ধর্মের সাথে সম্পর্ক না রাখা আমেরিকানদের অংশ উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ছে। সেই সাথে খ্রিষ্টান হিসেবে পরিচিতদের শতাংশ প্রবলভাবে হ্রাস পাচ্ছে। পিউ রিসার্চ সেন্টারের নতুন উপাত্তে এ চিত্র পাওয়া গেছে। ২০১৮ ও ২০১৯ সালে ফোনে পরিচালিত জরিপের ভিত্তিতে পিউ বৃহস্পতিবার জানায়, আমেরিকান প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে বর্তমানে ৬৫ শতাংশ নিজেদের খ্রিষ্টান হিসেবে পরিচয় দেন। ২০০৯ সালে এটি ছিল ৭৭ শতাংশ। অন্যদিকে, যারা নিজেদের ধর্মীয় পরিচয়ের ক্ষেত্রে নাস্তিক, অজ্ঞেয়বাদী বা ‘নির্দিষ্ট কিছু না’ বলে উল্লেখ করেছেন তাদের অংশটি ২০০৯ সালের ১৭ শতাংশ থেকে বেড়ে এখন ২৬ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। প্রোটেস্ট্যান্ট এবং রোমান ক্যাথলিক উভয়ে জনগোষ্ঠী হারাচ্ছে। ৪৩ শতাংশ মার্কিন প্রাপ্তবয়স্ক প্রোটেস্ট্যান্ট হিসেবে পরিচয় দেন। ২০০৯ সালে এটি ছিল ৫১ শতাংশ। সেই সাথে ক্যাথলিকদের সংখ্যা ২০০৯ সালের ২৩ শতাংশ থেকে কমে ২০ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। পিউ জানায়, ধর্মের সাথে অন্তর্ভুক্তি না রাখা সব শ্রেণির জনগোষ্ঠী বিশালভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। নিজেদের নাস্তিক হিসেবে বর্ণনা করা মার্কিন প্রাপ্তবয়স্কদের আকার ২০০৯ সালের ২ শতাংশ থেকে বেড়ে এখন ৪ শতাংশ হয়েছে। অজ্ঞেয়বাদীদের সংখ্যা এক দশক আগের ৩ শতাংশ থেকে দাঁড়িয়েছে ৫ শতাংশে। যেসব আমেরিকান নিজেদের ধর্ম বলতে ‘নির্দিষ্ট কিছু নেই’ বলে থাকেন তারা ২০০৯ সালের ১২ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে এখন ১৭ শতাংশ হয়েছেন।
পিউর প্রতিবেদনে প্রার্থনা অনুষ্ঠানে অংশ নেয়ার হারেও নিয়মিত হ্রাস দেখা গেছে। যেসব আমেরিকান জানিয়েছেন যে তারা মাসে অন্তত এক বা দুইবার প্রার্থনা সভায় যান, তেমন ব্যক্তিদের সংখ্যা এক দশকের ব্যবধানে ৭ শতাংশ কমেছে। অন্যদিকে, যারা বলেছেন যে আরো কম যান তাদের সংখ্যা একই হারে বেড়েছে। পিউর উপাত্তে ধর্মের সাথে সম্পর্ক রাখা বা না রাখাদের বয়সের মাঝে বড় ধরনের পার্থক্য দেখা গেছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী দুই দশকে জন্ম নেয়াদের মাঝে তিন-চতুর্থাংশ নিজেদের খ্রিষ্টান হিসেবে পরিচয় দেন। সেই তুলনায় ২১ শতকে প্রাপ্তবয়স্ক হওয়া তরুণদের মাঝে এ সংখ্যাটি ৪৯ শতাংশ। পিউর গবেষণায় উঠে আসা এ প্রবণতা সম্প্রতি আরো কিছু প্রতিবেদনেও দেখা গেছে। গত মে মাসে সাউদার্ন ব্যাপটিস্ট কনভেনশন জানায়, তাদের সদস্য হ্রাস পাওয়া ১২তম বছরের মতো চলমান রয়েছে। ২০১৮ সালে তাদের সদস্য ছিলেন ১ কোটি ৪৮ লাখ, যা আগের বছরের তুলনায় ১ লাখ ৯২ হাজার কম। গত জুনে আমেরিকানদের দানের তথ্য নিয়ে প্রণীত বার্ষিক গিভিং ইউএসএ প্রতিবেদনে বলা হয়, গত কয়েক বছর ধরে অন্যান্য জনহিতকর খাতে দানের তুলনায় ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে দান পিছিয়ে পড়েছে।
ধর্মীয় দান নিয়ে গবেষণাকারী ইলিনয়ের খ্রিষ্টিয় সংস্থা এম্পটি টোম্ব জানায়, এ হ্রাস পাওয়া দীর্ঘস্থায়ী হচ্ছে। আমেরিকানরা ১৯৬৪ সালে তাদের আয়ের ৩ শতাংশ গির্জায় দিতেন এবং ২০১৬ সালে তা হ্রাস পেয়ে ২.২ শতাংশের কমে দাঁড়িয়েছে।