আল্লাহ আমাদের প্রভু। সৃষ্টিকর্তা। বান্দা হিসেবে আমাদের করণীয় হচ্ছে, মনিব যা যা আদেশ করবেন, যা যা হতে বারণ করবেন সেসব অবনত মস্তকে মেনে নেয়া। কোনোরূপ প্রশ্ন ছাড়াই তাঁর প্রতি অনুগত থাকা। এটা গোলামের জন্য অত্যাবশ্যকীয় বিষয়।
মালিক ও চাকরের কথাই বলা যায়। একজন মনিব যখন তার গোলামকে কোনো কিছু করতে বা না করতে বলেন তখন গোলাম বিনা প্রশ্নে মাথা পেতে তা মেনে নেয়। কারণ না মানলে মালিক অসন্তুষ্ট ও নাখোশ হবেন। এমনকি প্রয়োজনে শাস্তিও দিতে পারেন। এটা হচ্ছে, দুনিয়ার বাস্তবতা। এই বাস্তবতাকে আমরা অকপটে স্বীকার করলেও সব মালিকের মালিক, এই পৃথিবীর মহান অধিপতি আল্লাহ তায়ালার বেলায় এটি নিতান্তই ভুলে যাই আমরা। কারণ তিনি আমাদের কোনো শাস্তি দেন না। বরঞ্চ ভুল হয়ে গেলে তাঁর কাছে একটু বিগলিত মনে অনুতপ্ত হলে উল্টো ক্ষমা করে দেন। কত মেহেরবান তিনি! কত পার্থক্য এই দুই মনিবের মাঝে!!
আবার যখন কোনো গোলামকে কোনো মনিব কিনে নিয়ে যায় তখন সে গোলামের নিজস্ব কোনো স্বাধীনতা আর থাকে না। বরং সে সম্পূর্ণরূপে হয়ে যায় মালিকের অধীন। মালিকের বশীভূত। মালিকের মনমতোই তাকে প্রতিটি কাজ করতে হয়; কিন্তু আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন। সেই সাথে নিজেদের স্বাধীনতাও দান করেছেন। আর তাই আমরা নিজের ইচ্ছেমতো চলতে পারি। যখন যা চাই করতে পারি। শুধু একটাই চাওয়া তাঁর আমাদের কাছে, তাঁর ইবাদত করা।
কুরআনে কারিমের সূরা যারিয়াতের ৫৬ ও ৫৭ নম্বর আয়াতে তিনি ইরশাদ করেন :
‘আমি জিন ও মানবজাতিকে শুধু আমার ইবাদত করার জন্যই সৃষ্টি করেছি। তাদের থেকে আমি কোনো রিজিক চাই না, চাই না তারা আমাকে আহার করাক।’
কত ছোট্ট একটি চাওয়া, না আমাদের স্বাভাবিক চলাকে ব্যাহত করছে আর না অন্য কোনো প্রভাব বা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে, অথচ এইটুকু কাজই আমরা করতে পারি না। নানান অজুহাত আর ব্যস্ততার দোহাই দিই। তাহলে কিভাবে আমরা পার পেয়ে যাবো পরকালে! আল্লাহ কি আমাদেরকে ছেড়ে দেবেন! দুনিয়ার মনিবরা কি এমনটি ঘটলে ছাড় দিতো!
এ জন্য আসুন, আল্লাহর দিকে পূর্ণ মনোযোগী হই। তাঁর এই সামান্য চাওয়াকে মাথা পেতে মেনে নিই। তিনি বলেছেন : ‘রাসূল সা: তোমাদেরকে যা দেন (নিয়ে এসেছেন), তা গ্রহণ করো এবং যা থেকে নিষেধ করেন, তা থেকে বিরত থাকো এবং আল্লাহকে ভয় করো। নিশ্চয় আল্লাহ কঠোর শাস্তিদাতা।’ (সূরা হাশর : ৭)
এই আয়াত অনুযায়ী যদি আমরা নিজেদের জীবনকে গঠন করতে পারি তাহলে আমাদের আর কোনো ভয় নেই।
লেখক :
যাত্রাবাড়ী, ঢাকা থেকে