সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১:০৪ অপরাহ্ন

হংকংয়ের বিশ্ববিদ্যালয়ে তীব্র সংঘর্ষ

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : সোমবার, ১৮ নভেম্বর, ২০১৯
  • ২৭৭ বার

হংকংয়ের একটি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ চলমানরত অবস্থায় পুলিশের একটি আগ্রাসন প্রতিহত করার সময় বিক্ষোভাকারীদের সাথে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে।

বিক্ষোভকারীরা ব্যারিকেডের পেছন থেকে পুলিশের দিকে পেট্রল বোমা ও তীর ছুড়ে মাররে পলিটেকনিক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশপথে বড় ধরণের অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে।

পুলিশ কর্মকর্তারা এই ঘটনার কিছুক্ষণ আগেই বিক্ষোভকারীদের হুঁশিয়ারি দেয় যে এ ধরণের অস্ত্র ব্যবহার করে পুলিশের ওপর হামলা বন্ধ করা না হলে তারা বিক্ষোভকারীদের দিকে গুলি ছুড়বে।

গত কয়েক মাস ধরে চলা সরকার বিরোধী বিক্ষোভের কারণে অস্থিরতা বিরাজ করছে হংকংয়ে।

তবে আধা স্বায়ত্বশাসিত এই চীনা নিয়ন্ত্রনাধীন শহরে বিক্ষোভ শুরু হওয়ার পর থেকে সবচেয়ে বেশি সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে সাম্প্রতিক সময়ে।

গত কিছুদিনে উগ্র বিক্ষোভকারীরা বারবার পুলিশের ওপর হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে। তাদের অভিযোগ, পুলিশ তাদের বিক্ষোভ দমনের উদ্দেশ্যে ওপর অতিরিক্ত শক্তি ব্যবহার করছে।

গত কয়েক দিন ধরে পলিটেকনিক বিশ্ববিদ্যালয় দখল করে রেখেছে বিক্ষোভকারীরা।

রোববার বিক্ষোভকারী ও নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে নতুন করে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। বিক্ষোভকারীরা পুলিশের টিয়ার গ্যাস ও জল কামানের হামলার জবাব দেয় পেট্রল বোমা, ইট ও তীর ছুড়ে।

হাঁটুতে তীরবিদ্ধ হওয়ায় রবিবার আহত হন পুলিশের একজন কর্মকর্তা

সম্প্রতি বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়লো কেন
সোমবার স্থানীয় সময় ভোর সাড়ে ৫টার দিকে ক্যাম্পাসের দখল নেয়ার জন্য পুলিশ অগ্রসর হতে শুরু করলে বিক্ষোভকারীদের সাথে ছোট ছোট বিচ্ছিন্ন সংঘর্ষ শুরু হয়।

সেসময় বিক্ষোভকারীরা পুলিশের দিকে পেট্রল বোমা ছুড়লে ক্যাম্পসে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে।

কিছুক্ষণ সংঘর্ষ চলার পর পুলিশ পিছু হটে। ক্যাম্পাসের ভেতরে এখনো শত শত বিক্ষোভকারী রয়েছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের দখল নিয়ে রাখা শিক্ষার্থীদের রোববার সন্ধ্যার মধ্যে ক্যাম্পাস ছেড়ে যেতে বলা হলেও অনেকেই এখনো ক্যাম্পাসে রয়েছেন।

পুলিশের মুখপাত্র লুইস লাউ ফেসবুকে প্রচারিত হওয়া এক বক্তব্যে বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশ্যে বলেন, “তারা যদি পুলিশ অফিসারদের দিকে পেট্রল বোমা, তীরের মত বিপজ্জনক অস্ত্র ছুড়ে মারা অব্যাহত রাখে তাহলে আমাদের গুলি করা ছাড়া আর কোনো পথ খোলা থাকবে না।”

পুলিশকে সরিয়ে রাখতে বিক্ষোভকারীরা ক্যাম্পাসের প্রবেশপথে আগুন জালিয়ে বাধা তৈরি করার চেষ্টা করে।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতি প্রকাশ করে ক্যাম্পস দখল করা বিক্ষোভকারীদের ক্যাম্পাসের দখল ছেড়ে যেতে অনুরোধ করে।

শনিবারে চীনা সৈন্যরা টি-শার্ট ও হাফ প্যান্ট পরে রাস্তায় বিক্ষোভের ধ্বংসস্তূপ পরিস্কার করে এবং ব্যারিকেড সরিয়ে দেয়।

বিক্ষোভ শুরু হওয়ার পর এই প্রথম হংকংয়ে থাকা চীনা সৈন্যদের – যারা সাধারণত ব্যারাক ছেড়ে বের হয় না – রাস্তায় দেখা গেলো।

কেন শুরু হলো বিক্ষোভ
সরকারি একটি বিলের বিরোধিতা করতে গিয়ে এই গ্রীষ্মে হংকং-এ বিক্ষোভের সূত্রপাত। বিলটিতে বলা ছিল, কোনো অপরাধী ব্যক্তিকে কিছু নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে চীনের মূল ভূখণ্ডে হস্তান্তর করা যাবে।

হংকং চীনের অংশ হলেও এই স্থানটি বিশেষ স্বাধীনতা ভোগ করে থাকে। কিন্তু হংকং-এর মানুষের মধ্যে এই বোধ তীব্র হচ্ছে যে, বেইজিং তাদের উপরে আরো বেশি মাত্রায় নিয়ন্ত্রণ আরোপ করতে চায়।

চিলি ও লেবাননের মতোই হংকং-এর বিক্ষোভেও কাজ হয়েছে। বিতর্কিত বিলটি প্রত্যাহার করেছে কর্তৃপক্ষ। কিন্তু তবু বিক্ষোভ এখনো চলমান।

এখন যারা আন্দোলন করছে তাদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে সকল নাগরিকের ভোটাধিকারের দাবি। এছাড়া বিক্ষোভে পুলিশী সহিংসতার স্বাধীন তদন্ত এবং গ্রেফতারকৃত আন্দোলনকারীদের মুক্তির দাবি রয়েছে।

তাদের রাজনৈতিক এই কর্মসূচী বিশ্বের আরেক প্রান্তের দেশকেও উদ্বুদ্ধ করেছে।
সূত্র : বিবিসি

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com