পাকিস্তানে বন্যায় প্রাণহানি বেড়েই চলেছে। সরকারি হিসাবে গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছে কমপক্ষে ১১৯ জন। এ পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৩৩ জন। সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারে খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে বন্যার পানিতে আটকে পড়া শত শত গ্রামবাসীকে উদ্ধার করা হয়েছে। ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভয়াবহ বন্যায় রাস্তা এবং সেতু ভেঙে পড়েছে। ফলে প্রত্যন্ত অনেক এলাকায় যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। কিছু মানুষ বিপজ্জনক অবস্থার মধ্যে দিয়ে দুদিন ধরে পায়ে হেঁটে নিরাপদ জায়গায় পৌঁছেছেন।
অতিরিক্ত আন্তর্জাতিক সাহায্যের জন্য আবেদন করেছে পাকিস্তান। যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন এবং সংযুক্ত আমিরাতসহ আরও কিছু দেশ এরই মধ্যে সাহায্য পাঠিয়েছে, কিন্তু তা দিয়ে সরকার সামাল দিতে পারছে না।
পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সালমান সুফি বিবিসিকে বলেছেন, আন্তর্জাতিক সাহায্যের জন্য সরকার এখন মরিয়া। এমনিতেই অর্থনীতিতে সংকট চলছে। এরই মধ্যে এই দুর্যোগ বিপদ বাড়িয়ে দিয়েছে। সবচেয়ে বিপর্যয় তৈরি হয়েছে খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে। বৃষ্টির পানির তোড়ে নদীর পাড় ভেঙ্গে বিস্তীর্ণ এলাকা ডুবে গেছে। অল্প সময়ের মধ্যে প্রচুর ঘরবাড়ি হয় বিধ্বস্ত হয়েছে। হাজার হাজার মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে শুকনো জায়গায় পালিয়েছে।
খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের জুনেইদ খান নামে এক যুবক বার্তাসংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘কয়েক বছর ধরে কঠোর পরিশ্রম করে আমরা যে বাড়ি বানিয়েছিলাম, তা চোখের সামনে ডুবে গেল। রাস্তায় দাঁড়িয়ে দেখলাম কীভাবে আমাদের স্বপ্ন পানির নিচে চলে গেল।’
পাকিস্তানে বৃষ্টি নতুন কিছু নয়, কিন্তু মানুষজন বলছেন যে মাত্রার বৃষ্টি তারা এবার দেখছেন তা একেবারেই ভিন্ন। সিন্ধুর প্রাদেশিক সরকারের একজন কর্মকর্তা বিবিসির কাছে এই বন্যাকে ‘বাইবেলে বর্ণিত মহাপ্লাবনের’ সঙ্গে তুলনা করেছেন।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ বলেন, তিন কোটি ৩০ লাখ মানুষ অর্থাৎ জনসংখ্যার ১৫ শতাংশ বন্যার কবলে পড়েছে।