ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের হাতে মার্কিন নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর চরম ক্ষতি হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন নব-নির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তিনি বলেছেন, তার দল প্রতিরক্ষা বিভাগসহ অন্য যারা ক্ষমতা হস্তান্তর প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত, তাদের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য পাচ্ছেন না। আজ মঙ্গলবার ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবদেনে বলা হয়েছে, প্রেসিডেন্ট হিসেবে আগামী ২০ জানুয়ারি শপথ গ্রহণ করবেন জো বাইডেন। তবে এখন পর্যন্ত পরাজয় মেনে নেননি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ৩ নভেম্বরের নির্বাচনের চার সপ্তাহ পর বাইডেনকে গোয়েন্দা তথ্য দেওয়া আটকে দেওয়া হয়েছে। অথচ প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা হস্তান্তরের অংশ হিসেবেই এসব তথ্য পাওয়ার কথা জো বাইডেনের।
বিজয়ী ঘোষণার পরও মুখ্য গোয়েন্দা ব্রিফিংয়ে অংশ নিতে দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন বাইডেন। তার অভিযোগ, প্রতিরক্ষা দপ্তর এবং ব্যবস্থাপনা ও বাজেট দপ্তরে ‘রোডব্লকের’ মুখে পড়েছে তার সহযোগীরা। অথচ প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব হস্তান্তর প্রক্রিয়ায় এটি নিয়মিত ও গুরুত্ত্বপূর্ণ অংশ।
বাইডেন বলেন, ‘প্রধান জাতীয় নিরাপত্তার ক্ষেত্রে বিদায়ী প্রশাসন থেকে আমাদের যেসব তথ্য প্রয়োজন তা এই মুহূর্তে আমরা পাচ্ছি না। এটি আমার দৃষ্টিতে দায়িত্বজ্ঞানহীনতার মধ্যেও পড়ে না।’
তিনি বলেন, এই মুহূর্তে সারা বিশ্ব সম্পর্কে, যুক্তরাষ্ট্রের শত্রুদের সম্পর্কে পরিষ্কার তথ্য পাওয়া প্রয়োজন।
বাইডেন আরও বলেন, ‘আমাদের নিরাপত্তার জন্য গুরুত্বপূর্ণ সংস্থাগুলোর বিপুল পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এর অনেকগুলো ব্যক্তি, সামর্থ্য ও নৈতিক দিক থেকে ফাঁপা। নীতি নির্ধারণী প্রক্রিয়া দুর্বল কিংবা পক্ষপাতদুষ্ট।’
বাইডেনের বক্তব্যের পর গতকাল ভারপ্রাপ্ত প্রতিরক্ষামন্ত্রী ক্রিস্টোফার মিলার বলেছেন, পেশাদারিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য ক্ষমতা হস্তান্তর প্রক্রিয়ায় সহায়তার জন্য কর্মকর্তারা চেষ্টা করছেন।
নির্বাচনের ফলাফলে প্রেসিডেন্ট হিসেবে জয়লাভের তিন সপ্তাহ পর্যন্ত ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাইডেন শিবিরকে আদৌ কোনো সহযোগিতা দেওয়া হয়নি। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টদের ক্ষমতার পালাবদলে এমন ঘটনা আগে কখনো ঘটেনি।
নির্বাচনের পরই প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নিরাপত্তামন্ত্রী মার্ক এস্পারকে বরখাস্ত করেন। নাগরিক আন্দোলনের সময় সেনা মোতায়েনের বিরোধিতা করার কারণে ট্রাম্পের সঙ্গে এস্পারের সম্পর্কের অবনতি ঘটেছিল। প্রতিরক্ষা বিভাগে ট্রাম্প তার প্রতি অনুগতদের জড়ো করার মাধ্যমে ক্ষমতায় থাকার শেষ সময়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করছেন বলেও মনে করা হচ্ছে।
আগামী ৬ জানুয়ারি কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে রিপাবলিকান আইনপ্রণেতারা তার পক্ষে দাঁড়াবেন বলে এখনো স্বপ্ন দেখছেন ট্রাম্প। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের শেষ সাংবিধানিক এ প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করে ট্রাম্প কোনো সুবিধা করতে পারবেন না বলেই মনে করা হচ্ছে।