ফোবানা নামের সংগঠনটি নর্থ আমেরিকা তথা যুক্তরাষ্ট্রে এখন বিভক্তির মডেল হিসেবে আর্বিভূত হয়েছে। সংগঠনটি হবার কথা ছিল প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির ঐক্য ও সংহতির প্রতীক। তা এখন অনৈক্য ও বিভেদের মডেল। ভাংগতে ভাংগতে তা এসে দাঁড়ালো ৫ টুকরোতে। এতও দিন ছিল ৩ ভাগে বিভক্ত। এখন তা ৫টি শাখায় প্রসারিত হচ্ছে! সবচেয়ে বড় ফোবানা ছিল গিয়াস আহমেদ, শাহ নেওয়াজ, আলী ইমাম, এজাজ তৌফিক,মোহাম্মদ হোসেন, ফিরোজ আলম, কাজি আযম, ডা. মাসুদুর রহমান ও শরাফত হোসেন বাবুদের নেতৃত্বাধীন অংশটি। কিন্তু তা এখন কার্যত ৩ ভাগে বিভক্ত হবার উপক্রম। শরাফত হোসেন বাবু ইতোমধ্যে ওয়াশিংটনে আসন্ন সেপ্টেম্বরে ফোবানা সম্মেলনের ঘোষণা দিয়েছেন। শাহ নেওয়াজ, আলী ইমাম শিকদার ও কাজি আজমরা নতুন একটি স্টেয়ারিং কমিটি ঘোষণা দিয়েছেন। এর ৩ দিন পর গিয়াস আহমেদ ও ডা. মাসুদুর রহমানরা এক সংবাদ সম্মেলন করে গত শনিবার পাল্টা কমিটি প্রকাশ করেছেন। তবে এ অংশের মেম্বার সেক্রেটারি হিসেবে তারা এখনও শাহ নেওয়াজকে উল্লেখ করেছেন। তা কোন কাজে দিবে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। তারা নতুন স্টেয়ারিং কমিটির অভিষেক করবেন ১১ জুন ওয়ার্ল্ড ফেয়ার মেরিনাতে। এমতাস্থায় ফোবানা ২০২৩ অনুষ্ঠিত হবে কানেকটিকাটের নিউ হ্যাভেনে। হোস্ট ফোবানা শাহ নেওয়াজ নাকি গিয়াসের দিকে থাকবে তা এখন দেখার বিষয়।
এদিকে জাকারিয়া চৌধুরী , বেদারুল ইসলাম বাবলা, আতিকুর রহমান ও শাহেদা শিকদার হাই এর নেতৃত্বাধীন অংশের ফোবানা হচ্ছে কানাডার মনিট্রয়লে। টেক্সাসের ডালাসে অনুষ্ঠিত হবে রেহান রেজা, আহসান চৌধুরী,মাসুদ রব চৌধুরী,নাহিদ খান ও আবীর আলমগীরদের নেতৃত্বাধীন অংশের। সবগুলো ফোবানা সম্মেলনই অনুষ্ঠিত হচ্ছে ১-৩ সেপ্টেম্বর লেবার ডে উইকেন্ডে।
উত্তর আমেরিকায় বাংলাদেশিদের ঐক্য আর সংহতি বৃদ্ধির লক্ষ্যে তিন দশক আগে ফেডারেশন অব বালাদেশি অ্যাসোসিয়েশনস ইন নর্থ আমেরিকা বা ফোবানা নামের সংগঠনটি সংগঠনটি গড়ে উঠেছিল। হাওর-নদী-সাগর পাড়ি দেওয়া স্বদেশিদের ঐক্যবদ্ধ প্ল্যাটফর্ম হিসেবে ফোবানা তার যাত্রা শুরু করে। ফোবানা সম্মেলন উত্তর আমেরিকায় বসবাসরত বাংলাদেশিদের আনন্দ অভিযাত্রার তিলক হয়ে উঠে। দেশের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব এই সম্মেলনে অংশ নিতে উন্মুখ হয়ে থাকতেন। আমেরিকা ও কানাডার নানা প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা বাংলাদেশিরা যেমন ছুটে আসতেন, তেমনি ইউরোপ থেকে অতিথিরা এসে যোগ দিতেন এই সম্মেলনে। নেতৃত্ব আর দখলদারির কবলে পড়ে আজ জৌলুষ হারিয়েছে ফোবানা। একই নামে আমেরিকার একাধিক শহরে ফোবানা সম্মেলন হচ্ছে। টানাপোড়েনের কারণে প্রবাসীদের ফোবানার প্রতি আগের সেই আবেদন আর নেই। তারপরও ফোবানার নাম শুনলে প্রবাসের লোকজন শিহরিত হোন। স্বপ্ন দেখেন, দূর দেশে নিজেদের ঐক্য আর সংহতির।