লখনৌ সুপার জায়ান্টস বনাম রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর ম্যাচ শেষে আবার বিবাদে জড়ালেন বিরাট কোহলি ও গৌতম গম্ভীর। মাঠের ধারে উত্তপ্ত বাদানুবাদ হলো দু’জনের মধ্যে। পরিস্থিতি সামলালেন দু’দলের বাকি ক্রিকেটার ও সাপোর্ট স্টাফরা।
ঘটনার সূত্রপাত ম্যাচ শেষে দু’দলের ক্রিকেটারদের হাত মেলানোর সময়। ম্যাচ চলাকালীন লখনৌর একটা করে উইকেট পড়ার পরে নিজের স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে উল্লাস করছিলেন কোহলি। লখনৌর ডাগআউটের দিকে তাকিয়ে মুখে আঙুল দিয়ে চুপ করে থাকার ভঙ্গি দেখান। স্ত্রী অনুষ্কা শর্মার দিকে চুমুও ছুড়তে দেখা যায় তাকে। আফগানিস্তানের ক্রিকেটার নবীন উল হক আউট হওয়ার সময়ও উত্তেজিত হয়ে উল্লাস করেন কোহলি। টুপি খুলে মাটিতে ছুড়ে ফেলেন। সেটা হয়তো ভালোভাবে নেননি নবীন।
ম্যাচের শেষে নবীনের সাথে বিরাটকে হাত মেলাতে দেখা যায়। ওইসময় বিরাট বা নবীন কোনো মন্তব্য করেন। তারপরই দু’জনের মধ্যে একপ্রস্থ ঝামেলা হয়। শেষে বিরাটের হাত আগ্রাসীভাবে ছেড়ে দেন নবীন। দু’দলের খেলোয়াড়রা তাদের সরিয়ে নিয়ে যান।
তারই মধ্যে লখনৌর তারকা কাইল মায়ার্সের সাথে কথা বলতে থাকেন বিরাট। দু’জনে হাঁটতে হাঁটতেই কথা বলছিলেন। ওইসময় গম্ভীর চলে আসেন। মায়ার্সের হাত ধরে সরিয়ে নিয়ে যান লখনৌর হেড কোচ। ওই সময় গম্ভীরকে কিছু বলতে দেখা যায়। তবে কোহলির উদ্দেশ্যে কিছু বলেছিলেন কিনা, তা অবশ্য স্পষ্ট নয়। প্রাথমিকভাবে গম্ভীর এবং কোহলির কোনো কথা কাটাকাটিও হয়নি। বিরাট যেদিকে হাঁটছিলেন, তিনি সেদিকে চলে যান। গম্ভীররা উল্টা দিকে চলে যান। কিন্তু তারপরই শুরু হয় ঝামেলা।
ভিডিওয় দেখা গেছে, গম্ভীর আচমকা ফিরে তাকান। সম্ভবত তাকে কিছু বলা হয়েছিল। পাল্টা তিনিও উত্তেজিতভাবে কিছু বলতে থাকেন। লখনৌর অধিনায়ক কেএল রাহুল, কৃষ্ণাপ্পা গৌতমরা হেড কোচকে আটকানোর চেষ্টা করলেও কোনো লাভ হয়নি। বিরাটের দিকে তেড়ে যান গম্ভীর। পালটা তেড়ে আসেন বিরাটও। একেবারে মুখোমুখি হয়ে দু’জনকে উত্তেজিতভাবে কথা বলতে দেখা যায়। কী বলছিলেন তারা, তা স্বভাবতই বোঝা যায়নি। বিরাটকে দেখে মনে হচ্ছিল যে তিনি কিছু বোঝানোর চেষ্টা করছেন। সম্ভবত আত্মপক্ষ সমর্থনে কিছু বলছেন। পাল্টা গম্ভীর কিছু প্রশ্ন ছুড়ছেন এবং নিজের অবস্থান সঠিক বলে জানাচ্ছেন। সেইসবের মধ্যেই তাদের দু’জনকে সরিয়ে নিয়ে যান দুই দলের অন্যান্য খেলোয়াড় এবং সাপোর্ট স্টাফ।
পরিস্থিতি উত্তপ্ত হচ্ছে দেখে সেখানে এসে উপস্থিত হন দু’দলের বাকি ক্রিকেটার ও সাপোর্ট স্টাফরা। কোহলি ও গম্ভীর দু’জনেই দিল্লির। লখনৌর স্পিনার অমিত মিশ্র ও সহকারী কোচ বিজয় দাহিয়াও দিল্লির হয়ে খেলেছেন। সে কারণে তারা কোহলি, গম্ভীরকে ভালোভাবে চেনেন। তারাই বেশি উদ্যোগী হয়ে দু’জনকে আলাদা করেন। লখনৌর অধিনায়ক লোকেশ রাহুলও ছিলেন সেখানে। কোহলিকে সরিয়ে নিয়ে যান আরসিবির অধিনায়ক ফ্যাফ ডুপ্লেসি।
কিন্তু সেখানেই সব থেমে যায়নি। তিনি যে গম্ভীরের কথা ভালোভাবে নেননি সেটা কোহলির চোখমুখ দেখেই বোঝা যাচ্ছিল। বাউন্ডারির ধারে দাঁড়িয়ে রাহুলের সাথে অনেকক্ষণ কথা বলেন তিনি। ঠিক ওই সময় সেখানে উপস্থিত হন লখনৌর মালিক সঞ্জীব গোয়েনকা। তার সাথে অবশ্য হাত মেলান কোহলি।
কোহলির সাথে গম্ভীরের বিবাদ এই প্রথম হয়নি। এর আগে গম্ভীর যখন কলকাতা নাইট রাইডার্সের অধিনায়ক ছিলেন তখনো দু’জনের মধ্যে মাঠে বিবাদ হয়েছে। একে অপরের দিকে তেড়ে গিয়েছেন তারা। এমনকি বেঙ্গালুরুকে হারিয়ে ডাগআউটে চেয়ারে লাথিও মারতে দেখা গেছে গম্ভীরকে। এত বছর পরও সেই বিবাদ কমেনি। দেখা হলেই চোখ রাঙানি লেগে রয়েছে দুই ক্রিকেটারের মধ্যে।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা ও হিন্দুস্তান টাইমস