শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ১০:৫৮ পূর্বাহ্ন

ফুলবাড়ীতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ বাড়ছে

এনবিডি নিউজ ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : সোমবার, ৮ মে, ২০২৩
  • ৪৭ বার

ফুলবাড়ী উপজেলার আলাদীপুর গ্রামে বিকেলে গ্রামের মেঠো পথ ধরে হাঁটার সময় দেখা যাবে রাস্তার চারিদিকে ইরি-বোরো সবুজ ধান ক্ষেত। চলতে চলতে হঠাৎ চোখ পড়বে সবুজের বুকে হলদে হাসী! সবুজ গাছের চূড়ায় বড় বড় হলদে ফুল। গোলাকার ফুলগুলো চেয়ে আছে সূর্যের দিকে। সূর্য যেদিকে থাকে ফুলগুলোও সেদিকেই হেলে পড়ে। নাম তার সূর্যমুখী।

দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলা কৃষি প্রধান হলেও এখানকার কৃষকের প্রধান ফসল ধান। এর পাশাপাশি কৃষক তার জমিতে নানা রকমের ফসল ফলায়। তেমনিভাবে এবার ফুলবাড়ীর কৃষকরা প্রথমবার চাষ করছে সূর্যমুখী ফুল।

সৌন্দর্যের জন্য নয়, বাণিজ্যিক উদ্দেশে এবং ভোজ্য তেলের চাহিদা মেটাতে বর্তমানে চাষ হচ্ছে সূর্যমুখী ফুল। দেশে ভোজ্যতেলের সঙ্কট নিরসনে সরকারি উদ্যোগ্যে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর থেকে সূর্যমুখী চাষে কৃষকদের উৎসাহিত করা হচ্ছে। বিনা মূল্যে প্রণোদনায় উপজেলার কৃষকদের বিতরণ করা হয়েছে সূর্যমুখী বিজ ও রাসায়নিক সার। কৃষকরা উদ্বুদ্ধ হয়ে এরই অংশ হিসেবে এ উপজেলার বেশ কিছু এলাকায় চাষ করেছে সূর্যমুখী ফুল।

এতে করে দেশে সূর্যমুখীর তেলের বাজার বড় হচ্ছে, বাড়ছে চাহিদা। রূপ আর তেল দুই-ই ঢেলে দিচ্ছে এই সূর্যমুখী ফুল।

ফুলবাড়ীতে এই সূর্যমুখীর খবর ইতোমধ্যেই সমাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়ায়, বাগান দেখতে অনেকেই ঘুরতে আসছেন প্রতিদিন সূর্যমুখীর সুন্দর্য রূপ আস্বদন করতে।

আলাদীপুরের কৃষক লোকমান হাকিম বলেন, ‘আমি সাড়ে ২২ শতাংশ জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করছি। খরচ খুব কম। তেমন কোনো খাটুনি নেই। সূর্যমুখীর সাথে সাথী ফসল হিসেবে লাউ চাষ করছি। উপজেলা কৃষি দফতর থেকে প্রণোদনার বিজ পেয়ে এবং তাদের পরামর্শেই সূর্যমুখী ফুল চাষ করেছি। আশানুরূপ ফলন পেলে আগামীতে আরো বেশি জমিতে সূর্যমুখী চাষ করব।

সূর্যমুখী চাষী মানিক চন্দ্র সরকার বলেন, এলাকার চাষীদের পরামর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে সাড়ে ২৫ শতাংশ জমিতে সূর্যমুখী চাষ করেছি। ফল ভালো এসেছে। এখন ফলন ভালো হলে পরের বার বেশি জমিতে চাষ করব। তবে এবার প্রথম চাষ করছি ফুল ফোটার সাথে সাথে ফুল প্রেমীদের সূর্যমুখী খেতে আনাগোনা বেড়েছে। অনেকে ফুল ছিড়ছে এটাই একটু সমস্যা। কারণ সব সময়তো পাহারা রাখা সম্ভব নয়। তবে সূর্যমুখীর চাষ বাড়লে এ সমস্যা হবে না।

সূর্যমুখী দেখতে আসা ফুলবাড়ী পৌর শহরের সুজাপুর রাজ বংশী পাড়ার জয়া, গুপিকা বর্ম্মন, মনিকা বর্ম্মনের দেখা হয়। কথা হয় অনার্স তৃতীয় বর্ষে পড়–য়া ছাত্রী জয়ার সাথে সে বলে ছবিটা একদম অন্য রকম। সবুজের বুকে একখণ্ড হলুদ জমিন। ফুলবাড়ীতে বিনোদনের তেমন জায়গা নেই, তাই বন্ধুদের কাছে শুনে ঘুরতে এসেছি সূর্যমুখীর জমিতে। খুব ভাল লাগছে যে আমাদের উপজেলার নাম ফুলবাড়ী। আর ফুলবাড়ীতে এমন সূর্যমুখীর অপরূপ সুন্দর একটা পরিবেশ।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রুম্মান আক্তার জানান, উপজেলায় সূর্যমুখী ফুলের চাষাবাদ একেবারেই নতুন। তেল জাতীয় ফসলের উৎপাদন বাড়াতে প্রণোদনা হিসেবে উপজেলার ১৩৫ জন কৃষককে এক কেজি করে সূর্যমুখী বীজ বিতরণ করা হয়েছে। উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নেই চাষ হচ্ছে সূর্যমুখী। প্রকিটি সূর্যমুখী গাছে এখন ফুল এসেছে, কদিন বাদেই ফলন পাবে কৃষক। জাত ভেদে প্রতি বিঘায় (৩৩ শতাংশ) ২০০ থেকে ২৫০ কেজি সূর্যমুখী বিজ পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com