সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৫১ অপরাহ্ন

বড় ভূমিকম্পের আশঙ্কা যেকোনো সময়

এনবিডি নিউজ ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : রবিবার, ৭ মে, ২০২৩
  • ৬৪ বার

বাংলাদেশের ভেতরে ও এর সীমান্তের কাছাকাছি রয়েছে ৫টি সক্রিয় ভূ-চ্যতি অঞ্চল বা ফল্ট জোন। এসব ফল্ট জোনে যেকোনো সময় হতে পারে বড় ধরনের ভূমিকম্প। এ ফল্ট জোনগুলো বগুড়া ফল্ট জোন, ত্রিপুরা ফল্ট জোন, ডাউকি ফল্ট জোন, আসাম ফল্ট জোন এবং শিলং মালভূমি ফল্ট জোন। এই ফল্ট জোনগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে বেশি বিপজ্জনক হতে পারে ডাউকি ফল্ট জোন। এই ফল্ট জোনগুলোতে অতীতে বড় ধরনের ভূমিকম্প ঘটে গেছে। কলকাতা, আসাম ও ত্রিপুরা এই তিনটি অঞ্চল ভূমিকম্পপ্রবণ বলে মনে করেন বিশেজ্ঞরা। বাংলাদেশ এই তিনটি অঞ্চলের সাথে সংযুক্ত বলে বাংলাদেশের জন্য অপেক্ষা করছে ভূমিকম্পের বিপদ। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক আব্দুল্লাহ আল জামান ও নুসরাত জামান মনিরার গবেষণাপত্রে এসব উঠে এসেছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সিলেটের কাছাকাছি ডাউকি ফল্ট জোনটি নিয়ে বেশি চিন্তার কারণ আছে। সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় দেখা গেছে প্রায় ২৫০ কিলোমিটারের সাবডাকশন (মহাসাগরীয় প্লেট মহাদেশীয় প্লেটের উপরে উঠে যেতে চেষ্টা করলে প্রক্রিয়াটিকে সাবডাকশন বলে) জোনের অস্তিত্ব রয়েছে। সাবডাকশন জোনে ভবিষ্যতে ৮.২ থেকে ৯ মাত্রার ভূমিকম্প হতে পারে। সাবডাক জোনের গতিবিধি লক্ষ্য করতে বিজ্ঞানীরা স্যাটেলাইটের সাথে সংযুক্ত দুই ডজন গ্রাউন্ড পজিশনিং (জিপিএস) যন্ত্র স্থাপন করে এবং অতীতের ১০ বছরের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখিয়েছেন যে, বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চল এবং পূর্ব ভারতের কিছু অঞ্চলকে পশ্চিম মিয়ানমারের দিকে তির্যকভাবে ঠেলে দেয়া হচ্ছে। এই গতি বছরে ৪৬ মিমি বা প্রায় ১.৮ ইঞ্চি। ভারত এবং মিয়ানমারের জিপিএস ড্যাটা একত্র করার পর দেখা যায় যে মিয়ানমার, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে দূরত্ব কমে আসছে বছরে ১৭ মিলিমিটার বা এক ইঞ্চির দুই-তৃতীয়াংশ। ভূপৃষ্ঠের কয়েক কিলোমিটার নিচে চলমান এই প্রক্রিয়াটি চলমান দীর্ঘ দিন থেকে। সবচেয়ে অস্বস্তিকর কারণ হলো বাংলাদেশের অন্যতম ঘনবসতিপূর্ণ অঞ্চল ঢাকাও এই অঞ্চলের আওতায় রয়েছে। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সংঘটিত কিছু ঐতিহাসিক ভূমিকম্পের তথ্য ছাড়া ৫০০ বছর আগের ভূমিকম্পের কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই।

সিলেট, চট্টগ্রাম ও ঢাকায় ১৫৪৮, ১৬৪২, ১৬৬৩, ১৭৬২, ১৭৬৫, ১৮১২, ১৮৬৫ এবং ১৮৬৯ সালে বড় ধরনের ভূমিকম্প হয়েছে বলে কিছু তথ্যে উল্লেখ আছে। কিন্তু কত ম্যাগনিচুডে এসব ভূমিকম্প হয়েছে তার কোনো তথ্য নেই। কেবল অনুমান করে বিশেষজ্ঞরা এর প্রভাব সম্বন্ধে বলছেন। ১৬৬৩ সালের আসাম ও সিলেটের ভূমিকম্প না কি প্রায় আধা ঘণ্টা স্থায়ী ছিল। ১৭৬৫ সালের ভূমিকম্পে চট্টগ্রামের কাছে ফাউল দ্বীপ ২.৭৪ মিটার উপরে উঠে গিয়েছিল। একই সাথে চেদুয়া দ্বীপের উত্তর-পশ্চিম অংশ সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৬.৭১ মিটার উপরে উঠে গিয়েছিল এবং সে সময়ে চট্টগ্রামের ১৫৫ কিলোমিটার পর্যন্ত এলাকা স্থায়ীভাবে পানির নিচে ডুবে যায়। এই ভূমিকম্পে ঢাকার ৫০০ মানুষের প্রাণহানি হয়েছিল।

১৮৬৯ সালে আসামের শিলচরে যে ভূমিকম্প হয়েছিল তা ঢাকা থেকে ২৫০ কিলোমিটার দূরে। এই ভূমিকম্পটি এত শক্তিশালী ছিল যে এটা বিহার, সিকিম, মনিপুর ও বার্মা থেকেও অনুভূত হয়েছিল। ঢাকা, ময়মনসিংহ, শেরপুর ও পাবনার ভবনগুলোও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল বলে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের মো: আব্দুল্লাহ আল জামান ও নুসরাত জামান মনিরার গবেষণাপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে। তখন অধিকাংশ বাড়ি-ঘর ধসে যায় কিন্তু কত মানুষের প্রাণহানি ঘটেছিল তা উল্লেখ নেই।
১৮৮৫ সালে মানিকগঞ্জের ভূমিকম্প বেঙ্গল আর্থকোয়েক নামে পরিচিত। ৭ মাত্রার ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ার কেদালায়। এটা যমুনা ফল্ট জোনের সাথে লাগোয়া ছিল।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com