মিয়ানমারে গতকালের জান্তাবিরোধী ব্যাপক বিক্ষোভ ও প্রাণহানির পর আজ সোমবার ফের দেশজুড়ে বড় ধরনের বিক্ষোভের প্রস্তুতি নিচ্ছেন আন্দোলনকারীরা। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের প্রতিবাদে ও দেশটির নেত্রী অং সান সু চির মুক্তির দাবিতে গতকাল রোববারও বিক্ষোভ করেন বিক্ষোভকারীরা। সেই বিক্ষোভে পুলিশ গুলি চালালে প্রাণহানিও ঘটে বিক্ষোভকারীদের।
গতকালের ওই সহিংসতা ও রক্তপাতের নিন্দা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও জাতিসংঘের প্রতিনিধিসহ বিভিন্ন দেশ। মিয়ানমারে বিক্ষোভ দমনে দেশটির আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এদিন যে পদক্ষেপ নেয়, তাকে ‘ঘৃণ্য সহিংসতা’ বলে আখ্যায়িত করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন।
ইয়াঙ্গুনসহ গতকাল মিয়ানমারের বিভিন্ন শহরেই গুলি চালিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর দাওয়েইর রাজনীতিক কিয়াও মিন হতিকে বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, এই শহরে তিনজন নিহত হয়েছেন। তবে বিবিসি জানায়, এই শহরে এদিন চারজন নিহত হয়েছেন।
মিয়ানমারের স্থানীয় সংবাদমাধ্যম মিয়ানমার নাউ জানিয়েছে, দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্দালয়ে বিক্ষোভে দুজন নিহত হয়েছেন। তবে স্থানীয় বাসিন্দা সাই তুন রয়টার্সের কাছে দাবি করেছেন, এই শহরে পুলিশ দফায় দফায় গুলি চালিয়েছে। এসব ঘটনায় নিহত হয়েছেন তিনজন।
এদিকে মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন এমআরটিভি জানিয়েছে, গত শনিবার দেশজুড়ে অভিযান চালিয়ে ৪৭০ জনের বেশি লোককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তবে গতকাল কতজনকে গ্রেপ্তার বা আটক হয়েছেন, তা তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।
মিয়ানমারে সহিংসতার ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এক বিবৃতিতে বলেছে, বিভিন্ন শহর-নগরে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর গুলি চালানোর ঘটনা ভয়াবহ ও অগ্রহণযোগ্য।
উল্লেখ্য, গত ১ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চির নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) সরকারের পতন ঘটায় সেনাবাহিনী। গ্রেপ্তার করা হয় সু চিসহ এনএলডির শীর্ষ নেতাদের।