প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতা তোফায়েল আহমেদ এমপিকে নিয়ে কটূক্তি করায় আওয়ামী লীগের বিক্ষোভ প্রতিরোধের মুখে ভোলা ছাড়তে হয়েছে বিএনপি কেন্দ্রীয় নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য হাফিজ ইব্রাহিম।রোববার রাত সাড়ে ১০টায় ভোলা ছাড়তে বাধ্য হন হাফিজ।
এর আগে দুপুরে জেলা বিএনপি অফিসে এক সংবাদ সম্মেলনে হাফিজ ইব্রাহিম প্রধানমন্ত্রী ও তোফায়েল আহমেদকে নিয়ে তীব্র সমালোচনা করেন। এ ঘটনার প্রতিবাদে সন্ধ্যায় জেলা আওয়ামী লীগের আয়োজনে শহরে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। একপর্যায়ে রাত সাড়ে ৮টায় শহরের প্যাপিলন আবাসিক হোটেলের সামনে অবস্থান নেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। হোটেল ঘেরাও করে রেখে হাফিজ ইব্রাহিমের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকেন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা।ওই হোটেলেই ছিলেন হাফিজ ইব্রাহিম।
জানা গেছে, বিএনপি নেতা হাফিজ ইব্রাহিম দৌলতখান ও বোরহানউদ্দিন উপজেলায় দলীয় দুই দিনের কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়ে ভোলায় আসেন। সকালে ওই দুই উপজেলায় হাফিজ ইব্রাহিমের প্রবেশ নিষিদ্ধ করে তাকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন সংগঠনের কয়েক হাজার নেতাকর্মী রাস্তায় অবস্থান নেন। ফলে হাফিজ ইব্রাহিমকে সভা-সমাবেশ করতে নিষেধ করে প্রশাসন। ওই নির্দেশ উপেক্ষা করে তিনি বোরহানউদ্দিনে যেতে চাইলে পুলিশ যেতে দেয়নি।পরে তার বহর নিয়ে দলীয় অফিসে অবস্থান করেন এবং সেখানে সংবাদ সম্মেলন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে হাফিজ ইব্রাহিম প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতা তোফায়েল আহমেদ এমপিকে নিয়ে কটূক্তি করেন।এর প্রতিবাদে রাতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বিক্ষোভ প্রতিরোধের মুখে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন হাফিজ ইব্রাহিমসহ তার সমর্থিত দলীয় নেতারা। এ সময় ভোলা জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক জহুরুল ইসলাম নকিব রাতের মধ্যে হাফিজ ইব্রাহিমকে ভোলা ত্যাগের আলটিমেটাম দেন।পরে পরিস্থিতি সামাল দিতে ব্যাপক পুলিশ অবস্থান নেয়।
একপর্যায়ে হাফিজ ইব্রাহিম প্রশাসনের সহযোগিতা চাইলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আলী সুজা ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ফরহাদ সরদার, ওসি এনায়েত হোসেনসহ পুলিশের একটি টিম হাফিজ ইব্রাহিমের সঙ্গে কথা বলেন। রাত সাড়ে ১০টায় হাফিজ ইব্রাহিম হোটেল থেকে বের হন ও পুলিশ পাহারায় ইলিশা হয়ে লঞ্চে করে ঢাকায় ফিরে যান।এ সময় জেলা বিএনপি সম্পাদক হারুন অর রশিদ টুমেন, জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক, উপজেলা বিএনপির সম্পাদক মো. হেলাল উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।
ভোলা জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক জহুরুল ইসলাম নকিব বলেন, বিএনপি নেতা হাফিজ ইব্রাহিম ভোলা এসেছিলেন।তিনি বিএনপি অফিসে সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে অশালীন ভাষায় কথা বলেছেন।তিনি আমাদের প্রবীণ নেতা তোফায়েল আহমেদকে নিয়ে অশালীন ভাষায় কথা বলেছেন।এটি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা মেনে নিতে পারেনি।নেতাকর্মীরা বিক্ষোভে ফেটে পড়ে এবং তাকে রাতের মধ্যে ভোলা ছাড়ার আলটিমেটাম দেওয়া হয়।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আলী সুজা ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ফরহাদ সরদার জানান, বিক্ষুব্ধ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সরিয়ে বিএনপি নেতা হাফিজ ইব্রাহিমকে কঠোর নিরাপত্তায় হোটেল থেকে ঢাকাগামী লঞ্চে তুলে দেওয়া হয়েছে।পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক রয়েছে।