শেষ বেলায় অবসাদ মাখা ঘন কালো সন্ধ্যাটা নামতেই হয় বুঝি? না চাইলেও হবে। এটাই তো চিরাচরিত। সেই রীতি মেনেই হয়তো এবার সায়াহ্ন নামতে যাচ্ছে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ক্যারিয়ারে। হয়তো শেষ হতে যাচ্ছে জাতীয় দলের সাথে দীর্ঘ ১৬ বছরের পথচলা।
টেস্ট থেকে আগেই অবসর নিয়েছিলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, অধিনায়কত্ব ছাড়ার পর ব্রাত্য হয়েছে টি-টোয়েন্টি দলেও। এবার তাকে ছাড়াই একের পর এক ওয়ানডে খেলছে বাংলাদেশ। তাছাড়া ফর্মও কথা বলছে না তার পক্ষে। ফলে একটা প্রশ্ন ভেসে বেড়াচ্ছে ক্রিকেটপাড়ায়, তবে কি শেষ বাংলাদেশ ক্রিকেটে শেষ মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ অধ্যায়?
আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ঘরেডর মাঠে সিরিজে জায়গা হয়নি জাতীয় দলে, আবারো লাল-সবুজ জার্সি গায়ে চাপানোর অপেক্ষা আরো বাড়লো ফের। আয়ারল্যান্ডে বিপক্ষেই আগামী মাসে ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত ওয়ানডে সিরিজের দলেও জায়গা হয়নি এই অলরাউন্ডারের। তাকে ছাড়াই ১৫ সদস্যের দল ঘোষণা করেছে বিসিবি।
বলা অনেকটা বিস্ময়করভাবেই গত আয়ারল্যান্ড সিরিজের ঘোষিত দলে জায়গা হয়নি মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের। তারপর থেকেই একটা প্রশ্ন ভেসে বেড়াতে শুরু হয়েছে ক্রিকেটপাড়ায়, তবে কি শেষ বাংলাদেশ ক্রিকেটে শেষ মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ অধ্যায়? ফর্মও যে কথা বলছে না তার পক্ষে।
সর্বশেষ ৬ ওয়ানডেতে ৩০ গড়ে ১৮২ রান করলেও স্ট্রাইকরেট খাপ খাচ্ছিল না আধুনিক ক্রিকেটে। মাত্র ৬৯ স্ট্রাইকরেটে ব্যাট করেছেন এই সময়ে। কোনো ম্যাচেই তিন অংক স্পর্শ করেনি স্ট্রাইকরেট। যা নম্বর ছয় বা সাতে ব্যাট করা যেকোনো ব্যাটারের জন্য লজ্জাজনক বটে। সেইসাথে ফিল্ডিংয়ে দূর্বলতাও দেখা মিলছে তার। সহজ সুযোগও হাতছাড়া করেছেন অহরহই৷ শারীরিক ভাষাই যেন বদলে গেছে, হয়তো বয়সের ভারে!
তবে তার দলে না থাকার ব্যাপারে প্রধান নির্বাচক বলেছিলেন, বিশ্রাম দেয়া হয়েছে দেশের ক্রিকেটের ক্রান্তিলগ্নের এই মহানায়ককে। একাধিকবার বিষয়টা নিয়ে দায়িত্বশীলরা জানিয়েছিলেন, অন্যদের প্রস্তত করতেই মাহমুদউল্লাহকে দূরে রাখা। প্রধান কোচ হাথুরুসিংহেও বলেছিলেন একই কথা। তিনি বলেছিলেন-
‘আমরা বিশ্বকাপের আগে খেলোয়াড়দের পুল বড় করতে চাচ্ছি, যাতে করে বিশ্বকাপের আগে কিছু ঘটলে আমাদের কাছে যথেষ্ট খেলোয়াড় থাকে, যাদের আমরা নির্দিষ্ট কোনো কাজ করতে বা ভূমিকা পালন করতে দেখেছি। যারা ভূমিকাটা পালন করতে পারবে, তাদের সুযোগ দেয়ার চেষ্টা করছি। রিয়াদ এখনো বিবেচনার মধ্যে আছে। আমরা এভাবেই দেখছি ব্যাপারটা।’
তবে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে খেলতে ইংল্যান্ড সফরে মাহমুদউল্লাহ না থাকায় এই ইস্যুতে সংবাদ সম্মেলনে প্রধান প্রশ্ন করা হলে, প্রধান নির্বাচল উত্তর না দিয়ে চলে যাওয়ায় সন্দেহ আরো ঘনীভূত হয়েছে।
যদিও ওয়ানডে দল থেকে দূরে রাখার কারণ হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে বিশ্রাম শব্দ, তবে দুইয়ে দুইয়ে চার মেলালে বিষয়টা এখন অনেকটাই স্পষ্ট। মনে থাকা সব শঙ্কার উত্তর সময়ই বলে দেবে। তবে এমনটাই যদি হয়, তবে পরিসমাপ্তি ঘটবে দেশের ক্রিকেটে আরো একটা যুগের।