শনিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৩৯ পূর্বাহ্ন

নব্বইয়ের মতো আন্দোলনে আসবে না সফলতা

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২১
  • ১২২ বার

নব্বইয়ের চেতনায় আন্দোলন করলে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠা ও দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি সম্ভব নয় বলে মনে করেন বিএনপি নেতারা। তারা মনে করেন, নব্বই আর একুশ এক নয়। আন্দোলনে সফল করতে হলে পরিকল্পনামাফিক রাজপথে কর্মসূচি থাকতে হবে। সংগঠনকে করতে হবে শক্তিশালী। ঘরে বসে কমিটি করলে হবে না, নেতাকর্মীদের মতামতের ভিত্তিতে প্রতিটি ইউনিট কমিটি দেওয়া জরুরি। পাশাপাশি নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার দাবির পক্ষে আন্তর্জাতিক সমর্থনও আদায় করতে হবে। এ জন্য দলের কূটনৈতিক তৎপরতা বৃদ্ধি করতে হবে। গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে গতকাল বুধবার দ্বিতীয় দফার সিরিজ বৈঠকে৬র দ্বিতীয় দিনে হাইকামান্ডের সামনে এমন মতামতই তুলে ধরেন নেতারা। বিকাল ৪টায় শুরু হওয়া রুদ্ধদ্বার এ বৈঠকে যুক্তরাজ্য থেকে স্কাইপির মাধ্যমে যুক্ত হয়ে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সভাপতিত্ব করেন।
দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু মূল মঞ্চে ছিলেন। বৈঠকে সাংগঠনিক বিভাগ চট্টগ্রাম, সিলেট, রংপুর, ময়মনসিংহ, কুমিল্লা অঞ্চলের বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও জেলা বিএনপির সভাপতিসহ ১২৯ নেতাকে আমন্ত্রণ জানানো হলেও অংশ নেন ৮৫ জন। ছয় ঘণ্টা ধরে চলা ওই বৈঠকে ৬৩ নেতা তাদের মতামত তুলে ধরেন বলে জানা গেছে। এতে বেশিরভাগ নেতাই আন্দোলনের পক্ষে মত দিয়ে বলেন, এ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে যাওয়া যাবে না। সরকারবিরোধী সব রাজনৈতিক দলকে সঙ্গে নিয়েই নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের দাবি আদায় করে ভোটে যেতে হবে। পঞ্চগড়
জেলা শাখার সদস্য সচিব ফরহাদ হোসেন আজাদ বলেন, ‘আমাদের মনে রাখতে হবেÑ এরশাদবিরোধী আন্দোলন আর শেখ হাসিনাবিরোধী আন্দোলন এক নয়। এখনকার প্রশাসন আর নব্বইয়ের প্রশাসন এক নয়। ফলে নব্বইয়ের চেতনা নিয়ে আন্দোলন করলে হবে না।’ নির্বাহী কমিটির সদস্য রশিদুজ্জামান মিল্লাত বলেন, ‘আন্দোলনে সফলতা আনতে হলে সংগঠন শক্তিশালী করার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়েরও সমর্থন আদায় করতে হবে। এ জন্য দলের কূটনৈতিক উইংকে শক্তিশালী করতে হবে।’ রফিকুল ইসলাম হেলালী বলেন, ‘রাজনৈতিক কারণে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা হয়। কিন্তু যখন হাইকোর্টে জামিনের জন্য আসি তখন দলীয় আইনজীবীদের কাছ থেকে কোনো সুবিধা পাই না। বরং আমাদের কাছ থেকে বাড়তি টাকা নেওয়া হয়। অথচ এসব আইনজীবী হাইকমান্ডের কাছে বলেন, তারা নাকি ফ্রিতে দলীয় নেতাকর্মীদের মামলা দেখেন।’
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের বলেন, ‘বর্তমান অনির্বাচিত দখলদার সরকার রাজনীতি, অর্থনীতি ও মানুষের আশা আকাক্সক্ষা পুরোপুরিভাবে নষ্ট করে দিচ্ছে। গণতন্ত্র একেবারে নেই। আমাদের দেশনেত্রীকে সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে মিথ্যা মামলা দিয়ে গৃহঅন্তরীণ করে রেখেছে। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে করে রেখেছে নির্বাসিত। আমাদের প্রায় ৩৫ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা। এ সরকারের হাত থেকে জনগণকে মুক্তি ও গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে আমরা কেন্দ্রীয় কমিটির ধারাবাহিক বৈঠক করছি। সেখানে নেতাদের মতামত নিচ্ছি। ভবিষ্যতে দলের রাজনীতি, সর্বোপরি জাতীয় রাজনীতির বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সাংগঠনিক বিষয়েও নেতারা বলেছেন।’
বৈঠক সূত্রে জানা যায়, মতামত শোনার পর দলের হাইকমান্ডের পক্ষ থেকে বলা হয়Ñ সবাই আন্দোলনের কথা বলছেন, দলকে শক্তিশালীর কথা বলছেন, মাঠে না থাকলে পদ-পদবি থেকে সরিয়ে দেওয়ার কথাও বলেছেন। এগুলো মনে প্রাণে বিশ্বাস করলে আন্দোলনে সফলতা আসবেই আসবে। কেউ পালিয়ে থাকতে পারবেন না, আন্দোলনের ডাক এলে কারাগারে যেতেই হবে। সে ক্ষেত্রে রাজপথ থেকে গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে গেলে সেটাই হবে সফলতা।
নির্বাহী সদস্য আবদুল খালেক, রফিক শিকদার, জাহাঙ্গীর আলম, মমিনুল হক, এসএম কামাল উদ্দিন চৌধুরী, মোস্তফা খান সফরী, মাহবুব ইসলাম মাহবুব, কাজী রফিক, শেখ মো. শামীম, খন্দকার মারুফ হোসেন, একরামুল হক বিপ্লব, আলাউদ্দিন হেনা, জিয়াউদ্দিন, সালাউদ্দিন ভূঁইয়া শিশির, জিল্লুর রহমান, সিরাজুল হক, সুলতান মাহমুদ বাবু, মাহমুদুল হক রুবেল, ইকবাল হোসেন, লায়লা বেগম, শামসুজ্জামান মেহেদী, আরিফা জেসমিন, রাবেয়া আলী, আনোয়ার হোসেন, মোতাহার হোসেন তালুকদার, মো. ইকবাল, মিজানুর রহমান চৌধুরী, আরিফুল হক চৌধুরী, শাহরিয়ার হোসেন চৌধুরী, আবু কাহের শামীম, শাহ মোস্তফা, মজিবুর রহমান, হাসনা আক্তার সানু, গোলাম হায়দার, কাজী মফিজুর রহমান, ফোরকান-ই আলম, সাচিং প্রু জেরী প্রমুখ বৈঠকে অংশ নেন। শোক প্রস্তাব উপস্থাপন করেন দলের সাংগঠনিক সম্পাদক এমরান সালেহ প্রিন্স। বৈঠক পরিচালনা করেন প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী ও সহপ্রচার সম্পাদক আমিরুল ইসলাম আলীম। সার্বিকভাবে সহযোগিতায় ছিলেন দলের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক রিয়াজুদ্দিন নসু, সহদপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু, মনির হোসেন ও বেলাল আহমেদ।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com