মালদ্বীপের ক্লাবের বিপক্ষে জিততে ভুলেই গিয়েছিল ঢাকা আবাহনী। এএফসি কাপের আগের ৬ ম্যাচের দুটিতে ড্র করা আর বাকি ৪ ম্যাচে হেরে গ্রুপ পর্ব ও প্রিলিমিনারি রাউন্ড থেকে বিদায় নিয়েছিল বাংলাদেশী ক্লাবটি। অবশেষে সেই মালদ্বীপের ক্লাবের বিপক্ষে জয়ের দেখা পেল দর্শকপ্রিয় দলটি।
বুধবার (১৬ আগস্ট) সিলেট স্টেডিয়ামে মালদ্বীপের লিগ রানার্সআপ দল ক্লাব ঈগলসকে ২-১ গোলে হারিয়ে আবাহনী এখন ২২ আগস্ট প্লে-অফ ম্যাচের অপেক্ষায়।
গতরাতেই প্রিলিমিনানি রাউন্ডে অপর ম্যাচ ছিল নেপালের মাচিন্দ্র ও মোহনবাগানের। এই ম্যাচের জয়ী দলই ২২ আগস্ট আবাহনীর প্রতিপক্ষ।
নিয়মিত একাদশের দুই নিয়মিত খেলেয়াড় গোলরক্ষক শহীদুল আলম সোহেল ও অধিনায়ক নাবিব নেওয়াজ জীবন নেই। দুই অতিথি স্ট্রাইকার স্টুয়ার্ট কার্লেনিয়াস ও ডেভিডকে সুযোগ দিতে জীবনকে সাইড বেঞ্চে রাখা। সোহেল খেলোয়াড় তালিকাতেই ছিলেন না ইনজুরির জন্য। ফলে লেফট ব্যাক রহমত মিয়াকে ক্যাপ্টেন্সি দিয়ে মালদ্বীপের ক্লাব ঈগলসের বিপক্ষে এএফসি কাপের প্রিলিমিনারি রাউন্ডের ম্যাচ খেলতে নামা। এতেই সফল আকাশী-নীল শিবিরের।
ম্যাচের ৪ মিনিটে গোলের খুব কাছে চলে যায় বাংলাদেশী ক্লাবটি। তবে মোহামেডান থেকে নেয়া উজবেক মিডফিল্ডার মোজাফফরভের শট ডিফেন্সের গায়ে লেগে পোস্টে যাওয়ার সময় বিপক্ষ কিপার কর্নার করেন। ১৫ মিনিটে মোজাজফরভরের শট ঈগলসের গোলরক্ষক বাম দিকে শরীর ফেলে তা ঠেকান। তবে ১৯ মিনিটে স্টুয়ার্টের হেডে কিছুই করতে পারেনি ঈগলস কিপার। ডান দিকে থেকে চট্টগ্রাম আবাহনীর নাইজেরিয়ান ডেভিড উগুজুর ক্রসে সেন্ট ভিনসেন্টের স্টুয়ার্ট কার্নেলিয়াসের হেডে পরাস্ত ঈগলসের গোলরক্ষক মোহাম্মদ শাফিউ।
উল্লেখ্য স্টুয়ার্ট ছিলেন শেখ জামালের ফুটবলার। এরপর ২৪ মিনিটে আবাহনী ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ হারায় মিলাদ শেখের শট অল্পের জন্য লক্ষ্য ভ্রস্ট হলে। ৪১ মিনিটে ঈগলস সমতার সুযোগ নস্ট করে তাদের বিদেশী দানিল পেত্রিুনিল ফাঁকায় থেওে বল বাইরে মারায়। প্রথমার্ধেই আবাহনীর স্কোর ২-০ হতে পারতো যদি ৪২ মিনিটে স্টুয়ার্ট বক্সের মধ্যে ফাঁকায় থাকা ডেভিডটে ঠিকমতো পাস দিতে পারতেন। বল একটু বেশী সামনে চলে যাওয়ায় বলের দখন পাননি ডেভিড। একটু পরেই ফাহিমের ক্রসে ডেভিডের শট বার ঘেঁষে গেলে ১-০ তে শেষ হয় প্রথমার্ধ।
আবাহনীর ডিফেন্সে রাইট সাইডে বারবারই আতংক ছড়াচ্ছিলেন ঈগলস অধিনায়ক আহমেদ রিজুভান। ৬৩ মিনিটে এই রিজুভানই ডান দিক থেকে আসা মিলোভানের ফ্রি-কিকে ফাঁকায় বল পেয়ে ডান পায়ের ভলিতে সমতা আনেন। গোলের আনন্দে জার্সী খুলে উল্লাস করতে গিয়ে হলুদকার্ড পান তিনি। গোল হওয়ার আগ থেকেই রাইট ব্যাক মাসুদ রানাকে তুলে আসাদুজ্জামান বাবলুকে নামানোর উদ্যেগ নেন কোচ মারিও লেমস। গোলের পরপরই মাঠে নামেন বাবলু।
কাউন্টার অ্যাটাক থেকে ৭১ মিনিটে আবাহনী ফের লিড নেয়ার সুযোগ পেয়েছিল। তবে এই যাত্রায় স্টুয়ার্টের শট ডান দিকে ঝাঁপিয়ে কর্নার করেন মোহাম্মদ শাফিউ। কাঁদ মাঠে খেলা হওয়ার দ্বিতীয়ার্ধের মাঝামাঝি সময় থেকেই ক্লান্তির ছাপ দেখা যায় দুই দলে খেলোয়াড়দের মধ্যে। এই সময়েই ৮১ মিনিটে রিজুভানের ক্রসে ইব্রাহিম হোসেনের হেড পোস্টে লেগে ফেরত আসায় রক্ষা আবাহনীর। ৭২ মিনিটে মিলাদ শেখ এবং ৮৫ মিনিটে এমেকার শট গোলে না গেলেও ৮৯ মিনিটে আবাহনীর দ্বিতীয় গোল। মোজাফফরভের কর্নারে ফর্টিস এফসি থেকে নেয়া দীর্ঘদেহী ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডার ড্যানিলো অগাস্তোর হেডে জয় নিশ্চিত আবাহনীর।
৬১ মিনিটে ঈগলসের গোল অফসাইডে বাতিল হওয়ার আগে তাদের একটি পেনাল্টির আবেদন নাকচ করে তাজিকিস্তানের রেফারি। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেন ঈগলসের কোচ মোহাম্মদ শিয়াজ। বসুন্ধরা কিংসের হয়ে গত বছর এএফসি কাপে লাল কার্ড পাওয়ায় গতকাল আবাহনীর হয়ে খেলতে পারেননি ডিফেন্ডার সুশান্ত ত্রিপুরা।
ঢাকা আবাহনী: প্রীতম, ড্যানিলো, মাসুদ রানা ( বাবলু ৬৪ মিনিট), রহমত, মিলাদ শেখ, এমেকা, মোজাফফরভ, ডেভিড (৭৮ মিনিটে), ফাহিম (নুরুল নাঈম ফয়সাল ৯২ মিনিট), হৃদয়, স্টুয়ার্ট।