শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:০৮ অপরাহ্ন

ড. ইউনূস ট্রিলজি, পাগল হতে বসেছি

বিডি ডেইলি অনলাইন ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : শুক্রবার, ১ মার্চ, ২০২৪
  • ১০৭ বার

নিজের নির্বুদ্ধিতা ও পাগলামো নিয়ে আমার গর্বের শেষ নেই। আমার মধ্যে নির্বুদ্ধিতার পরিমাণ বেশি নাকি পাগলামো, তা নিয়ে নিজে যেমন সিদ্ধান্ত নিতে পারিনি, তদ্রƒপ আমার স্বজনরাও বিষয়টি নিয়ে ভারী বিপদে আছেন। হুটহাট সিদ্ধান্ত, নিজের লাভক্ষতির সাথে যুক্ত নয় অথবা দ্বীন-দুনিয়ার সাথে সম্পৃক্ত নয় এমন বিষয় নিয়ে চিন্তাভাবনা ও টুকটাক গবেষণা করতে গিয়ে জীবনে কত যে লঙ্কাকাণ্ড ঘটাই তা কেবল বিধাতাই জানেন। কুকুর কেন জিহ্বা বের করে চলাফেরা করে, বাদুর কেন রাতে ওড়ে, বিড়াল কেন পোষ মানে ইত্যাদি হাজারো বিষয় যা কি না ইতোমধ্যে বিজ্ঞান প্রায় নিষ্পত্তি করে ফেলেছে তা নিয়েও আমার আদিখ্যেতার শেষ নেই।

দেশের রাজনীতি, ইয়েমেনের যুদ্ধ, ফিলিস্তিনিদের ওপর বর্বরতার পাশাপাশি লন্ডন-আমেরিকার রাজা-বাদশাহ আমির-ওমরাহ নিয়ে যেমন চিন্তা করি তদ্রƒপ কবি আল মাহমুদ, রুদ্র মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ থেকে শুরু করে জীবনানন্দ দাশের কথাও খুব মনে পড়ে। গণস্বাস্থ্যের ডা: জাফরুল্লাহ, ব্র্যাকের ফজলে হাসান আবেদকে নিয়ে যেমন কিশোরবেলা থেকে ভাবছি, তেমনি যেদিন গ্রামীণ ব্যাংক নামটি শুনলাম সে দিন থেকে ড. মোহাম্মদ ইউনূস নামের পোকাটিও মাথার মধ্যে ঢুকে গেছে। আমি যাদের নিয়ে ভাবি তারা সবাই ভিন্ন গোত্রের প্রাণী বা প্রকৃতি হলে তারা আমার আওতার বাইরে হয়ে থাকে। আর মানুষদের সম্পর্কে ভাবতে গিয়ে আমি প্রান্তিক জনগোষ্ঠী ও সমাজ সংসারে মহামানব-অতিমানব হিসেবে দেশ-বিদেশে স্বীকৃতি পাওয়া লোকগুলো নিয়েই ভাবতে পছন্দ করি এবং এ ক্ষেত্রে আমার জমানায় ড. ইউনূসের চেয়ে প্রসিদ্ধ বাঙালি অথবা বিশ্বমানব নেলসন ম্যান্ডেলা-ইয়াসির আরাফাত অথবা মোহাম্মদ আলী ক্লে ছাড়া অন্য কাউকে দেখিনি।

