পেঁয়াজের সংকট থাকায় রপ্তানি বন্ধ রেখেছিল ভারত। দেশটিতে পেঁয়াজের ভালো ফলন হওয়ায় এখন তারা আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এবার দীর্ঘ পাঁচ মাস পর ভারতীয় পেঁয়াজ ঢুকল বাংলাদেশে। দেশের তিন স্থলবন্দর যশোরের বেনাপোল, সাতক্ষীরার ভোমরা ও দিনাজপুরের হিলি দিয়ে এ পেঁয়াজ বাংলাদেশে প্রবেশ করে।
আজ রোববার বিকেল থেকে আমদানিকৃত পেঁয়াজ বোঝাই ট্রাক হিলি বন্দর দিয়ে প্রবেশ করে। বন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়, ভারতীয় ১৭টি ট্রাকে ৩৭৪ মেট্রিক টন পেঁয়াজ বাংলাদেশে এসেছে।
হিলি বন্দরের ব্যবসায়ী মোবারক হোসেন জানান, গত বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর অভ্যন্তরীণ সংকট দেখিয়ে বাংলাদেশে পেঁয়াজের রপ্তানি বন্ধ করে দেয় ভারত। এ কারণে ভারত থেকে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ হয়ে পড়লে দেশে পেঁয়াজের দাম বেড়ে প্রতি কেজি ২৬০ টাকার ওপরে বেচাকেনা হয়। এ অবস্থায় দাম নিয়ন্ত্রণে সরকার দ্রুত মিয়ানমার, পাকিস্তানসহ বিভিন্ন দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু করে। ফলে সরকারের পদক্ষেপে দাম সহনীয় পর্যায়ে চলে আসে।
হিলির ব্যবসায়ীরা ভারতের ব্যবসনায়ীদের উদ্বৃতি দিয়ে মোবারক হোসেন জানান, চলতি মৌসুমে ভারতে পেঁয়াজের বাম্পার ফলন হওয়ায় সে দেশের সরকার গত ২৬ ফেব্রুয়ারি পেঁয়াজ রপ্তানিতে বাংলাদেশে থাকা নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেয়। গত ২ মার্চ এ সংক্রান্ত এক নির্দেশনা জারি করা হলে হিলি স্থলবন্দরের ব্যবসায়ীরা পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি চেয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্রে আবেদন করেন। গত শনিবার অনুমতি পাওয়ার পর আজ বিকেল থেকে পুনরায় শুরু হয় ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি।
আজ বেনোপোল বন্দর দিয়ে ৬৩ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি করে হামিদ এন্টারপ্রাইজ নামের একটি প্রতিষ্ঠিান।
পেঁয়াজ আমদানিকারক খুলনার হামিদ এন্টারপ্রাইজের প্রতিনিধি জনি ইসলাম বলেন, ‘বেনাপোলসহ বিভিন্ন বন্দর দিয়ে তাদের ভারতের নাসিক শহর থেকে পেঁয়াজ আমদানি হচ্ছে। ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি শুরু হওয়ায় দেশে পেঁয়াজের বাজার মূল্য সহনশীল পর্যায়ে আসবে।’
বেনাপোল বন্দরের উপপরিচালক (প্রশাসন) আবদুল জলিল বলেন, ‘আমদানিকৃত পেঁয়াজ কাস্টমস ও বন্দরের আনুষ্ঠানিকতা শেষে যাতে ব্যবসায়ীরা দ্রুত ছাড় করাতে পারেন, তার জন্য সংশিষ্ট সবাইকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’
এদিকে, সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে আজ দুপুর ১টার দিকে ভারতীয় পেঁয়াজবাহী ট্রাক প্রবেশ করে। প্রতি ট্রাকে ২০-২২ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি হচ্ছে। ভোমরা বন্দরের বিপরীতে ভারতের ঘোজাডাঙ্গায় ৮৮ ট্রাক পেঁয়াজ আমদানির অপেক্ষায় রয়েছে বলে আমদানিকারক সূত্রে জানা গেছে।
ভোমরা সিএন্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনের কাস্টমস বিষয়ক সম্পাদক আমির হামজা জানান, প্রতি টন পেঁয়াজ ৩০৫ মার্কিন ডলার মূল্যে আমদানি করা হচ্ছে। খুলনার মেসার্স হামিদ এন্টারপ্রাইজ, রাজবাড়ীর মেসার্স ফিরোজ এন্টারপ্রাইজ ও সাতক্ষীরার মেসার্স সাইফুল এন্টারপ্রাইজসহ একাধিক আমদানিকারক এ পেঁয়াজ আমদানি করছেন। সাতক্ষীরার সুলতানপুর বড়বাজারে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৩৫ থেকে ৪৫ টাকা পর্যন্ত।