সোমবার, ২০ জানুয়ারী ২০২৫, ০৭:০২ পূর্বাহ্ন

৭৫ কোটি টাকার সাপের বিষ জব্দ, আটক ৬

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : শুক্রবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০২০
  • ১৭৪ বার

রাজধানীর দক্ষিণখান থেকে ৭৫ কোটি টাকা দামের সাপের বিষ জব্দ করেছে র‍্যাব। এ সময় ৬ জনকে আটক করা হয়েছে। তারা সবাই সাপের বিষ চোরাচালানকারী আন্তর্জাতিক চক্রের সদস্য।

শুক্রবার সকালে র‌্যাব-২ এর সিনিয়র এএসপি আব্দুল্লাহ আল মামুন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। আটকরা হলেন মো. মাসুদ রানা (২৪), মো. ছফির উদ্দিন শানু (৫০), মো. তমজিদুল ইসলাম ওরফে মনির (৩৪), মো. আলমগীর হোসেন (২৬), ফিরোজা বেগম (৫৭) ও আসমা বেগম (৪২)।

আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, বৃহস্পতিবার বিকেলে দক্ষিণখান থানার ৫০ নম্বর ওয়ার্ডের গুলবার মুন্সি সরণি থেকে তাদের আটক করা হয়। তাদের সাথে থাকা ব্যাগ তল্লাশি করে কাঁচের জার পাওয়া যায়। তাতে ৮ দশমিক ৯৬ কেজি (জারসহ) সাপের বিষ পাওয়া যায়। যার আনুমানিক দাম ৭৫ কোটি টাকা। এসময় তাদের কাছ থেকে সাপের বিষ সংক্রান্ত সিডি ও সাপের বিষের ম্যানুয়াল বই উদ্ধার করা হয়।

গত মাসেও ৯ কোটি টাকার সাপের বিষসহ গাজীপুর থেকে দুজনকে আটক করা হয়। পরে সিআইডি জানায়, বাংলাদেশে সাপের বিষ ক্রয়-বিক্রয়ের কোনো বৈধতা নেই। মূলত সাপের বিষ পাচারের জন্য বাংলাদেশকে রুট হিসেবে ব্যবহার করে আসছিল পাচারকারীরা।

তিনি আরো বলেন, একটি নিদিষ্ট গোষ্ঠীর কাছে সাপের বিষের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে বলে জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন আটকরা। পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সাপের বিষ সংগ্রহ করে চোরাচালান হচ্ছে।

সাপের বিষের দাম কেমন
আন্তর্জাতিক বাজারে আমাদের দেশীয় সাপ থেকে প্রক্রিয়াজাত করা এক গ্রাম ভাইপার রাসেলের বিষের মূল্য প্রায় আড়াই লাখ টাকা। এছাড়া কালাচ বা কালচিতি সাপের বিষের মূল্য তিন থেকে চার লাখ টাকা, খয়া গোখরার ৫০ হাজার টাকা, বিভিন্ন সামুদ্রিক সাপের বিষের মূল্য প্রায় চার থেকে সাড়ে চার লাখ টাকা।

বাংলাদেশে ১৬টির অধিক প্রজাতির বিষধর সাপ আছে, যাদের বিষ অত্যন্ত মূল্যবান বলে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন সূত্রে জানা যাচ্ছে।

কী কাজে লাগে সাপের বিষ? কেন এত দামি
সাপের বিষ কেন এত দামি? এর জবাব লুকিয়ে রয়েছে এটি কী কাজে লাগে তার মধ্যেই। সাপের বিষের উচ্চমূল্যের প্রধান দুটি কারণ হচ্ছে- মানুষের জীবনরক্ষাকারী ওষুধ তৈরি করতে সাপের বিষ ব্যবহার হয়। সাপেকাটা রোগীদের জন্য সাপের বিষ দিয়েই যেমন এন্টিভেনম তৈরি হয় তেমনি ক্যান্সার, হার্টের রোগসহ বিভিন্ন জটিল রোগের জন্য সাপের বিষ ব্যবহার করে তৈরি হয় অনেক দামি ওষুধ।

বিশ্ব প্রতি বছর প্রায় ১৫ লাখ মানুষ সাপের কামড়ে অসুস্থ হয়। এর মধ্যে প্রায় দেড় লাখ মারা যান। সাপেকাটা রোগীদের জন্য ব্যবহৃত ভ্যাকসিন এন্টিভেনম খুবই দামি। একটি এন্টিভেনমের মূল্য প্রায় ১৫০০ ডলার। যদিও প্রতিটি দেশের সরকার ভর্তুকি দিয়ে তা সাধারণের কাছে সরবরাহ করে।

বিষধর সাপের খামার রয়েছে দেশেই
বাংলাদেশে সাপ লালন পালন বা খামার করা অবৈধ ও আইনত দণ্ডনীয় হলেও বিভিন্ন জেলায় ছোট বড় আকারে সাপের খামার গড়ে উঠেছে বলে তথ্য রয়েছে। বন্যপ্রাণী গবেষকদের বরাত দিয়ে আগস্টে বিবিসি বাংলার এক প্রতিবেদনে বলা হয় নাটোর, রাজশাহী, গাজীপুর, পটুয়াখালী ও বরিশালে একাধিক সাপের খামার গড়ে তোলা হয়েছে। বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন ২০১২ অনুযায়ী, সাপ সংগ্রহ ও মেরে ফেলা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com