আমার জমানা বলতে যেদিন থেকে আমি বুঝতে ও জানতে শিখেছি এবং সেটি বোধ করি ১৯৭৮ সাল থেকে শুরু হয়েছিল। আমার চিন্তার মানুষগুলোকে আমি সাধারণত তাদের বৈশ্বিক কর্মকাণ্ড অর্থাৎ তারা যে কাজ করছেন তা দেশের সীমানা ছাড়িয়ে অন্য মহাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে কতটা উদ্দীপনা ছড়ায় তা দিয়ে মূল্যায়ন করি। দ্বিতীয়ত, তাদের মৃত্যুর পর তাদের কর্মগুলো কিভাবে মূল্যায়িত হবে এবং অনাগত দুনিয়া কেন এবং কিভাবে তাদের স্মরণ করবে এসব আজাইরা চিন্তা করে কত রাত যে নিদ্রাহীন কাটিয়েছি তা কেবল আমার পাশের লোকগুলোই জানেন। তো আমার এসব পাগলামোর জন্য হরহামেশা নানা দুর্ভোগ-দুর্দশা ঝক্কিঝামেলা ও ক্ষেত্রবিশেষ ভর্ৎসনা- কিংবা শাস্তিও আমাকে ভোগ করতে হয়েছিল; যেমনটি হয়েছিল ড. মো: ইউনূসের ক্ষেত্রে। ১৯৮০-৮১ সালের দিকে তাকে দেখতে যাওয়ার জন্য আমি বহু পথ হেঁটেছিলাম এবং স্কুল ফাঁকি দিয়ে অমন কর্মের জন্য শিক্ষক ও মুরব্বিদের বকুনি খেয়েছিলাম।

আমাদের প্রত্যন্ত অঞ্চলে তখনো বিজলি বাতি যায়নি। কোনো পাকা রাস্তা, পাকা বাড়ি কিংবা পাকা পায়খানা ছিল না। লুঙ্গি ও উদোম শরীরের পুরুষের সংখ্যা ছিল ৯০ শতাংশ। যারা একটু মর্দ প্রকৃতির বা নিজেদেরকে শক্তিশালী ভাবতেন তারা উদোম শরীরে লুঙ্গির পর কোমরে একখানি গামছা বাঁধতেন। একটু ভদ্রলোকেরা গেঞ্জি পরতেন আর অতি ভদ্রলোকেরা পাঞ্জাবি বা জামা বেশির ভাগ সময় কাঁধের ওপর ঝুলিয়ে রাখতেন। যাদের জুতো বা স্যান্ডেল ছিল তারাও খালি পায়ে হাঁটতেন এবং জুতো-স্যান্ডেল বগলদাবা করে চলতেন। কেবল গন্তব্যের কাছাকাছি হলে গায়ে জামা পরে, পা ধুয়ে জুতো-স্যান্ডেল পরে এবং কেশবিন্যাস করে ভদ্রলোক হওয়ার চেষ্টা করতেন। তো অমন একটি এলাকায় যখন গ্রামীণ ব্যাংক হলো এবং সেই ব্যাংকের ম্যানেজার প্যান্ট পরে, জুতা পায়ে সাইকেল চালিয়ে আমাদের মধ্যে হাজির হলেন তখন আমাদের অনেকেরই ভীমরতি শুরু হলো।

সঙ্গতিপন্ন পরিবারের লোকজন প্যান্ট বানানোর জন্য জেলা শহরে ছুটল। কেউ কেউ সাইকেল কেনার স্বপ্ন দেখল এবং বেশির ভাগ মানুষ অবাক বিস্ময়ে গ্রামীণ ব্যাংক কর্তাদের কর্মকাণ্ড দেখার জন্য লাইন ধরে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকল। গ্রাম্য মোড়লরা ভয় পেল, সুদি মহাজনরা দাঁতাল শুয়োরের মতো গজগজ শুরু করল আর আমপারা পড়া মোল্লারা কিয়ামত খুব কাছাকাছি বলে চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করল। মেয়েদেরকে গ্রামীণ ব্যাংক ঋণ দেবে এবং সেসব মেয়ে দলে দলে গ্রামীণ ব্যাংকের অফিসে আসছে এবং স্কুল-কলেজের ছেলেমেয়েদের মতো প্রকাশ্যে পিটি প্যারেড অর্থাৎ লেফট-রাইট করে প্রকাশ্যে শরীরচর্চা শুরু করে দিয়েছে যা অভাবী সমাজের ইজ্জতে নিদারুণ আঘাত করল। ফলে অভাব-দারিদ্র্য পেটের ক্ষুধা বনাম ইজ্জত-অজ্ঞতা ও ধর্মান্ধতার সাথে নিদারুণ এক যুদ্ধ চলল। প্রায় মাস ছয়েক যুদ্ধের পর পেটের ক্ষুধার কাছে সব কিছু হার মানল। আমাদের গ্রামে গ্রামীণ ব্যাংক টিকে গেল।

