সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৫৪ অপরাহ্ন

বঙ্গোপসাগরে বিমান ঘাঁটির বিনিময়ে সহজে ক্ষমতায় ফেরার প্রস্তাব দিয়েছিলেন এক শ্বেতাঙ্গ: প্রধানমন্ত্রী

বিডি ডেইলি অনলাইন ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ২৩ মে, ২০২৪
  • ৩২ বার

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার বলেছেন, বাংলাদেশের ভূখণ্ডে একটি বিদেশি বিমান ঘাঁটি নির্মাণের অনুমতি দেওয়ার বিনিময়ে একজন শ্বেতাঙ্গ ব্যক্তি তাকে ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে ঝামেলা ছাড়াই পুনরায় নির্বাচিত হওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন।

যুক্তরাষ্ট্রের নাম উল্লেখ না করে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বঙ্গোপসাগরে একটি শক্তিশালী দেশ ঘাঁটি বানাতে চায়। যা হতে দিচ্ছি না বলেই কিছু সমস্যা হচ্ছে। বিএনপি-জামায়াত জোটের অগ্নিসন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি পুনর্ব্যক্ত করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, যতই মুরুব্বি ধরুক, জ্বালাও-পোড়াও করলে রেহাই নেই।

বৃহস্পতিবার (২৩ মে) সন্ধ্যায় গণভবনে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের সূচনা বক্তব্যে শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।

২০০১ সালের নির্বাচনের আগে গ্যাস বিক্রির চুক্তিতে রাজি হননি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শক্তিশালী দেশটি (যুক্তরাষ্ট্র) আমাদের সেই সিদ্ধান্তকে ভালোভাবে নেয়নি। গ্যাস বিক্রিতে রাজি হইনি বলে ক্ষমতায় আসতে দেওয়া হয়নি। গ্যাস বিক্রির মুচলেকা দিয়ে ক্ষমতায় বসার মতো দৈন্যতায় ছিলাম না কখনও।

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশে এয়ার বেজ বানাতে দিলে, কারও কারও নির্বাচনে জিততে কোনো সমস্যা নেই- এমন প্রস্তাবও আমাকে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু রাজি হইনি আমি। বে অব বেঙ্গলে (বঙ্গোপসাগর) তারা (যুক্তরাষ্ট্র) ঘাঁটি বানাবে। ভারত মহাসগাগরের এই শান্তিপূর্ণ জায়গাটার ওপর তাদের নজর। এখানে বেজ বানিয়ে তারা কোথায় হামলা করতে চায়? আমি এটা করতে দিচ্ছি না বলেই খারাপ।

সরকারপ্রধান বলেন, চক্রান্ত এখনও চলমান রয়েছে। তবে জনগণ সঙ্গে রয়েছে। তারাই আমার সামনে চলার মূল শক্তি।

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, স্বাধীনতার পক্ষশক্তি ক্ষমতায় থাকলে দেশের উন্নয়ন হয়। সেটা গেল ১৫ বছরে প্রমাণিত হয়েছে। এরপরও শুনতে হয়, কথা বলার স্বাধীনতা নেই। কিন্তু সরকার তো কারও গলা টিপে ধরেনি?

পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট সপরিবারে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিয়োগান্তক ঘটনা তুলে ধরে তিনি বলেন, বিজয় ও স্বাধীনতার চেতনা নস্যাৎ করতেই ১৫ আগস্টের ঘটনা ঘটানো হয়। তারপর থেকেই দেশটা শুধু পেছাতে থাকে। সরকার যে জনগণের জন্য কাজ করে, কেবল আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলেই মানুষ এটা বুঝতে পারে।

শেখ হাসিনা বলেন, মুদ্রাস্ফীতি সব দেশের মতো বাংলাদেশেও হচ্ছে। একই কথা রিজার্ভেও। রিজার্ভ নিয়ে চিন্তার কিছু নেই। কেননা, আপৎকালীন খাদ্য মজুত রয়েছে। এত বেশি আলোচনার কারণে আজ প্রায় সবাই রিজার্ভ নিয়ে কথা বলেন। এই সতর্কতা দেশের জন্য ভালো।

সংকট নিরসনে উৎপাদনে মনোযোগী হতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করে তিনি বলেন, দেশে উৎপাদনে কোনো সংকট নেই। তবে ইনফ্লেশন কমানোটা চ্যালেঞ্জ।

এ প্রসঙ্গে সমবায়ের মাধ্যমে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় ধান-মাছ চাষ হচ্ছে জানিয়ে বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, সেখানে ছয়বিঘা জমি দিয়েছি আমি। সুইজারল্যান্ডে যাচ্ছে এখন শরীয়তপুরের সবজি। ভবিষ্যৎ উন্নয়ন পরিকন্না বাস্তবায়নে স্বাধীনতাবিরোধীদের চক্রান্ত অতিক্রম করেই এগিয়ে যাচ্ছি আমরা।

সব সময় সাধারণ ও নির্যাতিত মানুষের পাশে আছেন বলে জানিয়ে তিনি বলেন, রোহিঙ্গারা কবে ফেরত যাবে জানি না। প্রতিদিন সেখানে নতুন নতুন শিশু জন্মাচ্ছে। অপরাধ প্রবণতা বাড়ছে। মিয়ানমারের সঙ্গে যুদ্ধ ও সংঘাত করতে যাইনি আমরা। আলোচনা চালানো হচ্ছে। তবে মিয়ানমারের নিজেদেরই অবস্থা ভালো না।

১৪ দলীয় জোটের শীর্ষ নেত্রী শেখ হাসিনা জোটটিকে সক্রিয় ও ঐক্যবদ্ধ রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, ভবিষ্যতের করণীয় ঠিক করতে আলোচনা হবে ১৪ দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে।

সূচনা বক্তব্য শেষে প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে ১৪ দলের বৈঠক শুরু হয়। এ সময় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও ১৪ দলের সমন্বয়ক-মুখপাত্র আমির হোসেন আমু এবং সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ জোটের শরিক দলগুলোর শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com