বাঁচা-মরার লড়াইয়ে শেষ হাসি বাংলাদেশের। নিশ্চিত হয়েছে ইমার্জিং এশিয়া কাপের সেমিফাইনাল। নানান সমীকরণের ম্যাচে আফগানিস্তানকে ২১ রানে হারালো টাইগাররা।
ইমার্জিং এশিয়া কাপে মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) শ্রীলঙ্কার কলম্বোর পি সারা ওভালে আফগানিস্তানের মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ। সেমিফাইনালে উঠতে হলে এই ম্যাচে জয়ের বিকল্প ছিল না টাইগারদের। এমন গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে টস জিতে আগে ব্যাট করতে নামে সাইফ হাসানের দল। করে ৩০৯ রান।
আগের দিন গণমাধ্যমের সাথে আলাপকালে মাহমুদুল হাসান জয় এই ম্যাচকে মর্যাদার লড়াই হিসেবে উল্লেখ করেন। সেই সাথে আফগানিস্তানের কাছে হেরে আসর থেকে বিদায় নিতে চান না বলে ইচ্ছে প্রকাশ করেন। তার বক্তব্য সত্যায়িত হয়েছে তার ব্যাটেই, সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে ব্যাট হাতে নেতৃত্ব দেন জয় নিজেই।
দলকে টানতে হয়েছে জয়ের একদম শুরু থেকে, ৬ ওভারে মাত্র ৩৪ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে তখন ধুঁকছিল দল। আগের দুই ম্যাচের সেরা ব্যাটার তানজিদ হাসান ফেরেন এদিন মাত্র ৯ রানে, আরেক ওপেনার নাইম শেখের ব্যাটে আসে ১৯ বলে ১৮ রান। ব্যাট হাতে নেতৃত্ব দিতে ব্যর্থ হন অধিনায়ক সাইফ হাসান, ফেরেন মাত্র ৪ রান করে।
এমতাবস্থায় দলের হাল ধরেন জয় ও জাকির হাসান। ধসেপড়া ইনিংসটাকে টেনে তুলেন দুজনে, গড়েন শতাধিক রানের জুটি। ২৭.২ ওভারে যখন জাকির ফেরেন দলের রান ততক্ষণে দেড় শ’ ছুঁয়েছে। ৭২ বলে ৬২ করে ফেরেন জাকির। জাকির ফিরলে তার দায়িত্ব নেন সৌম্য। জয়কে সঙ্গ দেন এবার তিনি।
ছক্কা মেরে ইনিংস শুরু করা সৌম্য দারুণ শুরু পেলেও ইনিংস বড় করতে পারেননি, ৮২ বলে ৭৯ রানেত জুটি ভেঙে ফেরেন ৪২ বলে ৪৮ রান করে। দ্রুত ফেরেন আকবর আলিও, ১০ বলে মাত্র ৪ রান করেন তিনি। তবে এক প্রান্ত আগলে রেখে শতক তুলে নেন জয়। তবে ফেরেন এর পরপরই, ১১৪ বল খেলে ২টি ছক্কা ও ১২টি চারে করেন সমান ১০০।
শেষদিকে ঝড় তুলেন শেখ মেহেদী। তার অপরাজিত ১৯ বলে ৩৬ রান ও রাকিবুল হাসানের ১২ বলে ১৫ রানের ইনিংসে ৩০৮ রানের বিশাল পুঁজি পায় বাংলাদেশ।
আফগানিস্তানের হয়ে ৪টি উইকেট নিয়েছেন সালিম শাফি।
লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে মাত্র ২৬ রানে উদ্বোধনী জুটি ভাঙে আফগানিস্তানের। তবে দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে হাল ধরেন রিয়াজ হাসান ও নুর আলি জাদরান। দুজনে মিললে যোগ করে ৯০ রান। ৪৪ রান করা জাদরানকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন পেসার তানজিম হাসান সাকিব।
জাদরান না পারলেও রিয়াজ ফিফটি তুলে ছুটছিলেন সেঞ্চুরির পথে। তাকে ৭৮ রানে থামান সৌম্য। তবে ফের সেখান থেকে জুটি গড়ে তুলে আফগানরা। শহিদুল্লাহ কামাল ও বাহির শাহ নিলে যোগ করে ৭০ রান। এ দফায়ও জুটি ভাঙে ৪৪ রান করে শহিদুল্লাহ আউট হলে। ইকরাম আলিখিল দ্রুত (১) দ্রুত ফিরলে ৪৩ ওভারে ৫ উইকেটে ২২২ রান সংগ্রহ হয় আফগানিস্তানের।
সেখান থেকে আর ম্যাচে ফেরা হয়নি, কঠিন সমীকরণ আরো কঠিন হয়ে যায় আফগানদের জন্য। ৮ উইকেটে ২৮৭ রান পর্যন্ত যেতে পেরেছে তারা। ৫০ বলে ৫৩ রানে অপরাজিত থাকেন বহির শাহ। তাকে সঙ্গ দিতে পারেনি আর কেউই।
বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট পেসার সাকিবের। দুটো করে উইকেট নিয়েছেন রাকিবুল হাসান ও সৌম্য সরকার।