এ যেন পুরোপুরি নিরব ভোট বিপ্লব। নগরজুড়ে কোথাও জায়গা হয়নি জায়েদা খাতুনের পোস্টারের। কিছু কিছু লাগানো হলেও পরবর্তীতে তা ছিঁড়ে ফেলেছে প্রতিপক্ষরা। হুমকি ধামকিতে অনেক কেন্দ্রে এজেন্ট দেওয়া সম্ভব হয়নি। সম্মুখ প্রচারও করতে পারেনি অনেক সমর্থক। প্রার্থী নিজেও যেতে পারেনি সব জায়গায়। তবে ভোটারদের মধ্যে এ নারীর জন্য সহানুভূতি তৈরী হয়েছিল, তারা তাদের হৃদয়ের কোণে তাকে জায়গা করে নিয়েছিলেন। আর সুযোগের ব্যবহার করেন ভোটকক্ষে। যা ছিল অনেকটা বোবা ভোট। সাড়া নেই শব্দ নেই, অথচ দিনশেষে তিনিই জয়ী।
গাজীপুরে এমন নিরব ভোটে ভোটাররা জায়েদা খাতুনকে নগর মাতার চেয়ারের দায়িত্ব দিয়েছেন। এর মধ্য দিয়ে গাজীপুরবাসী এক নতুন নির্বাচন দেখলো। স্থানীয়রা বলছেন, ভোটারদের জয় হয়েছে গাজীপুরে।
নির্বাচনে টেবিলঘড়ি প্রতীকে জায়েদা খাতুন লড়লেও পেছন থেকে কাজ করেন ছেলে জাহাঙ্গীর। সব সময়ই মায়ের হয়ে কথা বলেন তিনি। মায়ের জয়কে নিজের জয়ই মনে করছেন তিনি। এক কথায় গাজীপুরে অঘোষিত ‘মেয়র’ জাহাঙ্গীর।
নির্বাচনে মায়ের জয়ের পর জাহাঙ্গীর বলেন, ‘আমার অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে গাজীপুর সিটি করপোরেশনকে একটি পরিকল্পিত নগরে পরিণত করব। মহান সৃষ্টিকর্তা আমার মায়ের পাশে ছিলেন। সবাই আমাদের জন্য দোয়া করবেন।’
তিনি বলেন, ‘এখানে নৌকার জয় হয়েছে, পরাজয় হয়েছে ব্যক্তির।’ এ সময় মাকে সঙ্গে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে যাবেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।
নির্বাচনে টেবিলঘড়ি প্রতীকে জায়েদা খাতুন পেয়েছেন ২ লাখ ৩৮ হাজার ৯৩৪ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের প্রার্থী আজমত উল্লা খান নৌকা প্রতীকে পেয়েছেন দুই লাখ ২২ হাজার ৭৩৭ ভোট। ১৬ হাজার ১৯৭ ভোটে আজমত উল্লাকে হারিয়ে মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন জায়েদা খাতুন।
বৃহস্পতিবার (২৫ মে) দিবাগত রাত ১টা ৩০ মিনিটে জেলা পরিষদ ভবনের বঙ্গতাজ অডিটোরিয়ামে জায়েদা খাতুনকে বেসরকারিভাবে জয়ী ঘোষণা করেন সিটি নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম।