করোনা উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে স্ত্রীকে ভর্তি করছেন স্বামী। ভর্তি করানোর সময় নিজের পূর্ণ ঠিকানাও দেন নি। চিকিৎসা চলাকালে ও খোঁজ নেয়নি । এরপর থেকে লাপাত্তা স্বামী। মোবাইল ফোন ও বন্ধ। শনিবার রাতে হাসপাতালেই মারা যাওয়ার পর লাশ নিতে আসেনি। পরে রোববার দুপুর স্থানীয় কাউন্সিলর লাশটি দাফনের ব্যবস্থা করেন। ঘটনাটি নারায়ণগঞ্জ শহরের খানপুর এলাকার।
জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। মৃত নারীর নাম লিপি আক্তার (২৩)। শনিবার রাত ৮টায় হাসপাতালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ থেকে পরিবারের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কাউকে পাওয়া যায়নি। পরবর্তীতে পুলিশের মাধ্যমে এবং স্থানীয় কাউন্সিলরকে জানানো হলে রোববার নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের সহায়তায় লাশ দাফন করা হয়।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, শনিবার (৯ মে) রাতে হাসপাতালের করোনা ইউনিটের আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় লিপি আক্তার (২৩) নামে এক নারীর। গত ২৯ এপ্রিল করোনার উপসর্গ নিয়ে নারায়ণগঞ্জ ৩শ’শয্যা হাসপাতালে ভর্তি হন লিপি আক্তার। ওইদিন তার নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য আইইডিসিআরে পাঠালেও ফলাফল পাওয়া যায়নি। এদিকে ৯ মে রাত সাড়ে ৭টার দিকে তিনি মারা যান। মৃত্যুর পর পুনরায় তার নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য হাসপাতালের ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। মৃত্যুর খবরটি তার স্বজনদের জানানো হলেও তারা আর কোনো খোঁজ নেননি। ভর্তি ফর্মে সম্পূর্ণ ঠিকানা উল্লেখ না করে কেবল চাষাঢ়া উল্লেখ করা হয়েছে। তার স্বামীর নাম ফাহিম হিসেবে উল্লেখ রয়েছে। তবে প্রায় চব্বিশ ঘন্টায়ও কেউ হাসপাতালে এসে যোগাযোগ করেননি। এমনকি ভর্তি ফর্মে দেয়া মোবাইল নম্বরটিও গত রাত থেকেই বন্ধ। পরে লাশ দাফনের ব্যবস্থা করে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন।
খানপুর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. সামসুদ্দোহা সঞ্চয় বলেন, গত রাতে (শনিবার) আইসোলেশন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই রোগী মারা যান। আমরা নিহতের স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছি কিন্তু তথ্যগত ত্রুটির কারণে তা সম্ভব হয়নি। শেষে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন ও সদর থানার সঙ্গে আমরা যোগাযোগ করি।
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন ১২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর শওকত হাশেম শকু জানান, শনিবার রাতে হাসপাতালে নারীর মৃত্যু হয়েছে বিষয়টি প্রশাসনিক ভাবে আমি জানতে পারি। পরবর্তীতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পরিবারের সাথে যোগাযোগ করলেও কাউকে না পাওয়ায়, সিটি করেপোরেশনের সহায়তায় লাশটি দাফন করা হয়। এনসিসির মেয়রের সাথে যোগাযোগ করে তার নির্দেশনা মতে অ্যাম্বুলেন্সে করে লাশটি মাসদাইরের সিটি করপোরেশনের কেন্দ্রীয় কবরস্থানে পাঠানো হয়। সেখানেই রোববার দাফনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।