আমি যে সময়ের কথা বলছি, সেটি ১৯৮১ সালের কাহিনী, আর যে এলাকার কথা বলছি ওটার নাম রতনদি তালতলী ইউনিয়নের উলানিয়া গ্রাম। পটুয়াখালী জেলার গলাচিপা উপজেলার সাথে উলানিয়ার যে দূরত্ব ১৯৮১ সালে ছিল, তার চেয়ে কম দূরত্ব এখন ঢাকার সাথে চাঁদের অথবা মঙ্গল গ্রহের। সুতরাং গ্রামীণ ব্যাংকের আলোতে উলানিয়া যেভাবে আলোকময় হলো তাতে করে স্বপ্নহীন মানুষ স্বপ্ন পেল, কর্মহীনরা কর্ম আর অলস মস্তিষ্ক ও শরীরসর্বস্ব মানুষ পেল উৎসাহ-উদ্দীপনা, প্রযুক্তি ও বেঁচে থাকার অর্থনৈতিক পরিকল্পনা। ফলে জোয়ার-ভাটার উলানিয়া গ্রামের জীবনযুদ্ধের যে নবজোয়ার শুরু হলো তাতে ভাটার কোনো লক্ষণ ছিল না, মাত্র এক বছরের মাথায় পুরো জনপদ জেগে উঠল। ফলে ড. ইউনূস যখন উলানিয়া এলেন তখন আমার মতো পাগল কিশোরদের আবদ্ধ রাখার কোনো শিকল কারো কাছে ছিল না।

১৯৮১ সালের উলানিয়া থেকে ড. ইউসূনকে নিয়ে আমার যে পাগলামো শুরু হয়েছে তা এখনো থামেনি বরং বেড়েছে। ড. ইউনূসকে প্রথম দেখে খুব করে হেসেছিলাম। তিনি প্রথমত শুদ্ধ ভাষায় কথা বলার চেষ্টা করছিলেন এবং মাঝে মধ্যে আনকোরা আঞ্চলিক ভাষায় দু-চারটি শব্দ বলে মুখ্যুসুখ্য মানুষের অন্তরে ঢোকার চেষ্টা করছিলেন। আমাদের বরিশাল অঞ্চলের মানুষ এক ধরনের ঠেলা দেয়া উচ্চারণে আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলে। আশির দশকে বরিশালের প্রত্যন্ত অঞ্চলে শুদ্ধ ভাষা বা প্রমিত বাংলা ছিল অদ্ভুত ভাষা আর ইংরেজি ছিল একেবারে আনকোরা। সুতরাং ড. ইউনূসের কথা শুনে আমরা হেসেছিলাম কিন্তু গ্রামীণ ব্যাংকের সদস্য-সদস্যারা হাসেননি। তারা নিরক্ষর হওয়া সত্ত্বেও ড. ইউনূসের কথা হৃদয়ঙ্গম করেছিলেন।

ড. ইউনূসকে নিয়ে উল্লিখিত ঘটনার পর বহু বছর কেটেছে। আমার বয়স বেড়েছে কিন্তু ড. ইউনূসের বয়স কমেছে। আমি সর্বোচ্চ চেষ্টা করে কেবল নিজের ও পরিবারের বেঁচে থাকার লড়াইয়ে জয়-পরাজয়ের খেলায় বহু দীর্ঘশ্বাস, বহু ব্যর্থতা ও অশ্রুজলে সিক্ত হয়ে যখন ড. ইউনূসের দিকে তাকিয়েছি তখন লোকটিকে কেবল হাসতে দেখেছি। মাঝে মধ্যে ভেবেছি, আচ্ছা উনি কি কাঁদতে পারেন না। তার জীবনে কি কান্নার কোনো উপাখ্যান নেই অথবা তিনি কি মানুষ নাকি অন্য কিছু। ড. ইউনূসের হাসিমাখা ছবি বিশ্বজয়ের নিত্যনতুন রেকর্ড এবং খ্যাতি জনপ্রিয়তা সম্মান-মর্যাদা স্বীকৃতি ও সফলতার স্বর্ণশিখরগুলো দেখার পর নিজের কান্না- কবিগুরু, জাতীয় কবি, শেলি বায়রন কিটস প্রমুখের কান্নার গান কবিতা অথবা বিশ্বজয়ীদের বেদনা ও হতাশা নিয়ে যখন আমি চিন্তা-ভাবনা করছিলাম ঠিক সেই সময়ে দেখলাম ড. ইউনূস কাঁদছেন। তার চিরায়ত অমলিন হাসি বিলীন হয়েছে এবং বিশ্ব ইতিহাসে মহাকালের অমরত্বের মাইলফলকে তিনি হতাশা ক্ষোভ বেদনার মাল্য পরিধান করে বাঙালি জাতির ঐতিহ্যে ফিরে এসেছেন।

