সাকিব আল হাসান ও তামিম ইকবাল খান এখন আর বন্ধু নেই, ফাটল ধরেছে দু’জনের সম্পর্কে। এক সময় বন্ধুত্বের উপমা হয়ে থাকা দু’জনের মাঝে ক্রমশ বেড়ে চলেছে দূরত্ব, কথা বলাও প্রায় বন্ধ। ফলে বিশৃঙ্খলা ছড়িয়ে পড়েছে দলের মাঝে, অস্বাস্থ্যকর হয়ে উঠেছে ড্রেসিংরুমের পরিবেশ।
গুঞ্জন ছিল অনেক আগে থেকেই, করোনাকালীন সময়ে তামিমের লাইভ শো -এ সাকিবের না থাকা সেই গুঞ্জন আরো জোরালো করে। যদিও দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে দু’জনকে একাধিকবার একসাথে সময় কাটাতে দেখা গেছে, তবে সম্পর্কটা আবারো তেঁতো হয়ে উঠেছে। এতদিন বিষয়টা নিয়ে চুপ থাকলেও, এবার স্বীকারই করে নিলো বিসিবি।
জনপ্রিয় ক্রিকেট ওয়েবসাইট ক্রিকবাজের সাথে আলাপে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন অনেকটা খোলামেলাই কথা বলেছেন বিষয়টা নিয়ে। সরাসরিই দাবি করলেন, দলের ড্রেসিংরুমের পরিবেশ স্বাস্থ্যকর নয়। দু’জনের এই দ্বন্দ্ব সমাধান করতে গিয়েও ব্যর্থ তিনি, কোনো সমাধানও খুঁজে পাচ্ছেন না বিসিবি বস।
পাপনের ভাষায়, ‘এটি একটি স্বাস্থ্যকর ড্রেসিংরুম নয়। এই ব্যাপারটা (সাকিব-তামিমের তেঁতো সম্পর্ক) এমন নয় যে আমি সমাধানের চেষ্টা করিনি। আমি তাদের দু’জনের সাথেই কথা বলেছি। কিন্তু আমি বুঝতে পেরেছি যে এই মুহূর্তে তাদের মধ্যকার এই সমস্যাগুলো নিষ্পত্তি করা সহজ নয়।’
তবে পরিস্থিতি সামাল দিতে দু’জনকেই আলাদাভাবে বার্তা দেয়া হয়েছে বলেও জানান পাপন।
যেখানে পাপন বলেন, ‘তাদের উভয়কে একটি বার্তা দেয়া হয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে- আমরা জানি না আপনাদের মধ্যে কী চলছে, তবে আপনারা যে ম্যাচে বা সিরিজ খেলবেন, সেখানে যেন এই সমস্যাগুলো সামনে আসতে পারে না। দু’জনেই আশ্বাস দিয়েছেন যে এটি খেলার সময় থাকবে না।’
এদিকে তাদের সম্পর্ক কেন্দ্র করে ক্রিকেটারদের মাঝে গ্রুপিং হয় বলেও জানান পাপন। তিনি উল্লেখ করেন, ‘বাংলাদেশ ক্রিকেটের এই মুহূর্তে সবচেয়ে বড় সমস্যা এই গ্রুপিং, এটাই বাস্তবতা। আর অন্য কিছুতে সমস্যা নেই। আমি শুধুমাত্র এই গ্রুপিং সম্পর্কে ভীত এবং আমি কিছুদিন আগেই এ সম্পর্কে জানতে পারি। বিশ্বকাপেও যা দেখেছি শুনেছি তা বিশ্বাস করতে পারছি না, এটা কিভাবে সম্ভব!’
তবে ইংল্যান্ড সিরিজ থেকেই ড্রেসিংরুমের স্বচ্ছ পরিবেশ ধীরে ধীরে ফিরবে বলে আশাবাদী বিসিবি সভাপতি। তিনি বলেন, “তাদের মাঠে এবং ড্রেসিংরুমেও কথা বলতে হয়। ড্রেসিংরুমের পরিবেশ খারাপ ছিল, তবে কিছুটা উন্নতি হয়েছে। ইংল্যান্ড সিরিজ থেকে আমি অন্তত ড্রেসিংরুমে পরিবর্তন করতে চাই।’
পাপন আরো বলেন, ‘তারা বাইরে যা করে তা আমার জন্য চিন্তার বিষয় নয়। তবে সুন্দর ভবিষ্যৎ দেখতে হলে আমাদের এর অবসান ঘটাতেই হবে। কারণ একটা জিনিস সবারই বোঝা দরকার, তা হলো দলে গ্রুপিং করার সুযোগ নেই।’