আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে হয়ত আফগানিস্তান খুব বড় নাম নয়, তবে বাংলাদেশের সামনে বরাবরই চোখ রাঙায় দলটি। বিশেষ করে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে। সিরিজ শুরুর আগ পর্যন্ত পরিসংখ্যানও তাদের পক্ষেই কথা বলে। ৯ ম্যাচের ৬টিতেই জয় ছিল আফগানিস্তানের।
তবে এবার পরিসংখ্যান খানিকটা ভদ্রস্থ হয়েছে ঘরের মাঠে আফগানিস্তানকে ২-০ তে সিরিজ হারিয়ে নিজেদের সক্ষমতার জানান দিয়েছে। এখনো পিছিয়ে থাকলেও ১১ ম্যাচে এখন ৫ জয় বাংলাদেশের, যা নিয়ে সংবাদ সম্মেলনেও কথা বললেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।
আফগানদের বিপক্ষে এই সিরিজ জয় কতটা আনন্দের তা উল্লেখ করে সাকিব বলেন, ‘খুব ভালো লাগছে। ওদের বিপক্ষে আমাদের টি-টোয়েন্টি রেকর্ড ভালো ছিল না। সেখান থেকে এভাবে জেতা, এই রকম কন্ডিশনে জেতা, অবশ্যই এটা আমাদের আত্মবিশ্বাস দেবে।’
আফগানিস্তানকে শেষ টি-টোয়েন্টিতে হারিয়ে এই বছর টানা তিনটি টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতল বাংলাদেশ। শেষ ৮ ম্যাচের ৭টিতেই জয় পেয়েছে টাইগাররা। বিষয়টি অধিনায়ক হিসেবে নিজের জন্য স্বস্তির উল্লেখ করে সাকিব বলেন, ‘এই ধারাবাহিকতাটা অবশ্যই স্বস্তির। আমরা যে জিনিসটা চেষ্টা করছি, তা কাজে দিচ্ছে। খেলোয়াড় যারা আছে, তারা পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পারছে। যা চাচ্ছি তা করতে পারলে তো ভালো লাগে। সেটাই হচ্ছে।’
এদিকে দেশব্যাপী এই টি-টোয়েন্টি দলটাকে নিয়ে বেশ হাইপ উঠেছে, সমর্থকরা প্রশংসা করছেন নানান বিশেষণে। তবে সাকিব বলছেন সময় লাগবে আরো, বললেন এখনো তার দল সঠিক কম্বিনেশন খুঁজে পায়নি।
সাকিব বলেন, ‘এই দলে যারাই খেলছে, তারা কিন্তু গত বিশ্বকাপের পর থেকেই খেলছে। অনেকে গত এশিয়া কাপের পর থেকে। আমরা এখনো অনেক কম্বিনেশন চেষ্টা করছি। আমার মনে হয়, সেরা সমন্বয় খুঁজে পেতে আরো সময় লাগবে।’
এই বছর আর টি-টোয়েন্টি খেলা হচ্ছে না বাংলাদেশের। সামনে এশিয়া কাপ ও বিশ্বকাপের মতো দু’টি আসর থাকায় টি-টোয়েন্টি খেলা হবে না দীর্ঘদিন। বিষয়টি নিয়ে বেশ চিন্তিত সাকিব। আছে ছন্দ হারিয়ে ফেলার শঙ্কাও। তবে আগামী বিপিএলে তাকিয়ে তিনি, বিপিএল দিয়েই ছন্দ ফিরে পেতে চান বাংলাদেশ অধিনায়ক।
তার ভাষ্যে, ‘ছন্দটা এখন ভালো আছে। কিন্তু বড় বিরতিও আছে। এরপর যে কবে টি-টোয়েন্টি খেলব, জানি না। হয়তো জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে, বিপিএলের পরে। আশা করি, বিপিএলে ছেলেরা ভালো করবে। সেটা পরে আমাদের কাজে লাগবে।’
এদিকে আগামী মাসেই মাঠে গড়াবে এশিয়া কাপ। যেখানে আবারো আফগানিস্তানের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ, বিশ্বকাপের নিজেদের প্রথম ম্যাচেও টাইগারদের প্রতিপক্ষ রশিদ খানের দল। এমতাবস্থায় ওয়ানডে সিরিজে ভালো কিছু করার প্রয়োজন ছিল বাংলাদেশের।
কিন্তু অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে ওয়ানডে সিরিজটা বাংলাদেশ হেরে যায়, শেষ ম্যাচে স্বস্তির জয়ে সিরিজ নিষ্পত্তি হয় ২-১ ব্যবধানে। সেখান থেকে যথেষ্ট আত্মবিশ্বাস নিতে না পারায় টি-টোয়েন্টি সিরিজে ভালো করার প্রয়োজন ছিল বাংলাদেশের, তবে এই পরীক্ষায় বেশ ভালোভাবে পাশ করে গেছে টাইগাররা।
টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়ের এই আত্মবিশ্বাস ওয়ানডে সংস্করণের এশিয়া কাপ ও বিশ্বকাপে কাজে লাগবে জানিয়ে সাকিব বলেন, ‘এই দলের বেশিরভাগ সদস্য ওয়ানডে দলের অংশ। এই আত্মবিশ্বাসটা ওরা এশিয়া কাপ ও বিশ্বকাপে নিয়ে যেতে পারবে।’
এর আগে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানেও প্রায় একই সুরে কথা বলেন সাকিব। এই সিরিজ থেকে বাংলাদেশের প্রাপ্তি নিয়ে কথা বলতে গিয়ে অধিনায়ক বলেন, ‘ওয়ানডে দলে যারা খেলে, তাদের অনেকেই এই টি-টোয়েন্টি দলেও আছে। ফলে ওরা এখান থেকে পাওয়া আত্মবিশ্বাস নিয়েই এশিয়া কাপ ও বিশ্বকাপে যাবে।’