা এনে দিয়েছি বাংলাদেশের’ এমনটি জানিয়ে রিজভী বলেন, ভারত সহযোগিতা করেছে, সত্য। আর কতদিন কৃতজ্ঞতা দেখাতে হবে। এ দেশে এক চেটিয়ে বাণিজ্য করছে ভারত। যতটা রেমিটেন্স নিয়ে যায় তার এক শতাংশ আমরা আনতে পারি না। আর আমাদের পণ্য ঢুকতে গেলে হাজারো বাধা তাদের। পৃথিবীর সবচেয়ে রক্তাত্ব সীমান্ত হচ্ছে ভারত-বাংলাদেশের সীমান্ত। কি কারণে বাংলাদেশের মানুষ ক্ষুব্ধ হয়ে উঠছে ভারতের বিরুদ্ধে, এটি তো ভারতের যারা পলিসি মেকার আছেন, গুরুজন আছেন, তারা তো পর্যালোচনা করে দেখতে পারেন। কেন আজকে বাংলাদেশের মানুষ ভারত ক্রিকেট হেরে গেলে উল্লাস করছে, কারণটা কি?
‘সারাদেশে র্যাবের ৪২৮টি কেন্দ্র কেন’
রিজভী বলেন, ‘সামনে একতরফা নির্বাচনের যে মাস্টার প্ল্যান এ সরকার করেছে, সেই মাস্টার প্ল্যানকে বাস্তবায়ন করার জন্য তারা নেতা-কর্মীদের বেপরোয়াভাবে গ্রেফতার করছে, যে গ্রেফতারি অভিযান চলছে বৈশাখী ঝড়ের মতো সেই অভিযানটা তারা অব্যাহত রাখবে। সেই কারণেই আজকে র্যাবের ৪২৮টি কেন্দ্র করা হয়েছে সারা দেশে।’
শুক্রবার র্যাব কর্তৃক বিএনপি সহ-স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা: রফিকুল ইসলাম বাচ্চুর গ্রেফতার হওয়ার ঘটনা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘একজন অভিজ্ঞ সিনিয়র চিকিৎসক তিনি। আজকে সকালে পেশাজীবীদের একটি অনুষ্ঠান শেষে ডা: রফিকুল ইসলাম বাচ্চুকে গ্রেফতার করছে র্যাব। তাকে গ্রেফতারের যে দৃশ্য এটাই হচ্ছ বিষ্ময়কর। বাংলাদেশে এরা যদি আরো কয়েকদিন টিকে কোনো ভদ্রলোক বাংলাদেশে বাস করতে পারবে না।’
তিনি আরো বলেন, ‘রফিকুল ইসলাম বাচ্চুকে র্যাবের গ্রেফতারের আলোকচিত্রটি দেখুন। একজন সিনিয়র চিকিৎসক গ্রেফতারের পর দুই র্যাব সদস্য দুই পাশে। আমার প্রশ্ন হলো- তিনি একজন সুচিকিৎসক। আপনি তাকে গ্রেফতারের পর সম্মানের সাথে র্যাব কার্যালয়ে বসিয়ে রাখতে পারতেন। তার ছবি এমনভাবে তুলছে মনে হয় যে- দুর্ধর্ষ কোনো সন্ত্রাসী না কোনো দাগী চোর-ডাকাত। কী করে সম্মানিত মানুষের সম্মান হরণ করছে এই সরকার। আর যারা ক্যাসিনো গড়ে তুলেছেন, যারা একের পর এক টাকা লুট করেছে, নাম প্রকাশ হয়েছে। তারা এখন দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছেন। আমরা কোন দেশে বাস করছি। আমরা এই গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।’