‘আমি মায়ামিতে যোগ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি’- ছোট এই ঘোষণাতেই অবসান হলো ইউরোপীয় ফুটবলের সাথে লিওনেল মেসির প্রায় দুই যুগের সম্পর্কের। শুধু সম্পর্ক বললে ভুল হবে, বলা যায় রাজত্বের। ইউরোপিয়ান ফুটবলের পাঠ চুকিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ক্লাব ইন্টার মায়ামিতে পাড়ি জমালেন এই সর্বজয়ী ফুটবল তারকা।
সন্ধ্যা হতেই গুঞ্জনের শুরু, বাংলাদেশ সময় বুধবার গভীর রাতে সেই গুঞ্জন রূপ নেয় বাস্তবতায়। বার্সালোনা কিংবা আল হিলাল নয়, লিওনেল মেসি এখন ইন্টার মিয়ামির। ইতোমধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের এই ক্লাবের সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন তিনি। যদিও কিছু কাজ এখনো বাকি, বলেছেন মেসি নিজেই।
বুধবার রাতে স্পেনের দুটি ক্রীড়া পত্রিকা মুন্দো দেপোর্তিভো ও স্পোর্তকে দেয়া সাক্ষাৎকারে মেসি নিজেই নিশ্চিত করেন তার মায়ামিতে যোগ দেওয়ার বিষয়টি। মেসি বলেন, ‘আমি মায়ামিতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। চুক্তি সম্পন্নের কাজ এখনো শতভাগ শেষ হয়নি। কিছু বিষয় এখনো বাকিও আছে। তবু এই পথেই হাঁটার সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমি।’
গত সপ্তাহে পিএসজি ছাড়ার আগে থেকেই মেসিকে দলভুক্ত করার লড়াইয়ে আলোচনায় ছিল আল হিলাল, বার্সালোনা ও মিয়ামি। তবে অপেক্ষাকৃত কম আলোচনাই হচ্ছিল মিয়ামিকে নিয়ে৷ তবে সবাইকে অবাক করে বার্সার আবেগ মাখা আমন্ত্রণ আর আল হিলালের বস্তাভর্তি টাকার অফার দূরে ঠেলে মিয়ামিকেই আপন ঠিকানা বানালেন এই বিশ্বকাপজয়ী।
যদিও মেসি জানিয়েছে, ফের বার্সালোনায় তিনি ফিরতে চেয়েছেন। তবে অতীত অভিজ্ঞতা তাকে সাহসী হতে দেয়নি। বার্সা তাকে ফেরানোর কথা বললেও কোনো নিশ্চয়তা দিতে পারছিল না বলেই সেখানে ফিরতে অপারগতা প্রকাশ করেন মেসি। তিনি বলেন, ‘আমি বার্সেলোনাতেই ফিরতে চেয়েছিলাম। তবে এই ভয়ও ছিল, আগের ব্যাপারটা আবারো ঘটতে পারে।’
বার্সালোনার প্রতি কতটা ভালোবাসা মেসির তাও ফের প্রমাণ হয়েছে গত রাতে। স্পষ্টই এই বিশ্বকাপজয়ী তারকা বলে দিলেন, ইউরোপে খেললে বার্সার হয়েই খেলতেন। মেসি বলেন, ‘আমি ইউরোপ ছাড়তে চেয়েছি। এটা সত্য যে আমার সামনে অন্য ইউরোপিয়ান দলের প্রস্তাবও ছিল। তবে সেটা নিয়ে একদমই ভাবিনি। কারণ, ইউরোপে খেললে শুধু বার্সেলোনায় যেতাম।’
কেন ইউরোপ ছাড়তে চাওয়া, তাও জানিয়েছেন মেসি। যেখানে বড় কারণ ফ্যামিলি। পরিবারকে সময় দিতেই এমন সিদ্ধান্ত বললেন এই আর্জেন্টিনাইন। তার ভাষ্য অনুযায়ী, ‘বিশ্বকাপ জিতেছি আর বার্সেলোনাও যেতে পারছি না, এমন পরিস্থিতিতে ফুটবলে ভিন্ন রূপে বাঁচতে এবং দৈনন্দিন জীবনকে আরও উপভোগ করতে এখন এমএলএসে যাওয়াকে সঠিক মনে হয়েছে।’