সোমবার, ২০ জানুয়ারী ২০২৫, ১০:১০ পূর্বাহ্ন

টিসিবির তালিকায় উপসচিবের বাবা

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২২
  • ১১০ বার

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে টিসিবির উপকারভোগীর তালিকা তৈরিতে অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ উঠেছে। আদমপুর ইউনিয়নে ৯২৫ জন কার্ডধারীর তালিকায় এক উপসচিবের বাবা, ব্যবসায়ী, বিপুল পরিমাণ জমি-দালানের মালিক, বিত্তশালী ও প্রবাসফেরত ব্যক্তির নামও রয়েছে। এ ছাড়া ইউপি সদস্যদের বাবা, ছেলে, বোনসহ সচ্ছল আত্মীয়স্বজনের নামও তালিকায় আছে। এর ফলে সরকারি এ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন দরিদ্ররা।

সরেজমিন খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ইউনিয়ন পরিষদ থেকে টিসিবি পণ্য বিতরণে নামের তালিকায় রয়েছেন ৭নং ওয়ার্ডের উত্তর ভানুবিল গ্রামের বসবাসকারী পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব প্রদীপ কুমার সিংহের বাবা অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা কৃষ্ণ কুমার সিংহ। পাকা বাড়ি, গাড়ি ও বিস্তর জমির মালিক কৃষ্ণ কুমার প্রথম কিস্তির পণ্য নিয়েছেন। এ ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আবদুল গফুরের ছেলে ধান ব্যবসায়ী আবুল হোসেন, বাবা জহুর উল্যা ও ভাই এরফান আলীর নামও রয়েছে তালিকায়। অথচ ইউপি সদস্য গফুর মিয়ার দুই ছেলে ফ্রান্স ও দুবাই প্রবাসী। আদমপুর বাজারে বড় ওষুধ ব্যবসায়ী কীর্তিজিত সিংহ, নইনারপার বাজারের

মতিউর রহমান, উত্তর ভানুবিল গ্রামের বিত্তশালী মো. গনু মিয়া আছেন সুবিধাভোগীর তালিকায়। দ্বিতলা বাড়ি ও তিন ভাই প্রবাসে, সেই ইউপি সদস্য আবদুল আজিমের ছেলে ফাহাদ আলী, জামাতা জুবের মিয়া ও নিকটাত্মীয় সাহেদা আক্তারের নামও রয়েছে টিসিবির তালিকায়। স্বজনপ্রীতি ও অনিয়মে পিছিয়ে থাকেননি সংরক্ষিত নারী সদস্য গুল নাহার বেগমও। তার ভাই ও স্বজনদের নামও রয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন ওয়ার্ডে আরও অর্ধশতাধিক সচ্ছল ব্যক্তির নাম রয়েছে তালিকায় যারা বিভিন্ন ব্যবসার সঙ্গে জড়িত বা তাদের স্বজনরা প্রবাসে রয়েছেন।

এদিকে দরিদ্রদের বাদ দিয়ে সচ্ছল ব্যক্তিরা টিসিবি কার্ড পাওয়ায় বঞ্চিতদের মধ্য দেখা দিয়েছে ক্ষোভ। স্থানীয় সমাজকর্মী তাজউদ্দিন আহমেদ তাজু, সাদেক হোসেন ও জসিম উদ্দিন বাদশা বলেন, তালিকা তৈরিতে আরও যাচাই-বাছাই ও স্বচ্ছতার প্রয়োজন ছিল। দরিদ্ররা পেলে তাদের উপকার হতো।

উপকারভোগী উপসচিবের বাবা কৃষ্ণ কুমার সিংহ নাম অন্তর্ভুক্তির কথা জানতে চাইলে তিনি স্থানীয় মেম্বারে সঙ্গে কথা বলার উপদেশ দেন। ইউপি সদস্য আবদুল গফুর টিসিবির তালিকায় উপসচিবের বাবা, নিজের ছেলে, বাবা ও ভাইয়ের নাম অন্তর্ভুক্তির বিষয় স্বীকার করে বলেন, আসলে আমি এত সব বুঝিনি, আমার ভুল হয়েছে। সামনে এ রকম আর হবে না। চেয়ারম্যানকে বলে তালিকা থেকে নাম কেটে দেব।

আরেক ইউপি সদস্য আজিম মিয়া বলেন, দরিদ্র অনেকে টাকা দিয়ে পণ্য কিনতে আগ্রহী না হওয়ায় সচ্ছলদের নাম দিতে হয়েছে।

আদমপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদাল হোসেন মেম্বারদের স্বজনপ্রীতির কথা স্বীকার করে বলেন, আমি অনিয়ম পছন্দ করি না। মেম্বারদের তালিকায় কিছুটা স্বজনপ্রীতি হয়েছে, আমি সচ্ছলদের নাম কেটে দেব।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশেকুল হক বলেন, জনপ্রতিনিধিদের দেওয়া তালিকা অনুয়ায়ী কার্ডে স্বাক্ষর করেছি। সেখানে কারা সচ্ছল তা জানি না। এ রকম হলে চেয়ারম্যানকে ওইসব নাম কেটে দেওয়ার জন্য বলে দেব।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com