সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০১:২৩ অপরাহ্ন

কুড়িগ্রামে বন্যায় ১০ হাজার মানুষ পানিবন্দী

এনবিডি নিউজ ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : শুক্রবার, ১৪ জুলাই, ২০২৩
  • ৬৬ বার
ছবি : সংগৃহীত

কুড়িগ্রামের দুধকুমার নদের পানি বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই) থেকে হু-হু করে বেড়ে নিম্নাঞ্চল তলিয়ে গেছে। ফলে জেলার প্রায় ১০ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।

শুক্রবার (১৪ জুলাই) দুপুর দেড়টার দিকে কুড়িগ্রামের সদর উপজেলার পোড়ারচর গ্রামের শাপলা জানান, সকালে রান্নাঘরের মেঝে তলিয়ে যাওয়ায় রান্না করতে পারছেন না। জিনিসপত্র সরাতে দুপুর গড়িয়ে গেছে।

তার স্বামী বাবুল আলী এক সন্তানকে কোলে নিয়ে আছেন, অপর সন্তানটি তার শরীর ঘেঁষে দাঁড়িয়ে আছে। শাপলা তখন চাল আর কাঁঠালের বিচি ভাজছেন। এই খেয়েই তাদের দিন পার করতে হবে। বন্যা হলেই এমন দুর্দশায় পড়ে এসব পরিবার।

পার্শ্ববর্তী দক্ষিণ ভগবতীপুর গ্রামের নার্গিস নামের আরেক নারী বলেন, চার দিন থেকে পানিবন্দী হয়ে আছি। কেউ খোঁজখবর নেয় না। ঘরের চৌকিতে পানি ওঠায় পাশের উঁচু বাড়িতে আশ্রয় নিয়ে আছি। এই গ্রামে প্রায় ৪৫/৫০টি বাড়িতে পানি উঠেছে।

নাগেশ্বরী উপজেলার নুনখাওয়া ইউনিয়নের চর কাফনা গ্রামের নুর বখত জানান, গতকাল থেকে পানির তোড় বেড়েছে। নিচু এলাকার বাড়িঘরে পানি ঢুকতে শুরু করেছে। লোকজন গবাদিপশু নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন।

এই গ্রামের নাজমা নামের আরেক নারী বলেন, চারদিকে পানি থাকায় ঠিকমতো রান্নাবান্না করতে পারছি না। ছেলেমেয়েদের ভালো-মন্দ কিছু খাওয়াতে পারছি না।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তথ্যমতে, শুক্রবার দুপুর ৩টার রিডিং অনুযায়ী দুধকুমার নদের পানি ৫৪ সেন্টিমিটার, ধরলা নদীর পানি ২১ সেন্টিমিটার বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। তবে তিস্তা নদীর পানি ব্রিজ পয়েন্টে বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার এবং ব্রহ্মপুত্র নদের পানি চিলমারীতে বিপৎসীমার ৩৪ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে যেভাবে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে, তাতে এসব নদীর পানিও বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে।

এদিকে, দুধকুমার নদের পানি অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধির ফলে তীরবর্তী পানি উন্নয়ন বোর্ডের একটি সংস্কার করা রাস্তার দু’দিক তলিয়ে গিয়ে লোকালয়ে পানি ঢুকেছে।

ফলে ১০ হাজার মানুষ বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছেন জনপ্রতিনিধিরা।

এ ব্যাপারে কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, এই পানি বৃদ্ধির অবস্থা ৩-৪ দিন পর্যন্ত থাকতে পারে। তারপর পানি নেমে যাবে।

কুড়িগ্রাম পাউবোর কোনো বাঁধ বন্যায় ডুবে যায়নি বলে নিশ্চিত করে তিনি জানান, নাগেশ্বরী উপজেলায় একটি সড়ক সংস্কারের কাজ করেছে পাউবো। সেটির দুটি অংশ প্লাবিত হয়ে লোকালয়ে পানি ঢুকেছে।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ বলেন, ইতোমধ্যে ৬৫ টন চাল উপজেলাগুলোতে উপ-বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এ ছাড়াও আমাদের কাছে ৫৮৫ টন চাল, ১০ লাখ টাকা ও ১ হাজার ৭০০ প্যাকেট শুকনো খাবার মজুদ রয়েছে। আমরা বন্যার্তদের তালিকা করছি, তালিকা পেলে উপ-বরাদ্দ দেয়া হবে।

শুক্রবার বিভিন্ন বন্যাকবলিত এলাকা পরিদর্শন করে জেলা প্রশাসক ৮০০ প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করেছেন বলেও তিনি জানিয়েছেন।
সূত্র : ইউএনবি

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com