কিংবদন্তি লেগস্পিনার শেন ওয়ার্নের মৃত্যু ঘিরে তৈরি হয়েছে রহস্য। প্রশ্ন উঠেছে সত্যিই কি হার্ট অ্যাটাকে মারা গিয়েছেন সাবেক অজি স্পিনার, নাকি অন্য কোনো কারণ ছিল? ওয়ার্ন যে প্রচুর মদ পান করতেন তা কারো অজানা নয়। তবে থাইল্যান্ডে ছুটি কাটানোর সময় অ্যালকোহল থেকে নাকি দূরেই ছিলেন তিনি। ওজন কমানোর জন্য করছিলেন ডায়েট। থাই পুলিশ জানিয়েছে, যে হোটেল রুমে ওয়ার্ন মারা যান সেখানকার ফ্লোরে পড়েছিল রক্ত। এছাড়া তার ব্যবহৃত বালিশ ও তোয়ালেতেও লেগেছিল রক্তের দাগ।
সুরাত থানি প্রভিন্সিয়াল পুলিশ কমান্ডার পল মাজ জেন সাতিত পলপিনিত স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে বলেন, সিপিআর শুরু হলে ওয়ার্নের মুখ দিয়ে রক্তমিশ্রিত তরল কফ বেরিয়ে আসে।
গত শুক্রবার হোটেল কক্ষে শেন ওয়ার্নকে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় আবিষ্কার করেন তার বন্ধু অ্যান্ড্রু নিওফিতো। হার্ট অ্যাটাক হয়েছে ধারণা করে, অ্যাম্বুলেন্স না আসা পর্যন্ত টানা ২০ মিনিট ধরে মুখে মুখ লাগিয়ে সিপিআর দিয়েছেন তিনি। কিন্তু লাভ হয়নি।
অ্যাম্বুলেন্সে উঠানোর পরপরই সবাই মোটামুটি নিশ্চিত হয়ে যান যে ওয়ার্ন মারা গেছেন।
ওয়ার্নের ম্যানেজার জেমস আরস্কিন বলেন, ‘তার বন্ধুরা হতবিহ্বল হয়ে পড়ে। তারা বলেছে, বিছানায় অচেতন অবস্থায় পাওয়া যায় ওয়ার্নকে। সিপিআর দেয়ার জন্য তাকে ফ্লোরে নিয়ে আসেন বন্ধুরা। মেঝের কয়েক জায়গায় বমি দেখা গেলেও আঘাতের কোনো চিহ্ন ছিল না।’
থাই আন্তর্জাতিক হাসপাতালের একজন স্টাফ জানান, উত্তর-পূর্ব কো সামুইয়ের একটি বিলাসবহুল রিসোর্ট থেকে শুক্রবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টার দিকে ওয়ার্নের দেহ তাদের ফ্যাসিলিটিতে নেয়া হয়। সংবাদসংস্থা এএফপিকে পুলিশ বলেছে, ‘ঘটনাস্থলে সন্দেহজনক কিছু পাওয়া যায়নি।’
ঘটনার দিন বিকাল ৫:১৫ মিনিটে ওয়ার্নের কক্ষের দরজায় নক করেন নিওফিতো। কারণ ৫টায় তাদের ড্রিংকে যাবার কথা ছিল। তখনই নিওফিতো আবিষ্কার করেন কিছু একটা গড়বড় হয়েছে। আরস্কিন বলেন, ‘টানা ১৪ দিন ধরে সে (ওয়ার্ন) হালকা তরল জাতীয় খাবার খেয়েছে। দিনে তিন থেকে চারবার। আমার মনে হয় বড় ধরনের হার্ট অ্যাটাকের কারণেই তার মৃত্যু ঘটেছে।’
শনিবার পুলিশ জানায়, ওয়ার্নের মেডিকেল রিপোর্ট পর্যবেক্ষণের পর তারা জানতে পেরেছেন, আগে থেকেই বুক ব্যথা ছিল এই ক্রিকেটারের। এছাড়া শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যাতেও ভুগছিলেন তিনি। তবে ওয়ার্নের দেহে কোনো ওষুধের উপস্থিতি পাওয়া যায়নি। অফিসিয়াল অটপসির পর ওয়ার্নের মরদেহ পাঠানো হবে অস্ট্রেলিয়ায়। সেখানেই সম্পন্ন হবে শেষকৃত্য অনুষ্ঠান।