ড. ইউনূসের কান্না দেখে আমার নির্বুদ্ধিতা ও পাগলামোতে নতুন হাওয়া লেগেছে। প্রথমত, আমার খুব হাসি পাচ্ছে। দ্বিতীয়ত, বাংলার লোক যে চন্দ্র বিজয় করতে পারেনি এবং দিন শেষে তাকে যে ভ্যাদভ্যাদা ক্যাদা ও কলঙ্কের কালিমা গায়ে মেখে কবরে যেতে হয় তা ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের হাল হকিকতে নতুন করে প্রমাণিত হলো। চোর-বাটপাড় টাউটে ভরপুর বাংলাদেশে তিনি শ্বেতশুভ্র পুতপবিত্র হয়ে ঘুরবেন সেটি তো সম্ভব নয়। ব্যাংক ডাকাত লুটেরা টাকা পাচারকারীদের সর্দার সর্দারণীরা সঙ্গত কারণে তাদের মতো চোর-ডাকাত খুঁজবেন এবং ভালো মানুষদেরকে চোর-ডাকাত বানানোর চেষ্টা করবেন- এই সত্য যে ড. ইউনূস বুঝতে পেরেছেন তা দেখার পর তৃপ্তিতে আমার মন ভরে গেছে। বাংলাদেশে যারা প্রতিনিয়ত ঝাড়– পিছার আদর সোহাগ পান তারা তো ফুলের মালা দেখলে গর্জে উঠবেন এমন বাস্তবতায় ড. ইউনূস যেভাবে ঝাড়–কে বরণ করে নিয়েছেন তা দেখে আবেগে আমার কান্দন এসে গেছে।

আলোচনার শুরুতেই বলেছি, পাগলামি ও নির্বুদ্ধিতায় আমার বহু বছরের অভিজ্ঞতা রয়েছে। পাগলের কোনো জাত নেই। কিন্তু নির্বোধদের জাত আছে। নির্বোধদের কথা বলা ও প্রশ্ন করার ধরন দেখেই আপনি বুঝতে পারবেন লোকটি কত বড় আহম্মক। তদ্রƒপ ড. ইউনূস সম্পর্কে আমার মনে যেসব প্রশ্ন আসছে তার কয়েকটি নমুনা পেশ করলাম। প্রথমত, বাংলাদেশ ব্যাংকসহ পুরো দেশ যেখানে সুদের ওপর ভাসছে, সেখানে ড. ইউনূস কেন একা সুদখোর হবেন। দ্বিতীয়ত, তিনি কেন গ্রামীণ ব্যাংকে সরকারের শেয়ার রাখলেন। তিনি কেন ব্র্যাক ব্যাংক বা অন্যান্য ব্যাংকের মতো করে নিজের শতভাগ মালিকানায় ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত করলেন না। তিনি তো ইচ্ছে করলে ছয়-সাতটি ব্যাংক দখল করতে পারতেন। দু-চারটি ব্যাংক তৈরি করতে পারতেন অথবা দেশের ব্যাংকগুলো থেকে কয়েক লাখ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে পুরো ব্যাংকিং ব্যবস্থাকে জিম্মি করতে পারতেন।

