সোমবার, ০৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৬:৫৫ পূর্বাহ্ন

বিশ্বে প্রথমবারের মতো মানব শরীরে শুকরের হৃৎপিণ্ড প্রতিস্থাপন

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ১১ জানুয়ারী, ২০২২
  • ২৮০ বার

বিশ্বের প্রথম ব্যক্তি হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের একজন রোগীর শরীরে শুকরের হৃদপিণ্ড প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। তবে তার আগে শুকরের হৃদপিণ্ডটি জেনেটিকালি রূপান্তরিত করে নেওয়া হয়। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, সাত ঘণ্টা ধরে চলা পরীক্ষামূলক ওই অস্ত্রোপচারের তিনদিন পরেও ৫৭ বছর বয়সী ডেভিড বেনেট বেশ সুস্থ রয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের বাল্টিমোরে ওই অস্ত্রোপচার হয়।

বেনেটের জীবন বাঁচাতে চিকিৎসকদের তরফে এটাই সর্বশেষ চেষ্টা। তবে দীর্ঘমেয়াদে তিনি কতদিন সুস্থ থাকতে পারবেন, তা এখনো পরিষ্কার নয়।

অস্ত্রোপচারের একদিন আগে বেনেট বলেছিলেন, ‘আমার সামনে বিকল্প দুটা, হয় অস্ত্রোপচার করা অথবা মারা যাওয়া, এটা অন্ধকারে গুলি ছোঁড়ার মতো একটা ব্যাপার, কিন্তু আমার জন্য এটাই শেষ চেষ্টা।’

বিশ্বের প্রথম এই ধরনের অস্ত্রোপচার করার জন্য ইউনিভার্সিটি অফ মেরিল্যান্ড মেডিকেল সেন্টারকে বিশেষ অনুমতি দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের চিকিৎসা তদারকি কর্তৃপক্ষ। কারণ এটা না হলে ওই রোগীর মৃত্যু ছাড়া আর কোন বিকল্প ছিল না।

মানব হৃদপিণ্ড প্রতিস্থাপনের জন্য তিনি উপযুক্ত ছিলেন না। সাধারণত রোগীর স্বাস্থ্য অত্যন্ত দুর্বল হলে চিকিৎসকরা এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন। চিকিৎসকদের যে দল এই অস্ত্রোপচার করেছে, তারা বহু বছর ধরে এ নিয়ে গবেষণা করছিল। এটি সফল হলে সারা বিশ্বের কোটি কোটি মানুষের জীবন বদলে যাবে।

ইউনিভার্সিটি অব মেরিল্যান্ড স্কুল অফ মেডিসিনে এক বিবৃতিতে সার্জন বার্টলে গ্রিফিথ বলেছেন, অঙ্গপ্রত্যঙ্গ স্বল্পতার সমাধানে এই অস্ত্রোপচার বিশ্বকে এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যাবে।

যুক্তরাষ্ট্রে এ ধরনের সংকটে প্রতিস্থাপনের জন্য অপেক্ষা করতে গিয়ে প্রতিদিন ১৭ জন মানুষের মৃত্যু হয়। অঙ্গপ্রত্যঙ্গ প্রতিস্থাপনের অপেক্ষমাণ তালিকায় এক লাখের বেশি মানুষ রয়েছে জানা যায়।

এর আগে ২০২১ সালের অক্টোবরে নিউ ইয়র্কের চিকিৎসকরা ঘোষণা করেন যে, তারা একজন ব্যক্তির শরীরে সফলভাবে শুকরের কিডনি প্রতিস্থাপন করেছেন। তবে যার শরীরে সেটি স্থাপন করা হয়েছিল, তিনি কোমায় চলে গিয়েছিলেন, সেখান থেকে তার সুস্থ হয়ে ওঠার আর কোন আশা ছিল না। যদিও বেনেটের ক্ষেত্রে আশা করা হচ্ছে যে, তিনি আবার সুস্থ স্বাভাবিক জীবনযাপন শুরু করতে পারবেন।

অস্ত্রোপচারের ছয় সপ্তাহ আগে গুরুতর হৃদরোগ শনাক্ত হওয়ার পর থেকে তিনি বিছানায় শুয়ে রয়েছেন এবং তার শরীরে সংযুক্ত একটি যন্ত্র তাকে বেঁচে থাকতে সহায়তা করছে। তবে তাকে এখন সতর্কতার সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। গতকাল সোমবার তিনি নিজে থেকে শ্বাসপ্রশ্বাস নিতে শুরু করেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু পরবর্তীতে কী হবে, তা এখনো পরিষ্কার নয়।

চিকিৎসক দলের সদস্য গ্রিফিথ বলেছেন, তারা খুবই সতর্কতার সঙ্গে বেনেটকে পর্যবেক্ষণ করছেন। অন্যদিকে বেনেটের ছেলে ডেভিড বেনেট জুনিয়র অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে জানিয়েছে, এই মুহূর্তে তারা কিছুই বুঝতে পারছেন না। তথ্যসূত্র : বিবিসি

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com