ঢাকা, চট্টগ্রাম ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নেতা-কর্মী ও প্রতিবাদী মুসল্লিদের হত্যা এবং হামলার প্রতিবাদে আগামী রোববার হেফাজতে ইসলামী বাংলাদেশ যে হরতালের ঘোষণা দিয়েছে সেই হরতাল করতে দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। আজ শুক্রবার রাতে সংবাদমাধ্যমকে এ কথা জানান তিনি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ঢাকা, চট্টগ্রাম ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হেফাজতের তাণ্ডবের বিষয় খতিয়ে দেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
এর আগে আজ শুক্রবার রাত ৮টায় পুরনো পল্টনে এক সংবাদ সম্মেলনে সারা দেশে আগামীকাল শনিবার বিক্ষোভ ও আগামী রোববার হরতালের ঘোষণা দেয় হেফাজতে ইসলামী বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির আবদুর রব ইউসুফী।
শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের সামনে মুসল্লিদের একাংশের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল ছুঁড়ে। জলকামানও ব্যবহার করা হয়। এই ঘটনায় সাংবাদিকসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন। এরপরে চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে পুলিশের সঙ্গে হেফাজতে ইসলামের কর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে কয়েকজন আহত হলে তাদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে নেওয়া হয়। বিভিন্ন ওয়ার্ডে ভর্তির পর চারজন মারা যান বলে জানায় হাসপাতাল সূত্র।
একইভাবে আজ শুক্রবার জুমার নামাজের পর ঢাকার জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে যখন ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া চলছিল ঠিক তখনই ব্রাহ্মণবাড়িয়া হয়ে ওঠে বিভীষিকার নগরী। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পুরো শহরে ভয়াবহ তাণ্ডব চালায় মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা। এসময় তারা বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ও সরকারি স্থাপনা নির্বিচারে ভেঙে ফেলে।
জানা গেছে, চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে ৪ জন নিহতের খবর ছড়িয়ে বিকেলে ৩টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এ তাণ্ডব চালানো হয়। হামলাকারীরা সরকারি-বেসরকারি অফিস, বঙ্গবন্ধু ম্যুরাল, স্বাধীনতার নানা স্থাপত্য, পুলিশ সুপারের কার্যালয়সহ পুড়িয়ে দেয় রেলস্টেশনও। রেললাইন উপড়ে আগুন দেওয়া হয়। ফলে বিকেল চারটা থেকে বন্ধ হয়ে যায় ঢাকা-সিলেট ও ঢাকা-চট্টগ্রাম ট্রেন চলাচল।