জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেছেন, ‘আমার বিশ্বাস এই নির্বাচন গ্রহণযোগ্যতা পাবে না। কারণ সরকারের নিয়ন্ত্রণে নির্বাচন হয়েছে।’
আজ সোমবার দুপুরে রংপুর নগরীর স্কাইভিউ নিবাসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
জি এম কাদের বলেন, ‘আমরা নির্বাচনের দিন অসহায় ছিলাম। সকাল থেকেই বিভিন্ন আসনে সমস্যা নিয়ে কথা বলেছি। নির্বাচন কমিশনকে কিন্তু সমাধানের কথা বললেও সমাধান হয়নি। প্রিজাইডিং অফিসারসহ প্রশাসন তাদের পক্ষে কাজ করেছে। ঢাকা-১ আসনে জোর করে সিল মেরে সালমা ইসলামকে হারিয়ে দিয়েছে। কুমিল্লা-১ আসনে আমির হোসেন ভুইয়া, জামালপুর-৩ আসনে সামসুল ইসলাম লিপ্টন, নরসিংদী-২ আসনে রফিকুল ইসলাম, কক্সবাজার-৪, লালমনিরহাট-৩ জাহিদ হাসান, গাইবান্ধা-৩ আসনে মইনুল রাব্বী, নারায়নগঞ্জ-১ আসন, রংপুরের-৪ ও ৬ আসনে আমাদের লোককে মেরে সিল মেরে জোর করে নিয়েছে। আমরা অসহায় হয়ে গেছি। এইসব আসনে আমরা প্রশাসনের কিংবা নির্বাচন কমিশনের কোন সহযোগিতা পাইনি। প্রশাসন নিরপেক্ষ থাকলে আমরা এসব আসনে জয়ী হয়ে আসতাম।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা জোটগতভাবে নির্বাচনে অংশ নেইনি এই কথা আমরা অনেক আগে থেকেই বলছি। সরকার তাদের মিডিয়া দিয়ে জোটের কথা বলে বিভ্রান্ত ছড়িয়েছে। সরকার সমঝোতার কথা বলে, ২৬ আসনে নৌকার প্রার্থী প্রত্যাহার করে নিয়েছে। তবে সেই সব আসনে শক্তিশালী আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী দিয়ে, তাদের পক্ষে কাজ করেছে। আমরা এজন্যই বলেছি, আমরা কোন জোটে বা সমঝোতায় নির্বাচনে অংশ নেইনি।’
দল হিসেবে জাতীয় পার্টির অবস্থান এখন কি সাংবাদিকের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘জাতীয় পার্টি যেখানে ছিল সেখানেই আছে। আমাদের বিরুদ্ধে সবসময় ষড়যন্ত্র হয়, আমরা সেই ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে এগিয়ে যাবো ‘
জি এম কাদের বলেন, ‘নির্বাচনে অংশ নেওয়া ভুল কি শুদ্ধ এখনই এটি মূল্যায়ন করা যাবে না। সামনের দিনগুলো দেখতে হবে তারপরই আমরা সঠিকভাবে বুঝতে পারব। সার্বিকভাবে বাংলাদেশের নির্বাচন ভালো হয়নি। যেমন আশঙ্কা করেছিলাম সেটাই হয়েছে। সরকার যেখানে নিরপেক্ষ চেয়েছে সেখানে নিরপেক্ষ হয়েছে, সরকার যেখানে যাকে জিতাতে চেয়েছেন সেটিই করেছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘লোকে ভোট দেওয়ার সুযোগ পায়নি। যারা ভোট দিতে এসেছে তাদেরকে অনেক সময় বাধাগ্রস্থ করা হয়েছে। পরবর্তীকালে যেসব জায়গায় ভোট হয়নি, ১০ থেকে ২০ শতাংশ ভোট পড়েছে, বাকি জায়গায় ব্যালটে ছিল মেরে নেওয়া হয়েছে। এটা আমাদের কাছে পরিষ্কার।’
এখন পর্যন্ত সংসদে যাব কি না এমন কোন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি বলে জানান তিনি।
এ সময় তার সঙ্গে আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান ও রংপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা, জাপা চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা আলাউদ্দিন মিয়াসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।