যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা ফেডারেল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশনের (এফিবআই) প্রধান হচ্ছেন সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা কর্মকর্তা কাশ প্যাটেল। নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্রিস্টোফার ওয়েকে সরিয়ে কাশকে এ পদে বসানোর ইঙ্গিত দিয়েছেন।
আজ রবিবার বার্তা সংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদেন বলছে, মার্কিন নির্বাচনে ট্রাম্পের জয়ের খবর আসতে শুরু করার পর থেকেই বারবার আলোচনায় উঠে আসেন কাশ প্যাটেল।
উল্লেখ্য, ভারতীয় বংশোদ্ভূত ৪৪ বছর বয়সী কাশ প্যাটেলের জন্ম নিউ ইয়র্কে। তাঁর পরিবার পূর্ব আফ্রিকা থেকে কানাডার পথে গিয়েছিল আমেরিকায়। সেই থেকেই প্যাটেল পরিবারের বসবাস আমেরিকায়।
প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে প্যাটেল কাশ জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালক ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর উপদেষ্টার ভূমিকা পালন করেছিলেন।
এর আগে তিনি এফবিআইর ভূমিকা বদলানোর প্রস্তাব রেখেছেন এবং মত দিয়েছেন, ট্রাম্পের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সমর্থন না জানালে যেকোনো কর্মীকে এই সংস্থা থেকে বহিষ্কার করা উচিত।
গত সেপ্টেম্বরে শন রায়ান শো শীর্ষক অনুষ্ঠানে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে কাশ প্যাটেল বলেন, ‘এফবিআইয়ের সবচেয়ে বড় সমস্যা, গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ থেকে বেরিয়ে এসেছে। আমি এ প্রক্রিয়া ভেঙে ফেলব। আমি সেই বিল্ডিংয়ে কাজ করা সাত হাজার কর্মচারীকে নিয়ে যাব এবং অপরাধীদের তাড়াতে তাদের আমেরিকা জুড়ে পাঠাব। যাও পুলিশ হয়ে যাও। তুমি পুলিশ। যাও পুলিশ হয়ে যাও।’
কাশ প্যাটেল এক সময় মার্কিন প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টার পদে ছিলেন। ২০১৯ সালে আমেরিকার হাউস ইন্টালিজেন্স কমিটি থেকে কাশ প্যাটেল দেশের ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিল স্টাফ-এর একজন ছিলেন। ওই সময় প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা, সংক্রান্ত নানান ইস্যুতে কাশ প্যাটেলের পরামর্শে মুগ্ধ হন ট্রাম্প।
এর আগে ভারতীয় বংশোদ্ভূত নারী তুলসী গ্যাবার্ডকে আমেরিকার জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান হিসেবে এবং স্বাস্থ্য বিষয়ক এজেন্সি ন্যাশনাল ইনস্টিটিউটস অব হেলথের (এনআইএইচ) প্রধান হিসেবে ভারতীয় বংশোদ্ভূত চিকিৎসক জয় ভট্টাচার্যকে মনোনীত করেন ট্রাম্প।
উল্লেখ্য, রেই’র আমলে এফবিআই আদালতের সম্মতিতে ট্রাম্পের প্রাসাদোপম বাসভবন মার-আ-লাগোয় তল্লাশি চালায়। উদ্দেশ্য ছিল, সেখান থেকে সরকারি সকল গোপনীয় নথি উদ্ধার করা। বিশ্লেষকদের মতে হয়তো এ কারণেই ট্রাম্পের বিরাগভাজন হয়েছেন তিনি।
এফবিআইর বর্তমান এই পরিচালকের চাকরির মেয়াদ ২০২৭ পর্যন্ত বহাল থাকলেও ধারণা করা হচ্ছে ট্রাম্প থাকে সরিয়ে দেবেন। যদিও ট্রাম্পই তাকে নিয়োগ দিয়েছিলেন।
এদিকে প্যাটেলের মনোনয়ন চূড়ান্ত হতে যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ সিনেটের অনুমোদন প্রয়োজন হবে।
এ বিষয়ে গতকাল শনিবার এফবিআইর মুখপাত্র বলেন, ‘প্রতিদিন এফবিআইর নারী-পুরুষরা আমেরিকানদের ক্রমবর্ধমান হুমকির হাত থেকে সুরক্ষা দেওয়ার জন্য কাজ করে। পরিচালক রেই এফবিআইর নারী-পুরুষ কর্মীদের দিকে নজর দেওয়া অব্যাহত রাখবেন। বিশেষত যাদেরকে নিয়ে আমরা কাজ করি এবং যাদের জন্য কাজ করি।’
প্রসঙ্গত, আগামী ২০ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমতা গ্রহণ করবেন ট্রাম্প। এরপর দায়িত্ব বুঝে নেবেন তার মনোনীতরাও।