করোনাভাইরাসের নমুনা সংগ্রহের পর টেস্ট না করেই ভুয়া রিপোর্ট প্রদানসহ বিভিন্ন অভিযোগে দায়েরকৃত মামলায় রিজেন্ট হাসপাতালের মালিক মো. সাহেদ ওরফে মো. সাহেদ করিমের অন্যতম সহযোগী তরিকুল ইসলাম ওরফে তারেক শিবলীর পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। আজ শুক্রবার শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম মোর্শেদ আল মামুন ভূঁইয়া এ রিমান্ডের আদেশ দেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উত্তরা পশ্চিম থানার পরিদর্শক মো. আলমগীর গাজী এ আসামির সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করে আদালতে হাজির করেন। শুনানিকালে আসামি তারেক শিবলীর পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না। এর আগে গত বৃহস্পতিবার ভোররাতে শিবলীকে রাজধানীর নাখালপাড়াে এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
এর আগে গত ৬ জুলাই রিজেন্ট হাসপাতালে অভিযানের সময় আটজনকে আটক করে র্যাব। পরে মামলা দায়ের হলে তাদেরকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে গত ৮ জুলাই আদালতে হাজির করা হলে সাত জনের পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। কামরুল ইসলাম নামে অপর আসামি কিশোর হওয়ায় তাকে সংশোধনাগার কেন্দ্রে পাঠান আদালত।
রিমান্ডে যাওয়া ওই আসামিরা হলেন- আহসান হাবীব, আহসান হাবীব হাসান, হাতিম আলী, রাকিবুল হাসান ওরফে সুমন, অমিত বনিক, আব্দুস সালাম, আব্দুর রশীদ খান ওরফে জুয়েল।
গত ৭ জুলাই উত্তরা পশ্চিম থানায় ১৭ জনকে আসামি করে এ মামলা দায়ের করে র্যাব। মামলার প্রধান আসামি প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান মো. সাহেদ ওরফে মো. সাহেদ করিম। তিনি এখনো গ্রেপ্তার হননি।
র্যাব জানিয়েছে, হাসপাতাল দুটিতে করোনার নমুনা নিয়ে ভুয়া রিপোর্ট দেওয়া হতো। বিনামূল্যে চিকিৎসার কথা বলে মোটা অঙ্কের টাকা আদায় করত। ২০১৪ সালের পর লাইসেন্স নবায়ন না করেই হাসপাতাল দুটি চালানো হচ্ছিল। আর করোনা সংক্রমণের পর থেকে মালিক সাহেদ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের স্টিকার লাগানো নম্বরবিহীন গাড়ি ব্যবহার করছিলেন। সাহেদ নিজেকে কখনো মেজর, কখনো সচিব, আবার ১৯৯৬ সালে প্রধানমন্ত্রীর এপিএস হিসেবেও নিজের পরিচয় দিয়েছেন। তার বিরুদ্ধে ধানমন্ডি থানায় দুটি, বরিশালে একটি, উত্তরা থানায় আটটি মামলাসহ রাজধানীতে ৩২টি মামলা রয়েছে।
র্যাব আরও জানায়, মো. সাহেদ একজন প্রতারক। ফেসবুকে নিজের পরিচয় দিয়েছেন আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক সম্পর্কবিষয়ক কমিটির সদস্য; ন্যাশনাল প্যারা অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট; রিজেন্ট ডিজাইন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট, রিজেন্ট কেসিএস লিমিটেড, কর্মমুখী কর্মসংস্থান সোসাইটি, রিজেন্ট হসপিটাল লিমিটেড ও রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান। সেন্টার ফর পলিটিক্যাল রিসার্চ নামে একটি প্রতিষ্ঠানেরও চেয়ারম্যান তিনি। নিজের অপকর্ম আড়াল করতে প্রভাবশালী লোকজনের সঙ্গে ছবি তুলে তা ব্যবহার করতেন সাহেদ।