আফগান পরিচয় ও সংস্কৃতিকে ধ্বংস করতে তালেবানের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে পাকিস্তান। এমন অভিযোগ তুলেছেন পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়ার প্রাক্তন সিনেটর আফরাসিয়াব খট্টক। আমস্টারডামভিত্তিক ইউরোপিয়ান ফাউন্ডেশন ফর সাউথ এশিয়ান স্টাডিজ (ইএফএসএএস) -কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এমন অভিযোগ তুলেছেন তিনি।
পাঞ্জাব ট্রিবিউনের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, পাকিস্তানের প্রাক্তন সিনেটর ও অধিকারকর্মী আফরাসিয়াব খট্টক বলেছেন, ‘পাকিস্তান গভীর ও কৌশলগত নীতির মাধ্যমে আফগানিস্তানে তাদের প্রভাব বিস্তৃত করেছে। আফগান গৃহযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী যুক্তরাষ্ট্র এবং আরব উপসাগরীয় রাষ্ট্রগুলোর সহায়তায় আফগান উদ্বাস্তুদের মগজ ধোলাই করে চরমপন্থী ইসলামী মতাদর্শে দীক্ষিত করেছে।’
খট্টক মনে করেন, এই পদক্ষেপের ফলে আফগান কিংবা পশতুন পরিচয় ছাপিয়ে তালেবান নিজেদের শুধু মুসলিম পরিচয় দিতে শুরু করে। ফলে সেখানে সাম্প্রদায়িকতার বীজ বপন হতে শুরু হয়। তার বড় উদাহরণ- তালেবানের প্রথম শাসনামলে আফগানিস্তানের শিল্প-সংস্কৃতির ব্যাপক ধস, এর পরিবর্তে কঠোর শরিয়া আইন চালু করা।
খট্টকের মতে, তালেবান এমনটা করায় আফগানিস্তানকে পাকিস্তানের একটি সাংস্কৃতিক সম্প্রসারণে পরিণত করার পাকিস্তানি সামরিক সংস্থার লক্ষ্য পূরণ হয়েছিল। আশির দশকের শেষের দিক থেকে ভারতের জম্মু ও কাশ্মীরেও অনুরূপ তৎপরতা চালায় ইসলামাবাদ। ফলে কাশ্মীরে হিন্দু-মুসলিম উভয়েরই বসবাস হলেও সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিমরা অঞ্চলটিকে কেবল মুসলিম অঞ্চল হিসেবেই দেখতে শুরু করে।
তিনি আরও দাবি করেছেন, ঐতিহাসিকভাবে আফগান শরণার্থীদের রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছে পাকিস্তান। যখনই আফগান সরকারের সঙ্গে তাদের সম্পর্কের টানাপোড়েন দেখা দিয়েছে, তখনই কাবুলের বিরুদ্ধে শরণার্থীদের উস্কে দেওয়া হওয়া হয়েছে। এ সময় ইসলামাবাদকে এই পুরোনো খেলা বন্ধ করে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা আনয়নে কাজ করা যাওয়ারও আহ্বান জানিয়েছেন আফরাসিয়াব খট্টক।