নাট্য সংগঠন জ্যামাইকা থিয়েটার ইনক’র উদ্যোগ নিউইয়র্কে আগামী ২৮ জানুয়ারী রোববার মঞ্চস্থ হবে নাটক ‘ময়নার চর’। আব্দুল হাই রচিত এবং গাবিন্দ দাসের নির্দেশনায় সিনেমাটিক এই নাটকটি পরিচালনা করেছেন কামরুল ইসলাম জয়। প্রবাসে বিনোদনের পাশাপাশি বাংলা শিল্প-সংস্কৃতির বিকাশ আর বাংলা নাটক জনপ্রিয় করার প্রত্যয়ে এই উদোগ নেয়া হয়েছে। খবর ইউএনএ’র।
জ্যামাইকার হিলসাইড এভিনিউস্থ একটি রেষ্টুরেন্টে গত ২০ জানুয়ারী শনিবার অপরাহ্নে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে জ্যামাইকা থিয়েটার ইনক’র কর্মকর্তারা উপরোক্ত কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয় যে, আগামী ২৮ জানুয়ারী রোববার সন্ধ্যায় জ্যামাইকার মেরী লুইস একাডেমীর মিলনায়তনে ‘ময়নার চর’ নাটক মঞ্চস্থ হবে। পাশাপাশি থাকবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠান শুরু হবে সন্ধ্যা ৬টায়।
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে সংক্ষিপ্ত লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন থিয়েটারের সভাপতি শেখ হায়দার আলী। এরপর উপস্থিত সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন সংগঠনের প্রধান উপদেষ্টা বাবু চিত্তরঞ্জন সিংহ, সাধারণ সম্পাদক ফারহানা আমান নুপুর, অনুষ্ঠান আয়োজন কমিটির আহ্বায়ক মোহাম্মদ আখতার বাবুল, সদস্য সচিব ডা. নার্গিস রহমান ও পৃষ্ঠপোষক সুলতান বোখারী। সংবাদ সম্মেলনে জ্যামাইকা থিয়েটারের অন্যান্য কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের উত্তরে থিয়েটারের নেতৃবৃন্দ জানান, প্রবাসে মঞ্চ নাটকের দর্শক বাড়ছে। এটা ভালো লক্ষণ। সাম্প্রতিককালে নিউইয়র্কে মঞ্চস্থ হওয়া কয়েকটি নাটকে দর্শক গ্যালারী ছিলো পরিপূর্ন। নেতৃবৃন্দ বলেন, আমরাও সেই লক্ষ্যে কাজ করে চলেছি। তবে ভালো নাটক মঞ্চায়নের জন্য আরো পৃষ্ঠপোষকতা দরকার। এবং সন্তানদের নিয়ে অভিভাবকদের নাটক দেখা উচিৎ।
অপর এক প্রশ্নের উত্তরে তারা বলেন, প্রবাসে নাট্য চর্চা কঠিন কাজ। কেননা, অভিনয়কে পেশা হিসেবে গ্রহণ করা কারো পক্ষেই সম্ভব নয়। নিজের কাজ করে, পরিবার সামলে নাট্য চ্চঅ করতে হয়। ফলে অনেক অভিনয় শিল্পী চাইলেও নাট্য চর্চায় নিজেকে সম্পৃক্ত রাখতে পারেন না। এতে নতুন শিল্পীর সঙ্কট বাড়ছে।
সংবাদ সম্মেলনে শেখ হায়দার বলেন, সংগঠনটি বিনোদনমূলক, সাংস্কৃতিক ও নাট্য সংগঠন এবং অরাজনৈতিক সংগঠন। দেশের শিল্প-সংস্কৃতি প্রবাসে তুলে ধরাই আমাদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। অতীতে জ্যামাইকা থিয়েটার চারটি নাটক মঞ্চস্থ করেছে। বাবু চিত্তরঞ্জন সিংহ বলেন, আমরা মেইড ইন বাংলাদেশ, আমাদের সন্তানরা মেইড ইন বাংলাদেশ নয়। কিন্তু আমাদের দেশের শিল্প-সংস্কৃতি অনেক সুন্দর ও সমৃদ্ধ। তাই নতুন প্রজন্মকে দেশে শিল্প-সংস্কৃতি জানাতে হবে। যদিও বিষয়টি চ্যালেঞ্জের বিষয়।
আখতার বাবুল বলেন, নাটকের মাধ্যমে আমরা নতুন প্রজন্মের মাঝে দেশ, দেশের পরিবেশ আর কালচার তুলে ধরতে চাই। তারা নাটক দেখে দেশকে চিনবে, জানবে, বুঝবে বলেই আমাদের বিশ্বাস। এজন্য তিনি সন্তানদের সাথে নিয়ে নাটক দেখার জন্য অভিভাবকদের প্রতি আহ্বান জানান।
ডা. নার্গিস রহমান বলেন, হাসি-কান্না মিলে জীবন ভিত্তিক নাটক হচ্ছে ‘ময়নার চর’। নাটকটি দেখে দর্শকরা আনন্দ পাবেন, খুশি হবেন। তিনি বলেন, আমাদের নতুন প্রজন্মের কেউ কেউ আমেরিকান নাটক-সিনেমায় কাজ করতে শুরু করেছেন। এটা ভালো লক্ষণ। একদিন তারাও বাংলা নাটক নিয়ে কাজ করবে এবং ইংরেজীর পাশাপাশি বাংলা ডাবিং করার সুযোগ থাকবে। সুলতান বোখারী বলেন, দেশের শিল্প-সংস্কৃতিকে নাটকের মাধ্যমে তুলে ধরা কঠিন কাজ। তারপরও প্রবাসে নাটকের চর্চা চলছে। এই চর্চাকে এগিয়ে নিতে পৃষ্ঠপোষকতা দরকার। ভালো নাটক হলে দেখার মতো দর্শকও রয়েছে।