রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:০০ পূর্বাহ্ন

ট্রাম্পের মুখে পাকিস্তানের প্রশংসা : অস্বস্তিতে ভারত

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২০
  • ২৭০ বার

ভারতের সঙ্গে সুর মিলিয়ে সন্ত্রাসের ‘সাপ মারার’ কথা বললেন বটে, তবে ‘লাঠি যাতে না-ভাঙে’, সে দিকেও সতর্ক রইলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ‘লাঠি’ মানে পাকিস্তানের সঙ্গে আমেরিকার সম্পর্ক। ভারত-পাকিস্তান তিক্ততার কথা মাথায় রেখে কার্যত ভারসাম্যের পথ নিলেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট।

এই ভারসাম্য অবশ্য কিছুটা আলাদা। অতীতের অন্য মার্কিন কর্তাদের মতো ভারত সফরে এলেই এক বার পাকিস্তান ঘুরে যেতে হবে— এমন ভারসাম্যে আস্থা রাখেননি ট্রাম্প। দেশ থেকে সোজা এসেছেন ভারতে। দেশে ফিরবেনও ভারত থেকেই। ভারত-পাকিস্তান কূটনীতির লড়াইয়ে এই প্রথম পর্বে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এগিয়ে থাকলেও, সন্ত্রাস দমনের প্রশ্নে ট্রাম্প সোমবার আহমদাবাদের মোতেরা স্টেডিয়ামে যেভাবে মার্কিন-পাকিস্তান সহযোগিতার প্রসঙ্গ টেনেছেন, ভারতের কাছে তা অপ্রত্যাশিত ছিল।

মোদি সরকারের প্রথম পর্বে সীমান্ত পার হয়ে দু’বার সার্জিকাল স্ট্রাইক করেছে ভারত। নয়াদিল্লির যুক্তি ছিল, আত্মরক্ষার্থেই প্রতিবেশী দেশে ঢুকে অভিযান চালাতে বাধ্য হয়েছে ভারত। নয়াদিল্লির সেই দাবিকে সমর্থন করে ট্রাম্প বলেন, ‘‘প্রত্যেক দেশের নিজের সীমান্তকে সুরক্ষিত করা ও সীমান্তে গতিবিধি নিয়ন্ত্রণের অধিকার রয়েছে। ভারত ও আমেরিকা সন্ত্রাস দমনে একযোগে কাজ করতে বদ্ধপরিকর।’’

ট্রাম্প উল্লেখ করেন, ভারত-আমেরিকা দু’দেশই দীর্ঘ সময় ধরে মৌলবাদী ইসলামিক সন্ত্রাসের শিকার। এবং সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আমেরিকা পুরোপুরি ভারতের পাশে আছে। কিন্তু এর পরপরই তিনি বলেন, ‘‘পাকিস্তানের সঙ্গেও আমাদের (আমেরিকার) সম্পর্ক খুব ভালো।

পাকিস্তান সীমান্তে ‘জঙ্গি’ দমনে পাক-মার্কিন সেনা একযোগে কাজ করছে। বড় মাপের ধরপাকড় হয়েছে। আমাদের আশা এর ফলে দক্ষিণ এশিয়ায় উত্তেজনা কমবে। বৃদ্ধি পাবে স্থায়িত্ব ও পারস্পরিক ঐক্য।’’

‘হাউডি মোদির’ প্রতিদান হিসেবে বিপুল অর্থ ঢেলে আয়োজন করা ‘নমস্তে ট্রাম্প’-এর মঞ্চে পাকিস্তানের এমন প্রশংসা মোদি সরকারের অস্বস্তি বাড়াল বলেই মনে করা হচ্ছে। ট্রাম্পের বক্তব্যে স্পষ্ট, ভারত সফরে এসে কাশ্মিরের মতো বিতর্কিত প্রসঙ্গ নিয়ে মুখ না-খুললেও, পাকিস্তানকে রাজনৈতিকভাবে একঘরে করার পক্ষপাতী নন তিনি। কূটনীতিকরা মনে করছেন, চলতি বছরেই ভোটের আগে আফগানিস্তান থেকে সেনাবাহিনী সরাতে চায় মার্কিন প্রশাসন। সে ক্ষেত্রে পাক-আফগান সীমান্তে শান্তি বজায় রাখতে পাকিস্তান সেনাবাহিনী যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে চলেছে, সেটা বিলক্ষণ জানে পেন্টাগন। তাই সেনা সরানোর আগে পাকিস্তানকে চটানোর ঝুঁকি নিতে রাজি নয় ট্রাম্প প্রশাসন। সে কারণেই ট্রাম্পের বক্তৃতায় ঠাঁই পেয়েছে উপমহাদেশে রাজনৈতিক ভারসাম্য বজায় রাখার চেষ্টা।

পাকিস্তান-ঘনিষ্ঠতা নিয়ে কংগ্রেসকে নিয়মিত সমালোচনা করে থাকে বিজেপি।। সোমবার মোদির ‘নমস্তে ট্রাম্প’ মঞ্চে মার্কিন প্রেসিডেন্টের মুখে পাকিস্তানের প্রশংসা শুনে পাল্টা ঝাঁপিয়ে পড়েছে কংগ্রেস। দলের এক নেতার প্রশ্ন, ‘‘সন্ত্রাস প্রশ্নে ভারত-সহ গোটা বিশ্ব পাকিস্তানকে একঘরে করতে মরিয়া। অথচ ট্রাম্প এসে উল্টে শংসাপত্র দিয়ে গেলেন ইসলামাবাদকে! ইমরান খান সরকার কী এমন করেছে, যার জন্য এই ধরনের প্রশংসা করা হল? তা হলে তো পাকিস্তানকে এফএটিএফের ধূসর তালিকা থেকেই সরিয়ে দেয়া হতো। তা তো হয়নি। আসলে ভারত সরকারের অর্থে নিজের প্রচারের পাশাপাশি পাকিস্তানের প্রশংসা করে গেলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।’’
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com