আগামী ২০ জানুয়ারি ক্ষমতা ছাড়তে হবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে। ক্ষমতা ছাড়ার আগে অভিশংসনের বিষয়ে কথা বলেছেন তিনি। ট্রাম্প মনে করেন অভিশংসনের প্রস্তাব তার দেশের জন্য ভয়াবহ বিপদ ডেকে আনবে এবং ব্যাপক ক্ষোভ তৈরি করবে। তিনি কোনো সহিংসতা চান না।
মেক্সিকো সীমান্তে তোলা দেয়াল দেখার জন্য টেক্সাসে যাওয়ার আগে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আরও বলেন, ‘২৫তম সংশোধনীতে আমার জন্য কোনো ঝুঁকি নেই। এটা হাস্যকর। এটা উল্টো জো বাইডেন এবং তার প্রশাসনের পেছনেই ফিরে আসবে।’
ট্রাম্পের এমন কথা মনে হচ্ছে ক্যাপিটল ভবনে হামলায় সমর্থকদের উসকানি দেওয়ার জন্য তার মধ্যে কোনো অনুশোচনা নেই। দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট তাদের এক প্রতিবেদনে এ কথা জানিয়েছে।
এদিকে সহিংসতা উস্কে দেওয়ার অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রের বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে কংগ্রেসে অভিশংসনের প্রস্তাব করেছেন, তাতে বিকার নেই ৪৫তম মার্কিন প্রেসিডেন্টের। প্রস্তাবটিকে তিনি ‘হাস্যকর’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। এর আগে মন্তব্য করেন, ক্যাপিটল হিলে দাঙ্গার আগে তিনি যে বক্তব্য দিয়েছিলেন তার পুরোপুরি ঠিক আছে। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি এটা (অভিশংসনের প্রস্তাব) আমাদের দেশের জন্য ভয়াবহ বিপদ ডেকে আনবে এবং ব্যাপক ক্ষোভ তৈরি করবে। আমি কোন সহিংসতা চাই না।’
ট্রাম্পের এমন হাসির পেছনে কারণ আছে। ব্যাপারটা হলো, মার্কিন স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি যে সংবিধানের ২৫তম সংশোধনী কার্যকরের কথা বলেছেন, তা করবেন না বলে জানিয়েছেন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স। কিন্তু, চার রিপাবলিকান নেতা সিনেটে ট্রাম্পের অভিশংসনের পক্ষে ভোট দেবেন বলে আগেই জানিয়ে দিয়েছেন।
গত ৬ জানুয়ারি ট্রাম্পের আহ্বানে তার উগ্র সমর্থকেরা রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে জড়ো হন। একপর্যায়ে তারা কংগ্রেস ভবনে হামলা চালান। এ হামলার ঘটনায় পাঁচ ব্যক্তি নিহত হন। ট্রাম্পের ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স ও কংগ্রেসের সদস্যদের জীবনও হুমকির মুখে পড়েছিল।
অপরদিকে, ট্রাম্পের অভিশংস প্রস্তাব ও ডেমোক্র্যাট পার্টি থেকে নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান নিয়ে সশস্ত্র বিক্ষোভের আশঙ্কা করছে ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই)। আগামী সপ্তাহে ৫০টি রাজ্যে এ বিক্ষোভ সংগঠিত ও এতে ব্যাপক রক্তপাত হতে পারে বলে ধারণা করছে সংস্থাটি।
বিশেষ করে নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের শপথ গ্রহণকে কেন্দ্র করে এ বিক্ষোভের সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করছে এফবিআই। সংস্থাটি এও আশঙ্কা করছে, গত বুধবার কংগ্রেস ভবন ক্যাপিটল হিলে ঘটে যাওয়া হামলার চেয়েও নৃশংস হতে পারে। আরও ব্যাপক রক্তপাত হতে পারে। এফবিআইয়ের অভ্যন্তরীণ বুলেটিন থেকে গত সোমবার এ তথ্য জানা যায়।
এফবিআই বলেছে, চলতি সপ্তাহের শেষ দিকেই দেশজুড়ে বিক্ষোভ হতে পারে। এটা ২০ জানুয়ারি বাইডেনের শপথ পর্যন্ত চলতে পারে।
বার্তা সংস্থা এপিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এফবিআই’র দুই সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, কিছু চরমপন্থি গ্রুপের সদস্যরা এই বিক্ষোভে অংশ নিতে পারে। ১৬ জানুয়ারি থেকে ২০ জানুয়ারি সশস্ত্র বিক্ষোভের আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এবিসি নিউজ তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে এ বিক্ষোভ হতে পারে ১৭ জানুয়ারি থেকে ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত। এ বিষয়ে এফবিআইয়ের কোনো কর্মকর্তা কিছু বলতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন।
ন্যাশনাল গার্ডের প্রধান সেনাবাহিনীর জেনারেল ড্যানিয়েল হোকানসন জানিয়েছেন, তার বাহিনীও দেশজুড়ে এ বিষয়ে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।