সোমবার, ২৭ জানুয়ারী ২০২৫, ১১:১০ পূর্বাহ্ন

ঝালকাঠিতে লঞ্চে আগুন, ৪১ লাশ উদ্ধার, আহত ১৫০, হতাহত বেশি নারী ও শিশুরা

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০২১
  • ১১৪ বার

বৃহস্পতিবার গভীর রাত। ঢাকা থেকে বরগুনাগামী এমভি অভিযান-১০ লঞ্চের যাত্রীরা ঘুমে আচ্ছন্ন। সপ্তাহের শেষ দিন হওয়ায় যাত্রীদের বেশির ভাগই ঢাকা থেকে স্বজনদের কাছে ফিরছেন। কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পৌঁছে যাবেন গন্তব্যে, প্রিয়জনদের কাছে। রাত ৩টার দিকে হঠাৎ লঞ্চের ইঞ্চিন রুম থেকে আসে বিকট শব্দ। বিস্ফোরণের সঙ্গে সঙ্গে ছড়িয়ে পড়ে আগুন। লঞ্চ তখন ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে। আর্তচিৎকারে যাত্রীদের ঘুম ভাঙ্গে। হতবিহ্বল অবস্থা কাটিয়ে জীবন বাঁচাতে নিকষ অন্ধকারেই মাঝ নদীতে ঝাঁপ দেন কেউ কেউ। কেউবা লঞ্চের ভেতরেই পুড়ে অঙ্গার। চারদিকে থৈ থৈ পানি থাকলেও আগুন নিয়ন্ত্রণে তা কোনোই কাজে আসেনি। পুরো লঞ্চটিই পুড়ে যায়। ভোর থেকেই ফায়ার সার্ভিসসহ বিভিন্ন সংস্থার সদস্যরা পুড়ে যাওয়া লঞ্চ থেকে ৪১টি মরদেহ সুগন্ধার পাড়ে নিয়ে আসেন। এ ঘটনায় দগ্ধ হয়েছেন অন্তত ১৫০ জন। এখনো অনেকেই নিখোঁজ।

স্থানীয় হাসপাতালের পাশাপাশি আহতদের মধ্যে গুরুতর পাঁচজনকে ঢাকায় শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তারা হলেন বাচ্চু মিয়া ও তার মেয়ে সাদিয়া এবং জেসমিন আক্তার ও তার ছেলে তানিম হাসান। অন্যজনের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তাদের দেখতে গিয়েছিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন পার্থ শংকর পাল জানান, জেসমিন আক্তারের শরীরের ১২ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে, তার ছেলে তানিমের ৩০ শতাংশ দগ্ধ।

এছাড়া দগ্ধ ১৪৩ জনকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ (শেবাচিম) এবং ৭ জনকে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হতাহতদের মধ্যে নারী ও শিশুই বেশি। শেবাচিমের চিকিৎসক আনিসুজ্জামান জানান, ভর্তি রোগীদের মধ্যে সাতটি শিশু রয়েছে। তাদের মধ্যে তিন শিশুকে চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

ঘটনা তদন্তে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব তোফায়েল আহম্মেদকে আহ্বায়ক করে ৭ সদস্যের কমিটি করা হয়েছে। কমিটিকে তিন কার্য দিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। নৌপুলিশও একটি কমিটি করেছে। মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনায় রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, বিরোধীদলীয় উপনেতা জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের এবং বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গভীর শোক জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে জানানো হয়, প্রধানমন্ত্রী মালদ্বীপ সফরে থাকলেও দুর্ঘটনার বিষয়ে খোঁজ রাখছেন। তিনি আহতদের দ্রুত সুচিকিৎসা নিশ্চিত এবং মরদেহ স্বজনদের কাছে দ্রুত হস্তান্তরের নির্দেশ দিয়েছেন। নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ঝালকাঠির ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তিনি বলেন, আগুন লেগে পুরো লঞ্চ ভস্মীভূত হওয়ার পেছনে কোনো রহস্য থাকতে পারে। নয়তো এ রকম দ্বিতীয় ঘটনা আর দেশে ঘটেনি। তিনি তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থার নির্দেশ দেন। মরদেহ দাফনের জন্য ২৫ হাজার টাকা এবং নিহতদের পরিবারকে দেড় লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ঘোষণা দেন তিনি। আহতদের চিকিৎসা ব্যয় সরকার বহন করবে বলেও জানান।

ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা বলছেন, এর আগে যাত্রীবাহী লঞ্চে অনেকবারই ছোটখাটো অগ্নিকা-ের ঘটনা ঘটেছে। কখনো প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি। এবারই প্রথম অগ্নিকা-ের ঘটনায় মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। তবে সেই সংখ্যাটি এত হবে এটি তারা মেনে নিতে পারছেন না। ফায়ার সার্ভিসও ঘটনা তদন্ত করে দেখছে বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান।

অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) কর্মকর্তারা বলছেন, ঢাকার সদরঘাট ছাড়ার সময় এমভি অভিযান-১০ লঞ্চে চারশর মতো যাত্রী ছিলেন। তবে উদ্ধার পাওয়া যাত্রীদের দাবি, লঞ্চে ৫শ থেকে ৬শ যাত্রী ছিলেন। বেঁচে যাওয়া একাধিক যাত্রীর অভিযোগ, লঞ্চের মাস্টার সুকানি ও টেকনিশিয়ানদের খামখেয়ালির কারণেই এতবড় দুর্ঘটনা ঘটেছে। লঞ্চের ডেক প্রচ- গরম হয়ে উঠছিল- যাত্রীরা বিষয়টি জানালেও তারা পাত্তা দেননি। দুর্ঘটনার পর তারা দ্রুত সটকে পড়েন।

নৌপুলিশের কর্মকর্তারা বলেছেন, আগুন লাগার পরও চালক লঞ্চটি অন্তত এক ঘণ্টা চালান। এই সময়ে দুই জায়গায় স্টপেজ থাকলেও লঞ্চ থামানো হয়নি। বিআইডব্লিউটিএর উদ্ধারকারী জাহাজ নির্ভীক ঘটনাস্থলে বিকাল ৪টায় পৌঁছায়।

লঞ্চের কেবিন বয় ইয়াসিন জানান, লঞ্চের নিচতলার পেছন দিকে ইঞ্জিনরুমের পাশেই ক্যান্টিন। সেখানে সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয়ে লঞ্চে আগুন ধরে যায়। আগুন দ্রুত ইঞ্জিনরুমে ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে রাখা ১৩ ব্যারেল ডিজেল আগুন বাড়িয়ে দেয়। ইঞ্জিনরুম থেকে আগুন চলে যায় ডেকের দিকে। ইয়াসিন আরও জানান, ডেকের জানালার পর্দায় লেগে তা দোতলায় ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে প্রথমে পারটেক্স বোর্ডের সিলিংয়ে আগুন লাগে। দোতলায় একটা চায়ের দোকান ছিল। ওই দোকানের সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হলে আগুন আরও তীব্র হয়। এভাবে পুরো লঞ্চটি আগুনে পুড়ে যায়।

বেঁচে ফেরা যাত্রীরা জানান, রাত ৩টার দিকে ইঞ্জিন রুম থেকে আসে বিকট শব্দ। কিছু বুঝে ওঠার আগেই আগুনের লেলিহান শিখা লঞ্চে ছড়িয়ে পড়ে। আগুন ও ধোঁয়ায় লঞ্চ আচ্ছন্ন হয়ে পড়লে ডেকে হুড়োহুড়ি লেগে যায়। কেবিন থেকে বেরিয়ে চারদিকে ছোটাছুটি করতে থাকেন যাত্রীরা। ধাক্কাধাক্কি ও পদদলিত হয়ে অনেকে আহত হন। যাত্রীরা দিশেহারা হয়ে চিৎকার করতে থাকেন। প্রাণ বাঁচাতে অনেকে নদীতে ঝাঁপ দেন। অনেকে সাতরে তীরে উঠেছে। কিন্তু নারী ও শিশুদের বেশির ভাগই লঞ্চ ছেড়ে যেতে পারেননি। নিচতলার ইঞ্জিনরুমের কাছাকাছি থাকা যাত্রীরা বেশি দগ্ধ হয়েছেন। যাত্রীরা জানান, আগুন লাগার পর লঞ্চটি ঝালকাঠির লঞ্চঘাট সংলগ্ন দিয়াকুলের অংশে পাড়ে ভেড়ানো হয়।

