বাংলাদেশে তিনজনসহ বিশ্বজুড়ে করোনা ভাইরাসের ব্যাপক বিস্তারের প্রেক্ষাপটে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠানসূচি পুনর্বিন্যাস করা হয়েছে। এর ফলে আগামী ১৭ মার্চ জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে যে জনসমাগম কর্মসূচি নেয়া হয়েছিল, তা আপাতত স্থগিত করা হয়েছে। এ অনুষ্ঠান কবে হবে তা পরবর্তীতে জানিয়ে দেয়া হবে। তবে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে ও টুঙ্গিপাড়ায় ওই দিন যে কর্মসূচি আছে তা ব্যাপক জনসমাবেশ পরিহার করে সীমিত আকারে করা হবে।
রোববার রাতে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে মুজিববর্ষ উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী এ তথ্য জানান। এর আগে সন্ধ্যায় গণভবনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ উদযাপন জাতীয় কমিটির সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে এ উপলক্ষে গঠিত জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়েছে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ উদযাপন বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান সমন্বয়ক ড. কামাল আব্দুল নাসের চৌধুরী বলেন, স্কুল-কলেজে যেসব কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছিল সেগুলো জনসমাবেশ পরিহার করে সীমিত আকারে করার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিসহ যেসব বিদেশি অতিথিকে আমন্ত্রণ করা হয়েছিল তারা আসবেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যেহেতু মূল অনুষ্ঠানটি এখন হচ্ছে না তাই তারা এখন আসবেন না। পরবর্তী সময়ে অনুষ্ঠানসূচি ঘোষণা করা হলে তাদের সে সময়ে আমন্ত্রণ জানানো হবে।
তিনি বলেন, জনস্বাস্থ্য ও জনগণের সুবিধার বিষয়টি মাথায় রেখে মুজিববর্ষের অনুষ্ঠান সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে। পরে ক্ষুদ্র পরিসরে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান আয়োজন করা হবে। তবে জনসমাগম এড়িয়ে বছরব্যাপী উদযাপন করা হবে মুজিববর্ষ।
তিনি বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতেও জনসমাগম পরিহার করার কথা বলা হয়েছে। কোনো অনুষ্ঠান স্থগিত রাখা হয়নি। কর্মসূচি যেভাবে সাজানো হয়েছিল সেটা পুনর্বিন্যাস করা হবে। প্যারেড স্কয়ারে জনসমাগমের যে অনুষ্ঠানটি সেটাকে পুনর্বিন্যাস করে পরবর্তীতে করা হবে। তবে বঙ্গবন্ধু ভবনে যে শ্রদ্ধা নিবেদন এবং টুঙ্গিপাড়ায় যে শ্রদ্ধা নিবেদন সেই কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে। পাশাপাশি সারা বাংলাদেশের দোয়া মাহফিল এবং শ্রদ্ধাজ্ঞাপন সেটাও থাকবে।
সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সোমবার আমাদের জাতীয় কমিটির সভা আছে, সেখানে আমরা আলোচনা করবো। এর আগে দেশে তিনজন করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হওয়ার প্রেক্ষিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৈঠক করেন। বৈঠকে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ছাড়াও শেখ রেহানা উপস্থিত ছিলেন।
রোববার (৮ মার্চ) সন্ধ্যায় গণভবনে এ বৈঠক শুরু হয়। বাংলাদেশে করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পর আগামী ১৭ মার্চ মুজিববর্ষের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান কীভাবে আয়োজন করা যেতে পারে তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয় বৈঠকে।