পশ্চিমবঙ্গে সংখ্যালঘু ভোট প্রায় ৩০ শতাংশ। এদের সিংহভাগই তৃণমূলের সমর্থক। বিজেপির অভিযোগ, ভোটের স্বার্থে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সংখ্যালঘু তোষণ করছেন, সংখ্যালঘুদের ভোটব্যাংক হিসেবে ব্যবহার করছেন। বিজেপির এই প্রচার সংখ্যাগুরুদের মধ্যে প্রভাব ফেলেছে বলে অনুমান রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের। এটাই তৃণমূলের এবারের মূল শক্তি।
রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক বিমলশঙ্কর নন্দ ডয়েচে ভেলেকে বলেছেন, ‘তৃণমূলের লক্ষ্য মুসলিম ভোট। মুখ্যমন্ত্রী তার কথাবার্তা, পোশাক, আচরণে এই বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করেন। এমনকি তিন তালাক প্রথা বাতিলেরও বিরোধিতা করেছেন তিনি। বসিরহাটের প্রার্থী নুসরাত জাহান তিন তালাকের বিরোধিতা করেছিলেন। সেখানে প্রচারে গিয়ে মমতা বলেছেন, নুসরাত বাচ্চা মেয়ে। আমরা তিন তালাকের বিরোধী নই। এটা সংখ্যাগুরুরা ভালো চোখে দেখছেন না।’
অন্যদিকে শাসকদল তৃণমূলের বড় বড় নেতা-মন্ত্রীর বিরুদ্ধে বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থার মাধ্যমে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। এটা এবার দলটির জন্য বড় রকমের দুর্বলতা। নারদ তদন্তে গোপন ক্যামেরায় টাকা নিতে দেখা গেছে অনেককে। এই বিচারাধীন মামলাগুলোর থেকে তৃণমূলের বেশি মাথাব্যথা হয়ে দাঁড়িয়েছে পঞ্চায়েত স্তরে দুর্নীতি ও উৎকোচ। নিচুতলার তৃণমূল কর্মীরা বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের সুবিধা দিতে গ্রামবাসীর কাছ থেকে টাকা নিচ্ছেন বলে অভিযোগ। স্কুল-কলেজে ভর্তি থেকে পরিষেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে টাকা নেওয়া হচ্ছে। এর সঙ্গে রয়েছে ঔদ্ধত্য আচরণ ও দুর্ব্যবহার।
আরেকটা দুর্বলতা হলো, বিরোধী কণ্ঠস্বরকে অবদমিত রাখা। তৃণমূলের আমলে এমন অহরহ ঘটনা ঘটেছে। প্রতিবাদে কবি শঙ্খ ঘোষ লিখেছেন, ‘দেখ খুলে তোর তিন নয়ন/ রাস্তাজুড়ে খড়গ হাতে/ দাঁড়িয়ে আছে উন্নয়ন।’ এই পরিস্থিতিতে অনেকে বিজেপির হাত ধরছেন।