ফায়ার সার্ভিস ৩৭টি মৃতদেহ উদ্ধার করে ঝালকাঠি পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে। বিকাল পর্যন্ত ঝালকাঠির পৌর মিনি পার্কে মৃতদেহ শনাক্ত করার জন্য রাখা হয়। ঝালকাঠি পুলিশের সূত্রে জানা গেছে, ৪টি মরদেহ স্বজনরা শনাক্ত করতে পেরেছেন। বাকি মরদেহ ঝালকাঠি সদর হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়। স্বজন হারানো মানুষের আর্তনাদে স্থানটি ভারী হয়ে যায়। দূর থেকে ছুটে এসেও অনেক পরিবার তাদের স্বজনকে খুঁজে পায়নি। ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা জানিয়েছেন, অধিকাংশ লাশ এতটাই পোড়া যে, চেহারা দেখে পরিচয় শনাক্ত করা কঠিন হয়ে যাবে। ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে অধিকাংশের মৃতদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করতে হবে।

ঝালকাঠির জেলা প্রশাসক জোহর আলী জানান, বরিশাল থেকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার পথে আরো দুজনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানতে পেরেছেন। ঝালকাঠির সিভিল সার্জন ডা. রতন কুমার ঢালী জানান, পরিবারে কাছে লাশ হস্তান্তরে হাসপাতালের চিকিৎসকরা কাজ করছেন। লঞ্চটি পরিদর্শনে গিয়ে বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার সাইফুল হাসান বাদল বলেন, প্রত্যক্ষদর্শী ও যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলেছি। চালকের বিরুদ্ধে অদক্ষতার অভিযোগ করেছেন তারা। ঘটনা তদন্তে কমিটি করা হবে বিভাগীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে। পরিদর্শনকালে বরিশাল রেঞ্জ ডিআইজি এসএম আক্তারুজ্জামান তার সঙ্গে ছিলেন।

এক হাতে সাঁতরে পাড়ে ওঠেন রবিন

পরিবারের ৯ জনের সঙ্গে বরগুনায় বোনের বাড়ি বেড়াতে যাচ্ছিলেন শারীরিক প্রতিবন্ধী রবিন। তিনি জানান, রাত সাড়ে ৩টায় লঞ্চটিতে আগুন লাগার পর তাকিয়ে দেখেন লঞ্চের মাঝখান থেকে আগুন দ্রুত বেড়ে যাচ্ছে। নিচে স্বজনদের কাছে যাওয়ার চেষ্টা করলে আগুনের কারণে নামতে না পেরে নদীতে ঝাঁপ দেন। তার একটি হাত নেই। এক হাত দিয়ে সাঁতরেই এক সময় তিনি নদীর পাড়ে পৌঁছান। লঞ্চ থেকে ঝাঁপ দেওয়া আরও কয়েকজন বাঁচার আশায় তাকে জড়িয়ে ধরার চেষ্টা করেন। কিন্তু সৌভাগ্যক্রমে তিনি পাড়ে পৌঁছালে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করেন। তার সাথে আসা পরিবারে ৯ সদস্যর মধ্যে ৪ জনকে পাওয়া গেলেও নিখোঁজ রয়েছেন ৫ জন।

ডেক ছিল অতিরিক্ত গরম

মনসুর নামে ৭০ বছরের এক বৃদ্ধ জানান, নলছিটির পরপরই লঞ্চটিতে আগুন লাগে। তখনও এর মাত্রা প্রকট ছিল না। যাত্রীরা লঞ্চটিকে তীরে নিতে স্টাফদের গালমন্দও করেছে। তবে চালক কিছুটা তীরে নিয়ে আবার লঞ্চটিকে নদীর মধ্যে নিয়ে আসেন। এ সময় আগুনের তীব্রতা বেড়ে গেলে বেশিরভাগ যাত্রী নদীতে ঝাঁপ দেয়।

লঞ্চের ডেক অতিরিক্ত গরম ছিল বলে জানান বেঁচে যাওয়া যাত্রী ফাতেমা আক্তার। তিনি বলেন, লঞ্চ ছাড়ার কিছুক্ষণ পরই দোতলার ডেক গরম হতে থাকে। সময় সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে গরমের তীব্রতা বাড়তে থাকে। এ ব্যাপারে অভিযোগ দিলেও কোনো গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। রাত ৩টার দিকে ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে পৌঁছালে হঠাৎ করে ইঞ্জিন রুম থেকে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। মূহূর্তের মধ্যে সারা লঞ্চে আাগুন ছড়িয়ে যায়। কোলের ছয় মাসের বাচ্চাকে নিয়ে পানিতে ঝাঁপ দেই। পরে ধীরে ধীরে তীরে উঠি। লঞ্চের যাত্রী শিমুল তালুকদার জানান, ঝালকাঠি লঞ্চ টার্মিনালের ঠিক আগে গাবখান সেতুর কাছে লঞ্চের ইঞ্জিনরুমে আগুন লেগে যায়। এরপর সেই আগুন পর্যায়ক্রমে ছড়িয়ে পড়ে পুরো লঞ্চে। তিনি নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়ে সাঁতরে তীরে ওঠেন।

