বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলার রায় তৃতীয় দফা পিছেয়ে আগামী ২৪ জানুয়ারি ধার্য করেছেন আদালত।
আজ বৃহস্পতিবার এ মামলায় রায় ঘোষণার দিন ঠিক ছিল। কিন্তু এদিনও রায় প্রস্তুত না হওয়ায় ঢাকার ৬ নম্বর বিশেষ জজ মঞ্জুরুল ইমাম রায় ঘোষণার দিন পিছিয়ে দেন। এদিন রায় হবে না, তাই মির্জা আব্বাসকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করেনি কারা কর্তৃপক্ষ।
একই আদালত গত ২২ নভেম্বর মামলাটির যুক্তিতর্ক শুনানি পর রায় ঘোষণার জন্য ৩০ নভেম্বর প্রথম দিন ঠিক করেন। তবে সেদিন রায় প্রস্তুত না হওয়ায় ১২ ডিসেম্বর এবং সেদিনও তা প্রস্তুত না হওয়ায় পিছিয়ে ২৮ ডিসেম্বর রায়ের দিন ঠিক করে আদালত।
গত ৩১ অক্টোবর রাতে এ মামলায় রাজধানীর শাহজাহানপুরের বাসা থেকে গ্রেপ্তার হন মির্জা আব্বাস। পরদিন ১ নভেম্বর সিএমএম আদালত জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ড শেষে ৫ নভেম্বর তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। এরপর থেকে তিনি কারাগারে রয়েছেন।
এদিকে সম্পদের মামলার রায়ে বেকসুর খালাস পাবেন মর্মে দাবি করে মির্জা আব্বাসের আইনজীবী মহিউদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘আমরা মনে করি দুদকের অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে পারে নাই। আমরা আসামির পক্ষ থেকে সাফাই সাক্ষ্য দিয়ে প্রমাণ করেছি অভিযোগ মিথ্যা। আশা করি, আদালতে ন্যায়বিচার পাবো। ’
অন্যদিকে দুদকের পক্ষে প্রসিকিউটর মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর বলেন, ‘আমরা মনে করি আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে পেরেছি। আমরা আসামির সর্বোচ্চ সাজা প্রত্যাশা করছি।’
অবৈধ সম্পদের মামলায় আফরোজা আব্বাসের নামে ২০ কোটি ৭৪ লাখ ৪৭ হাজার ৮২৮ টাকার সম্পদ প্রকৃতপক্ষে তার স্বামী মির্জা আব্বাসের সহায়তায় ও মাধ্যমে অবৈধ উৎসের আয় থেকে অর্জিত বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
মির্জা আব্বাস ১৯৯১ থেকে ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত সংসদ সদস্য, মন্ত্রী ও ঢাকা সিটি করপোরেশনের মেয়র এবং ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ছিলেন। তিনি সংসদ সদস্য, মেয়র ও মন্ত্রী হওয়ার সুবাদে ঘুস ও দুর্নীতির মাধ্যমে ২০০৭ সালের ১৬ আগস্ট পর্যন্ত আফরোজা আব্বাসের নামে ওই টাকার সম্পদ অর্জন করেছেন।
দুদকের তদন্তে অবৈধ ওই সম্পদ হস্তান্তর, রূপান্তর ও অবস্থান গোপন করতে কৌশল অবলম্বন করার অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় তদন্ত কর্মকর্তা আফরোজা আব্বাস ও তার স্বামী মির্জা আব্বাসের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭(১) ধারা, দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় এবং মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০০৮; মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০০৯ ও মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪ ধারায় চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে।
২০১৯ সালের ৭ জুলাই রাজধানীর শাহজাহানপুর থানায় দুদকের সাবেক সহকারী পরিচালক ও অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা মো. সালাহউদ্দিন মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় ২০ কোটি ৭৬ লাখ ৯২ হাজার টাকার সম্পদের অভিযোগ আনা হয়েছিল।