তিনি তার সহায়-সম্পত্তি কেন ট্রাস্ট করতে গেলেন। কেন তার নিজ নামে বাড়ি-গাড়ি নেই। তার মৃত্যুর পর কেন তার স্ত্রী-কন্যা তার সম্পত্তি পাবেন না। তিনি তো ব্র্যাক, প্রশিকা-আশার মতো এনজিও তৈরি করে গ্রামীণ ব্যাংক, গ্রামীণ ট্রাস্টসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠান চালাতে পারতেন। কেন দেশের সব এনজিও ও ট্রাস্টকে আয়কর অব্যাহতি দেয়া হয় কিন্তু ড. ইউনূসকে পাকড়াও করা হয়। দেশের শত শত সরকারি প্রতিষ্ঠান বছরের পর বছর বন্ধ। চিনিকল-পাটকল-বস্ত্রকলের লাখ লাখ শ্রমিক লভ্যাংশ তো দূরের কথা বেতন-ভাতার জন্য সরকারের বিরুদ্ধে রাজপথে দাঁড়ালেই লাঠি গুলি টিয়ারশেলের আদর যত্নে প্রাণ নিয়ে ভোঁ দৌড় মারেন সেখানে ড. ইউনূসের কোম্পানির শ্রমিক ভাইদের প্রতি ওলি-আউলিয়াদের হামদর্দ দেখে আমার বুদ্ধি নাশ হওয়ার উপক্রম।

আমরা আজকের আলোচনার একদম শেষপ্রান্তে চলে এসেছি। এবার শিরোনাম প্রসঙ্গে কিছু বলে নিবন্ধের ইতি টানব। শিরোনামে ট্রিলজি শব্দের সাথে ড. ইউনূসের সম্পর্ক এবং ইউনূস ট্রিলজিতে কেন পাগল হতে বসেছি তা ব্যাখ্যা না করলে বিষয়টি অনেকের কাছে দুর্বোধ্য মনে হতে পারে। তিনটি সাহিত্যকর্ম যখন একত্রে উপস্থাপিত হয় তখন সেটিকে ট্রিলজি বলে। কর্মগুলো যদি পরস্পরবিরোধী হয় তবে ট্রিলজির কারণে অস্থিরতা সৃষ্টি হয় এবং ট্রিলজির কবলে পড়া ব্যক্তি পরিবার সমাজ ও রাষ্ট্র ধ্বংস হয়ে যায়। ড. ইউনূস সম্পর্কে ত্রিমাত্রিক ঘটনাপ্রবাহ যথা- তার জীবন কর্ম উদ্দেশ্য সফলতা বনাম তাকে ঘিরে দেশ-বিদেশে সুনাম-সুখ্যাতির সাথে পাল্লা দিয়ে মহল বিশেষের অপপ্রচার যে ট্রিলজি সৃষ্টি করেছে তার পরিণতি গ্রিক সাহিত্যের বিয়োগাত্মক নাটক ইডিপাসের চেয়েও ভয়ানক হতে পারে।

আমি যখন ড. ইউনূসের ট্রিলজি নিয়ে চিন্তা করি এবং হোয়াইট হাউজের জমকালো অনুষ্ঠানে মার্কিনি প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাকে দেখি ড. ইউনূসের গলায় আমেরিকার সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ ও সর্বোচ্চ জাতীয় পুরস্কারের মেডেল পরিয়ে দিতে তখন মনে হয় ওই মালা আমার গলায় পরানো হয়েছে এবং আমিই ড. ইউনূস। কিন্তু দেশের মাটিতে যখন দেখি ড. ইউনূসকে ঝাড়ু দিয়ে পেটানোর জন্য কিছু লোক ঝাড়– হাতে দাঁড়িয়ে আছে, তখন কেন আমি সাহস করে এগিয়ে গিয়ে বলতে পারি না- আমিই ড. ইউনূস! আমাকে পেটাও! আমার এই দ্বৈধতা বা দ্বিচারিতার কথা মনে হলে কেন যেন মনে হয় আমি পাগল হয়ে যাচ্ছি।

লেখক :

  • গোলাম মাওলা রনি

সাবেক সংসদ সদস্য

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com