বিদেশ থেকে ফিরে ঢাকা হয়ে বরগুনার বাড়িতে ফিরছিলেন যাত্রী সাইদুর রহমান। তিনি জানান, লঞ্চে লাইফ জ্যাকেট ও বয়া ছিল। তবে এত দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়ে যে অধিকাংশ যাত্রী নিরাপত্তা সরঞ্জাম ব্যবহারের সুযোগই পায়নি।

আবদুল্লাহ নামে এক যাত্রী বলেন, আগুন লাগার পর জাহাজটি পাশের চরে ভেড়ানো হলেও নামার দরজা কোনোভাবে খোলা যাচ্ছিল না। এরপর আবার জাহাজটি নদীতে নেওয়া হয়। তখন বহু যাত্রীকে নদীতে ঝাঁপ দিতে দেখা যায়। নামার দরজাটি চরের দিকে ফিরিয়ে খুলে দিলে আরও অনেক যাত্রী বেঁচে ফিরতো।

লঞ্চমালিকের বক্তব্য

বাংলাদেশ লঞ্চ মালিক সমিতির মহাসচিব শহীদুল বলেন, লঞ্চে এমন অগ্নিকা-ের ঘটনা দেশে কখনো ঘটেনি। আগুন এত দ্রুত ছড়িয়ে পড়ল কীভাবে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, আমি সবসময় বলে আসছি, লঞ্চে যেন মোটরসাইকেল ওঠানো না হয় কিন্ত তারপরও লঞ্চে এগুলো তোলা হয়। মোটরসাইকেলে পেট্রোল অকটেন থাকে, যা দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়তে সাহায্য করে।

অভিযান-১০ লঞ্চের মালিক হাম জালাল বলেন, লঞ্চের কেরানি আনোয়ার রাত ৩টা ৫ মিনিটে তাকে ফোন করে আগুন লাগার খবর দেন। আনোয়ার তাকে জানান, দোতলায় একটা বিস্ফোরণ হয়, সঙ্গে সঙ্গে কেবিনে আর লঞ্চের পেছনের বিভিন্ন অংশে আগুন দেখা যায়। তারপর তৃতীয় তলার কেবিন ও নিচতলায় ছড়িয়ে পড়ে আগুন। হাম জালালের দাবি, লঞ্চে অন্তত ২১টি অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র ছিল। কিন্তু এত দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়ে যে এগুলো ব্যবহারের সময় পাওয়া পায়নি। তিনি দুর্ঘটনার জন্য যাত্রীদের দায়ী করে বলেন, যাত্রীদের থেকে আগুন লেগেছে। যার সূত্রপাত দোতলা থেকে হয়েছে। এরপর তিন তলায় ছড়িয়ে পড়ে আগুন। যার কারণে প্রাণহানির ঘটনা বেশি হয়েছে।

ইঞ্জিন থেকে আগুন লাগার বিষয় নাকচ করে দিয়ে হাম জামাল বলেন, মাসখানেক আগে নতুন ইঞ্জিন লাগানো হয়েছে। নতুন ইঞ্জিন লাগানোর পর ঢাকা-বরগুনা রুটে মাত্র চারটি ট্রিপ দেওয়া হয়েছে। লঞ্চে থাকা অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রপাতির মেয়াদও আগামী জানুয়ারি পর্যন্ত আছে বলে দাবি করেন তিনি।

নৌপুলিশের কর্মকর্তা সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, অগ্নিদগ্ধ লঞ্চটির হাসপাতালে আহত যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ইঞ্জিনরুম থেকেই আগুনের সূত্রপাত ঘটেছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ইঞ্জিনরুমের অপারেটর সেখানে ছিলেন না অথবা আগুন লাগার পরে তিনি পালিয়ে গেছেন। তিনি বলেন, অপারেটর নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত সারেং লঞ্চ থামাবেন না বা ঘাটে ভেড়াবেন না। ধারণা করা হচ্ছে সারেং প্রথমে আগুন লাগার খবর জানতে পারেননি। এ কারণে আগুন লাগার পরও দীর্ঘক্ষণ লঞ্চ চলতে থাকে।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com