ডেল্টা করোনাভাইরাসের মারাত্মক সংক্রমণ বৃদ্ধি অব্যাহত থাকা সত্ত্বেও বিশেষজ্ঞদের মতামতকে উপেক্ষা করে লকডাউন শিথিল করা হয়েছে। একইসাথে ১৯ আগস্ট থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছাড়া সব কিছু খুলে দেয়ার সিদ্ধান্তে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিএনপি বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
লকডাউন শিথিলের সিদ্ধান্ত আত্মঘাতী মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, করোনা সংক্রমণের ও মৃত্যুর সংখ্যা হ্রাস না পাওয়ার পরও এই সিদ্ধান্ত জনবহুল দেশে সংক্রমণ বৃদ্ধির আরো বেশি আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, সরকার টিকা সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও বিতরণের কোনো বাস্তব সম্মত ব্যবস্থাপনা তৈরি করতে পারেনি। উপরন্ত দুর্নীতির আশ্রয় গ্রহণ করে অন্যান্য উৎস থেকে টিকা প্রাপ্তির সম্ভাবনা বিনষ্ট করেছে।
টিকা নিয়ে বিএনপি কোনো রাজনীতি করছে না উল্লেখ করে দলটির মহাসচিব বলেন, অপরাজনীতি করছে আওয়ামী লীগ সরকার। মিথ্যা ও ভুল তথ্য দিয়ে এক দিকে জনগণের সাথে প্রতারণা করছে, অন্য দিকে জনগণকে সীমাহীন ভোগান্তির মধ্যে ফেলেছে। সরকারের হিসাবেই দেখা যাচ্ছে, দুই ডোজ টিকা পেয়েছে মাত্র ৫২ লাখ মানুষ। প্রথম ডোজ পেয়েছে এক কোটি ৫৩ লাখ। অথচ জনসংখ্যা প্রায় ১৮ কোটি।
তিনি আরো বলেন, টিকা নিয়ে আজ পর্যন্ত সরকার সুনির্দিষ্ট কোনো রোডম্যাপ দিতে ব্যর্থ হয়েছে। টিকা নিয়ে এই প্রতারণা অপরাধের সামিল। জনগণের জীবন বিপন্ন করার সকল দায় এই সরকারকেই নিতে হবে।
অবিলম্বে টিকা সংগ্রহে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, সমগ্র জনগোষ্ঠীকে টিকা প্রদানের জন্য প্রয়োজনে মেগাপ্রজেক্ট স্থগিত করে হলেও সম্ভাব্য সকল উৎস থেকে টিকা সংগ্রহ নিশ্চিত করতে হবে।
এ সময় আন্তর্জাতিক মান অক্ষুণ্ন রেখে দেশে টিকা উৎপাদনের ব্যবস্থা গ্রহণেরও আহ্বান জানান মির্জা ফখরুল।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব খুলনার রূপসায় মন্দির-দোকান ও হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িতে হামলা, সাম্প্রতিক সময়ে মৌলভীবাজার কুলাউড়ায় খাসিয়াদের ওপর হামলা, পটুয়াখালীর রাখাইনপল্লী উচ্ছেদের হুমকির তীব্র নিন্দা জানান। এ সকল সাম্প্রদায়িক ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও ব্যবস্থা গ্রহণে সরকারের নির্লিপ্ততার নিন্দা ও প্রতিবাদও জানান তিনি।
পাশাপাশি অবিলম্বে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে এসব ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান বিএনপি মহাসচিব।