দুইদিনের টানা বৃষ্টিতে আবার তলিয়ে গেল চট্টগ্রাম নগরীর অধিকাংশ এলাকা। আগেরদিন দুই ঘণ্টা বৃষ্টির সাথে জোয়ারের পানিতে থৈ থৈ করলেও সাপ্তাহিক বন্ধের দিন হওয়ায় বেশি বেগ পেতে হয়নি সাধারণ মানুষকে। কিন্তু শনিবার অফিসগামী মানুষ আটকে যায় জলাবদ্ধতায়।
শনিবার (৫ আগস্ট) সকাল থেকে একটানা বৃষ্টিতে ডুবে গেছে নগরীর প্রধান সড়কগুলো। পাশাপাশি বাসা-বাড়িতেও উঠেছে পানি।
আবহাওয়া অফিস বলছে, এ বৃষ্টি থাকবে আরো ২ থেকে ৩ দিন। মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের ওপর সক্রিয় থাকার কারণে বৃষ্টিপাত হচ্ছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
চট্টগ্রাম পতেঙ্গাস্থ আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ জহিরুল ইসলাম জানান, শুক্রবার (৪আগস্ট) দুপুর ১২টা থেকে শনিবার (৫ আগস্ট) দুপুর ১২টা পর্যন্ত বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ৬১ দশমিক ৮ মিলিমিটার। সকাল ৯টা থেকে ১২টা পর্যন্ত বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ৩৫ মিলিমিটার। আর ৬টা থেকে ১২টা পর্যন্ত বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ৫৭ মিলিমিটার।
আবহাওয়াবিদ জহিরুল ইসলাম আরো বলেন, ‘সকাল ৯টার পর থেকে বৃষ্টির তোড় বেশি ছিল। এর সাথে যোগ হয়েছে জোয়ার। দুই প্লাবনে নগরীতে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে। বিকেল ৩টা থেকে স্বাভাবিক জোয়ারের উচ্চতা যেখানে ৫ দশমিক ৩৬ মিটার হয়ে থাকে, তখন তার চেয়ে ১ থেকে ২ মিটার বেশি জোয়ারের উচ্চতা হবে। যদি বৃষ্টির বেগ তখন এমনটি থাকে, তাহলে নগরীর অবস্থা খারাপ হবে।’
সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে বলে জানান তিনি।
এদিকে টানা বৃষ্টিতে চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন অঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। হাঁটু থেকে কোমরপানিতে তলিয়ে গেছে সড়ক; বাসাবাড়ি-দোকানপাটে ঢুকে পড়েছে পানি। নগরীর প্রায় এক-তৃতীয়াংশ নিচু এলাকা প্লাবিত হয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে।
এদিকে চকবাজার, কাপাসগোলা, বাদুরতলা, শুলকবহর, বহদ্দারহাট, ডিসি রোড, আগ্রাবাদ, সিডিএ আবাসিক এলাকা, হালিশহর, শান্তিবাগ আবাসিক, চান্দগাঁও, বাকলিয়া, চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ, ছোটপুল, গোসাইলডাঙ্গাসহ নগরের অধিকাংশ নিচু এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। বৃষ্টির সাথে ড্রেনের পানি বিভিন্ন এলাকার বাসাবাড়িতেও ঢুকে পড়েছে।
এসব এলাকার প্রধান সড়কের কোথাও হাঁটু, কোথাও কোমর, আবার কোথাও বুক ছুঁই ছুঁই পানি। বাসায় পানি ঢুকে যাওয়ায় আসবাবপত্র ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস নষ্ট হচ্ছে। বাণিজ্যিক এলাকা চাক্তাই-খাতুনগঞ্জে ভিজে গেছে বেশ কিছু পণ্য।