ক্যানসার রোগীরা সব ধরনের সবজি খেতে পারেন না। ফলে ক্যানসার আক্রান্তদের কেউ যদি ভেষজ পিল গ্রহণ করেন তাহলে বিষয়টি তাদের চিকিৎসককে জানানো প্রয়োজন। কারণ এসব ভেষজ পিল এর কিছু উপাদান ক্যানসারের চিকিৎসা বাধাগ্রস্ত করতে পারে। সম্প্রতি ক্যানসার বিষয়ক এক সম্মেলনে এমনই তথ্য দেয়া হয়েছে।
স্তন ক্যানসারে আ্রকান্ত ব্যক্তিদের আদা ও রসুন কিংবা আদা খাওয়া ঠিক নয়। কেননা এসব খেলে চামড়ার ক্ষত সারতে বিলম্ব হয়।
স্তন ক্যানসার বিষয়ক পর্তুগালের শল্য চিকিৎসক অধ্যাপক মারিয়া জোয়াও কার্দোসো বলেন, ভেষজ পিল ক্যানসার চিকিৎসার ক্ষেত্রে কার্যকরী হবার প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
তিনি মনে করেন, চিকিৎসকদের উচিত নিজে থেকে উদ্যোগী হয়ে রোগীদের জিজ্ঞেস করা যে ক্যানসারের চিকিৎসার সময় তারা অন্য কিছু খাচ্ছে কিনা।
তিনি বলেন, ক্যানসার চিকিৎসার জন্য রোগীরা যদি কোন বাড়তি থেরাপি গ্রহণ করেন তাহলে বিষয়টি তাদের চিকিৎসককে জানানো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে যে ক্যানসার চামড়ায় ছড়িয়েছে।
এমন অনেক পণ্য আছে যেগুলোর কারণে ক্যানসার চিকিৎসায় ব্যবহৃত হরমোন থেরাপি এবং কেমোথেরাপির উপর প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারে। এছাড়া আরো কিছু পণ্য আছে যেগুলো রক্ত জমাট করতে দেরি করে।
এ সম্পর্কে ক্যানসার বিশেষজ্ঞ মিস কার্দোসো বলেন, কিছু ভেষজ খাবার আছে যেগুলোর কারণে রক্ত জমাট বাঁধতে দেরি হয়। যেমন- রসুন, আদা, হলুদ।
অধ্যাপক কার্দোসো বলেন, রোগী এবং তাদের স্বজনরা সবসময় বিকল্প চিকিৎসার খোঁজ করেন, যেটি বড় ধরণের পার্থক্য তৈরি করতে পারে। কিন্তু মানুষের জানা উচিত এসব বিকল্প চিকিৎসা ভালো করার চেয়ে খারাপ হতে পারে বেশি।
তিনি বলেন, ঔষধের সর্বোচ্চ লক্ষ্য হচ্ছে যাতে কোন ক্ষতি না হয়।
ব্রিটেনের ক্যানসার রিসার্চ বলছে, কিছু প্রথাগত ঔষধের বাইরে কিছু পদ্ধতির কারণে মূল চিকিৎসায় ব্যাঘাত ঘটতে পারে।
ক্যানসার রিসার্চ বলেন, ক্যানসারের চিকিৎসা চলাকালীন মাল্টা এবং কমলার মতো খাবার এড়িয়ে চলা উচিত। কারণ ক্যানসারের ঔষধ শরীরের ভেতরে যেভাবে ভেঙ্গে কাজ করে, এসব ফল সেটিকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। এছাড়া কামরাঙ্গা, বাঁধাকপি এবং হলুদকেও বর্জনের তালিকায় রেখেছে ব্রিটেনের ক্যানসার রিসার্চ।
প্রতিষ্ঠানটির মতে, প্রথাগত চিকিৎসার বাইরে যে কোন ধরনের ঔষধ খাবার আগে রোগীর চিকিৎসকের সাথে কথা বলা উচিত। বিশেষ করে তিনি যদি ক্যানসার চিকিৎসার মাঝামাঝিতে অবস্থান করেন।
স্তন ক্যান্সার বিষয়ক একটি দাতব্য সংস্থার ক্লিনিক্যাল নার্স বিশেষজ্ঞ গ্রিটি ব্রাউটিন-স্মিথ বলেন, ক্যানসারের ওপর প্রমান ছাড়া অনেক তথ্য ইন্টারনেটে এখন সহজলভ্য। কিন্তু ক্যানসারে আক্রান্তদের এসব তথ্যে বিশ্বাস না করে চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করা উচিত। ক্যানসার একটি জটিল রোগ এবং এর চিকিৎসাও দীর্ঘমেয়াদি। তাই কেবল চিকিৎসকের কাছ থেকেই কেবল সঠিক তথ্য ও সেবা পেতে পারেন রোগীরা।