বলে হয়ে থাকে শাবানা, ববিতাদের পর বাংলা সিনেমায় সবচেয়ে জনপ্রিয় অভিনেত্রী শাবনূর। এটা কথার কথা না, বাস্তবতা। তিনি তার সময়ের সেরা এবং পরবর্তী প্রজন্মের কাছে আইডল। তার অভিনয়ের গুণমুগ্ধ ভক্ত শুধু দর্শক নয়, বর্তমান সময়ের চলচ্চিত্রের অনেক তাকরা। শাবনূর অভিনয়ে নিয়মিত নয় অনেক বছর কিন্তু এখনো তার অভিনীত সিনেমা টিভি চ্যানেলগুলোতে প্রচার হলে দর্শক মুগ্ধ হয়ে উপভোগ করেন। নিজেকে এমন উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছেন যে তার সমসাময়িক অভিনেত্রীরাও স্বীকার করছেন যে, শাবনূর এক এবং অপ্রতিদ্বন্দ্বী। এখনো ভক্ত-দর্শকের মধ্যে তাকে নিয়ে কৌতূহলের শেষ নেই। ভক্তদের সব সময়ই জিজ্ঞাসা থাকে, তিনি কেমন আছেন, কী করছেন! শাবনূর বর্তমানে অস্ট্রেলিয়াতেই আছেন। করোনার আগে থেকেই সেখানে আছেন তিনি।
বাংলাদেশের সিনেমায় শাবনূরের যাত্রা শুরু হয়েছিল সিনেমার ক্যাপ্টেন এহতেশামের হাত ধরে ‘চাঁদনী রাতে’ সিনেমায় নায়িকা হওয়ার মধ্য দিয়ে। এই সিনেমায় তার বিপরীতে ছিলেন নায়ক শাব্বির। সিনেমাটি সেন্সর ছাড়পত্র পেয়েছিল ১৯৯৩ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর। এরপর ১৯৯৩ সালের ১৫ অক্টোবর মুক্তি পায় ‘চাঁদনী রাতে’। কিন্তু ব্যবসায়িকভাবে সফলতার মুখ দেখেনি ‘চাঁদনী রাতে’। পরে ১৯৯৪ সালের ২২ এপ্রিল মুক্তি পায় বাদল খন্দকার পরিচালিত ‘দুনিয়ার বাদশা’ সিনেমাটি। এতে নাম ভূমিকায় অভিনয় করেন গুণী অভিনেতা হুমায়ূন ফরীদি। এতে আরও অভিনয় করেন শাহনাজ, শাবনূর, নবাগত শাহরুখ শাহ। এতে আব্দুল্লাহ চরিত্রে অভিনয় করেন চিত্রনায়ক আমিন খান। এই সিনেমা ব্যবসায়িকভাবে বেশ সফল হয়। আলোচনায় চলে আসেন শাবনূর। আর এর পরপরই অর্থাৎ ‘দুনিয়ার বাদশা’র সাফল্যের ধারাবাহিকতার মধ্য দিয়েই ঠিক এক মাস পর ১৯৯৪ সালের ২২ মে মুক্তি পায় জহিরুল হক পরিচালিত ‘তুমি আমার’ সিনেমাটি। এতে শাবনূরের সঙ্গে প্রথম সালমান শাহ অভিনয় করেন। সিনেমাটি মুক্তির পর তরুণ দর্শক হৃদয়ে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে। একই সময়ে ‘শঙ্খনীল কারাগার’,‘ হত্যা’,‘ নতিজা’,‘ দুঃসাহস’ ও ‘বালিকা হলো বধূ’ মুক্তি পেলেও দর্শকের ভালোবাসায় আলোচনার শীর্ষে চলে আসে সালমান শাবনূরের ‘তুমি আমার’। আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি শাবনূরকে। একই বছরের ১২ আগস্ট মুক্তি পায় শাহ আলম কিরণের ‘রঙ্গিন সুজন সখি’ ও ৯ সেপ্টেম্বর মহম্মদ হাননানের ‘বিক্ষোভ’ সিনেমা দুটি। জুটি হিসেবে সেই সময় সালমান-শাবনূর তুমুল জনপ্রিয়তা লাভ করেন। পরের বছর অর্থাৎ ১৯৯৫ সালের ১১ মে মুক্তি পায় সালমান শাবনূরের আব্দুল খালেক পরিচালিত ‘স্বপ্নের ঠিকানা’ সিনেমাটি। এটি এই জুটিকে আরও অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যায়। পরে এই জুটির ২২ সেপ্টেম্বর মুক্তি পায় দীলিপ সোমের ‘মহামিলন’। ১৯৯৬ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি মুক্তি পায় শাহ আলম কিরণের সালমান-শাবনূর জুটির ‘বিচার হবে’। ১৯৯৬ সালের ২১ জুন মতিন রহমানের ‘তোমাকে চাই’ সিনেমায় সালমান শাবনূরের অভিনয় প্রেমিক তরুণ হৃদয়ে ঝড় তোলে সারা বাংলাদেশে। ’৯৬ সালের ১২ জুলাই মুক্তি পায় বাদল খন্দকারের ‘স্বপ্নের পৃথিবী’। জীবদ্দশায় সালমান শাহ শাবনূরের সঙ্গে এই সিনেমাটিই সর্বশেষ মুক্তি পাওয়া দেখতে পেরেছিলেন।